পরকীয়া সন্দেহ! স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন স্বামীর
নিজস্ব সংবাদদাতা, নদিয়া, ১৭ মে: পরকীয়া সন্দেহে নিজের স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার ভীমপুর থানার এলাঙ্গী মাঝেরপাড়া এলাকায়। অভিযোগ, মঙ্গলবার হঠাৎই ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে স্বামী। মৃত ওই গৃহবধুর নাম অঞ্জলি বিশ্বাস। বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। অভিযুক্ত শৈলেন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মাঝেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা শৈলেন বিশ্বাসের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া সন্দেহ জেরে তার স্ত্রী অঞ্জলি বিশ্বাসের অশান্তি লেগেই থাকতো। পরিবার সূত্রে জানা যায়, স্বামী স্ত্রীর দুজনেই পরকীয়ায় সন্দেহ বসত মাঝেমধ্যে ঝগড়া করতেন। যদিও অঞ্জলি বিশ্বাস সেভাবে কিছু না বললেও স্বামী শৈলেন মাঝেমধ্যেই তার স্ত্রীর ওপর চড়াও হতেন এবং মারধোর করতেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রায় দিনের মতোই বাক-বিতণ্ডা চলছিল স্বামী স্ত্রীর মধ্যে। বিকেল নাগাদ শৈলেন হঠাৎ একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আচমকা কোপাতে শুরু করেন স্ত্রীকে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অঞ্জলি বিশ্বাস। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হলে এলাকার লোকজন এসে উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা অঞ্জলি বিশ্বাসকে মৃত বলে ঘোষণা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ভীমপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত শৈলেন বিশ্বাস পালানোর চেষ্টা করলেও স্থানীয়রাই তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ভীমপুর থানার পুলিশ। বুধবার তাকে আদালতে তোলা হবে।
এ বিষয়ে মৃত অঞ্জলি বিশ্বাসের দিদি সন্ধ্যা মণ্ডল বলেন, 'এর আগেও একাধিকবার পরকীয়া নিয়ে অভিযুক্ত শৈলেন বিশ্বাস আমার বোনকে মারধর করে। গতকাল আমার বোনকে কুপিয়ে মেরে ফেলল শৈলেন। আমি চাই সারা জীবন যেন ও জেলবন্দি থাকে। আমি ওর মুখ দেখতে চাই না।'
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শৈলেন বিশ্বাসের ছেলে বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, "মায়ের ওপর পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ করত বাবা। কিন্তু শুধু আমি কেন গ্রামের কেউই বিশ্বাস করবে না এই বয়সে মা এরকম কাজ করতে পারে। সেই কারণে বাবাকে আমি অনেক সময় বোঝানোর চেষ্টা করতাম, মাকেও চুপ করে থাকতে বলতাম। ইদানিং বাবা আরও বেশি সন্দেহ করতে শুরু করে। কাজও ঠিকমতো করত না। আমি নিজেও বাবাকে বলেছি কাজ করার প্রয়োজন নেই, বাড়িতে তুমি রেস্ট নাও। গতকাল অন্যান্য দিনের মতোই ছোটখাটো ঝামেলা লেগেছিল কিন্তু বিকেলের পর আমি কাজে বেরিয়ে যাই। এরপরে শুনি বাবা এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে।' বিশ্বজিৎ আরও বলেন, "আমিও চাই বাবা যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তার উপযুক্ত শাস্তি পাক।
এই ঘটনার অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে শুধুমাত্র কি পরকীয়া সন্দেহ, নাকি অন্য কারণ আছে তাও খতিয়ে দেখছে তারা।
No comments:
Post a Comment