তিন চাকার বাইকে ঘুরছেন বন্ধুরা, বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা গোলমাল ছবির সেই দৃশ্য মনে আছে নিশ্চয়ই! সেই সিনেমা দেখেই তিন চাকার বাইক বানিয়ে ফেললেন শিলিগুড়ির সুজয়। পেশায় তিনি বাইক মেকানিক। তাঁর সারা দিন কেটে যায় স্ক্রু ড্রাইভার, বিভিন্ন মাপের রেঞ্জ ও প্লাস নিয়ে। উত্তর শান্তিনগরের বাসিন্দা সুজয় তাঁর গ্যারাজও খুলেছেন। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি বাইক মেকানিকের কাজ করে আসছেন। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। কিন্তু টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারেননি। তাই বাইক ঠিক করার দোকান খুলে সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
একদিন সিনেমা দেখতে দেখতেই তাঁর মনে হয়েছে যে, পর্দায় তিন চাকার বাইকে করে বন্ধুরা একসঙ্গে ঘুরতে যেতে পারলে বাস্তবে তিনিও এমন বাইক তৈরি করতে পারেন। ব্যস! যেমন ভাবা, তেমন কাজ। পুরনো বাইক কিনে তাতে চাকা লাগিয়ে তিন চাকার বাইক বানিয়ে ফেললেন সুজয়। বাইকে৫ থেকে ৬ জন আরাম করে বসতে পারেন। এখন বহু লোক এসে এই বাইক দেখতেই এটি চালানোর ইচ্ছে প্রকাশ করছেন। ছবিও তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
সুজয় বলেন "সিনেমা দেখেই তিন চাকার বাইক বানানোর কথা প্রথম মাথায় আসে। এ ছাড়াও বন্ধুরা মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সময় কারও বাইক না থাকলে সে আলাদা হয়ে যায়। তাই যাতে সকলে একসঙ্গে ঘুরতে যেতে পারি, সেই উদ্দেশ্য নিয়েই এই বাইকটি বানিয়ে ফেলেছি। এই বাইকে একসঙ্গে পাঁচ থেকে ছয় জন মিলে বসা যায়।"
পিছনের সিটে যাতে বসতে অসুবিধা না হয়, তার জন্য সাসপেনশনও লাগিয়েছে তিনি। সব মিলিয়ে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা মতো খরচ হয়েছে। তা ছাড়াও কোথাও ঘুরতে গেলে বেশি বন্ধু বান্ধব থাকলে একটি বাইকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। সেই জন্য ঘুরতে যাওয়ার জন্য এই বাইকটি তৈরি করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, দুইটি বাইকে নিয়ে গেলে বেশি খরচ হয় আর এই বাইকটি নিয়ে গেলে তেলের খরচও কম পড়ে। যদিও প্রধান সড়ক গুলোতে ট্রাফিক আইনের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়। ফলে শহরের আশপাশে অলিগলিতে চালানো হয় এই বাইক। শিলিগুড়ি শহরের আশপাশে থাকা টুরিস্ট স্পট এবং পার্ক গুলোতে বন্ধুরা মিলে এই বাইক নিয়েই চলে যায় সুজয় ও তার বন্ধুরা।
সুজয়ের দাদা অজয় মণ্ডল বলেন, 'আমার ভাই এই বাইকটি তৈরি করেছে। সিনেমা ছাড়া এই বাইক অন্য কোথাও দেখা যায় না। ও এটা বাস্তবায়িত করেছে, আমি খুব খুশি।' তিনি জানান, রাম নবমীর দিন এতে চেপেই ছয়জন বেরিয়েছিলেন, সবাই ঘুরে ঘুরে বাইকটি দেখছিলেন। তাদের বেশ ভালো লাগছিল।
No comments:
Post a Comment