রাস্তার হাল বেহাল, জল সঙ্কট! ভোট বয়কটের ডাক

রাস্তার হাল বেহাল, জল সঙ্কট! ভোট বয়কটের ডাক 

নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার: বেহাল দশা রাস্তার, সঙ্গে পানীয় জলের কষ্ট, সমস্যা সমাধান না হওয়ায় ভোট বয়কটের ডাক গ্ৰামবাসীদের। পথশ্রীর আওতায় শীঘ্রই কাজ শুরু হবে, দাবী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যর। ভাঁওতাশ্রী কটাক্ষ বিজেপির।

জানা গিয়েছে, কোচবিহার ২ নং ব্লকের খাগড়াবারি অঞ্চলের ডোডেয়ার হাট থেকে বঞ্চুকামারী প্রায় দু কিলোমিটার রাস্তা বেহাল দশা এবং পানীয় জলের সমস্যা। আর তাই নিয়ে ভোট বয়কটের ডাক দিলেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে এই রাস্তা বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে। পাশাপাশি পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে, প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। 

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, ফিতে কেটে, মিষ্টি বিতরণ করে প্রায় ছয় বছর আগে কাজের কথা হলেও রাস্তার কোন কাজকর্ম হয়নি। এই নিয়ে গ্রামবাসীরা একাধিক বার পঞ্চায়েত ও গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে এবং বিডিও অফিসে জানালেও তাদের কোনও সুরাহা পায়নি। নিত্যদিন প্রায় বহু মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন স্কুল-কলেজ, বাজার-ঘাট করেন। তার পাশাপাশি পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। বর্ষার সময় তো আরও ভয়াবহ রূপ হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান গ্রামবাসীরা। 

শুধু রাস্তা নয়, এর পাশাপাশি পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বহু বছর আগে টিউবওয়েল ছিল কিন্তু এখন সেগুলো দেখা যায় না, পাইপ তো দূরের কথা। সেই এলাকায় পয়সা দিয়ে জল কিনে খেতে হয় বলে তারা অভিযোগ করছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রায় দুই তিন কিলোমিটার গিয়ে তাদের জল নিয়ে আসতে হয় মাঝে মধ্যে চাপা কলের জলও পান করতে হয়। অভিযোগ, বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও হচ্ছে না সুরাহা। এই মুহূর্তে এবার সামনে রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট বয়কটের ডাক দিলেন। 

এ বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির মেম্বার সুব্রত আচার্য জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথশ্রী প্রকল্পের মধ্য দিয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার এই রাস্তার অনুমোদন হয়ে গেছে এবং টেন্ডারও হয়ে গেছে। সেখানে ইঞ্জিনিয়ার এসে মাপঝোপ সব কিছু করে দেখে গিয়েছে। অতি শীঘ্রই এই রাস্তার কাজ শুরু হয়ে যাবে। সেটা নিয়ে আর কোনও সমস্যা থাকার কথা নেই।

তিনি বলেন, "রাস্তাটা নিয়ে বহু সমস্যা ছিল, খুবই যাতায়াতের সমস্যা হতো, আমরাও দীর্ঘদিন চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু একবারে তো সব কাজ হয় না। কিন্তু প্রচুর কাজ আমাদের খাগড়াবাড়ি জিপিতে হয়েছে জেলা পরিষদের মাধ্যমে, পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েত সহ অনেক মাধ্যম দিয়ে এই কাজগুলো হয়েছে। আশা করি এবার অনেক কয়েকটি রাস্তায় আমাদের সুসম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে।" 

অপরদিকে, বিজেপির মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক অসীম সাহা জানান, খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন জায়গাতেই পানীয় জল-সহ রাস্তার সমস্যা রয়েছে বিশেষ করে এই বঞ্চুকুমারী রাস্তা মারাত্মকভাবে বেহাল দশা। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনও উন্নয়নমূলক কাজকর্ম হয়নি এবং সাধারণ মানুষের যাতায়াতের বহু সমস্যা হয়। শুধু তাই নয় পানীয় জলেরও বিশাল একটা সমস্যা রয়েছে সেই এলাকাতে, সেটাও প্রশাসন বা শাসক দল বা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সঠিকভাবে দেখা হচ্ছে না। 

তিনি আরও জানান, শুধু বঞ্চুকুমারী নয়, তার আশেপাশে আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় পানীয় জল ও রাস্তার সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে তা সত্ত্বেও কোন কাজকর্ম হয়নি। বিজেপির পক্ষ থেকে আশা করছেন যে আগামী এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষ এই খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে পরিবর্তন আনবে।

পাশাপাশি এই পথশ্রী প্রকল্পটা এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঁওতাশ্রী বলেও কটাক্ষ করেন তিনি এবং বলেন, "ভাঁওতাশ্রী দিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। এইসব দিয়ে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হবে না। বিগত দিনেও আমরা এইসব নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিলাম বিভিন্ন জায়গায় স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। সাধারণ মানুষের পাশে আমরা আছি এবং আগামীতেও অঞ্চল অফিস ও বিডিও অফিসে ঘেরাও কর্মসূচি ও স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে।"