'হাকিম বদলায় না, হুকুম বদলায়, ববিতার চাকরি যেতেই খোঁচা দেবাংশুর - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 16 May 2023

'হাকিম বদলায় না, হুকুম বদলায়, ববিতার চাকরি যেতেই খোঁচা দেবাংশুর

 


'হাকিম বদলায় না, হুকুম বদলায়, ববিতার চাকরি যেতেই খোঁচা দেবাংশুর 




নিজস্ব প্রতিবেদন, ১৬ মে, কলকাতা: "হাকিম বদলায় না, হুকুম বদলায়", ববিতা সরকারের চাকরি যেতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। নাম না নিয়েই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ তৃণমূল নেতার। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে একের পর এক পোস্টে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন দেবাংশু। 


দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি হারিয়েছিলেন মন্ত্রী-কন্যা অঙ্কিতা অধিকারী। তাঁর জায়গায় নিয়োগ পান ববিতা সরকার। কিন্তু চাকরি পেতে এসএসসিকে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার চাকরিহারা হন তিনিও। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি যায় ববিতার। সেখানে নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে অনামিকা রায়কে। পাশাপাশি বিচারপতির নির্দেশ, অঙ্কিতার থেকে পাওয়া বেতনের পুরো টাকাটাও দিতে হবে অনামিকাকে। তবে তিনি যে এই কয়েকমাস বেতন পেয়েছেন, সেটা ফেরত দিতে হবে না। এই ইস্যুতেই এবারে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন তৃণমূলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য। নাম না নিয়েই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানালেন তিনি। 



এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে দেবাংশু লেখেন, "হিরো সাজতে গিয়ে, রাজনৈতিক ফায়দা নিতে গিয়ে একজনের চাকরি খেয়ে আরেকজনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। হিরো সাজার এত তাড়াহুড়ো ছিল, যাকে চাকরি দিচ্ছেন সে যোগ্য কিনা সেটুকু খুঁটিয়ে দেখার ইচ্ছে বা সময় কোনওটাই হয়নি! সময় কম, সন্ধ্যায় প্যানেল ডিসকাশনের বিষয়বস্তু হতে হবে যে! তাই বাঁশি বেজে গেছে.. দ্রুত ভগবান সাজতে হবে!"


তিনি লেখেন, "আর সেই ভগবান সাজতে গিয়ে একজন অযোগ্যের হাত থেকে আরেকজন অযোগ্য মহিলাকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন। তাহলে আপনার সাথে পর্ষদের ফারাক কোথায় রইল? তারা যে ভুল করেছিল, আপনিও তো একই ভুল করলেন.. আপনারাই বলেন, 'তারা হয়ত এসব করেছিল পার্থ চ্যাটার্জির মত লোকেদের চাপে...', ঠিক কিনা সে তো ফাইনাল রায় বলবে। কিন্তু একই কাজ আপনি কেন করলেন? আপনি করলেন হিরো সাজার তাড়নায়.. তফাৎ কি রইল?"


খোঁচা দিয়ে তৃণমূল নেতা আরও লিখেছেন, "আজ নিজেই আবার দ্বিতীয় অযোগ্য মহিলার চাকরি খেলেন.. হয়ত তৃতীয় আরেকজনের হাতে তুলে দেবেন! মানুষের আশা, ভরসার একটা জায়গাকে রীতিমত সার্কাস বানিয়ে ফেলেছেন স্যার!"



অন্য আরেকটি পোস্টে দেবাংশু লিখেছেন, "কিছু জন বলছিলেন, 'হাকিম বদলায়, হুকুম বদলায় না..!' ববিতার চাকরি যাওয়া দেখে বুঝলাম ব্যাপারটা উল্টো, আসলে, "হাকিম বদলায় না, হুকুম বদলায়।"


রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ববিতা সরকার। আদালতের রায়ে পরেশ কন্যার জায়গায় মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা নিযুক্ত হন ববিতা। দীর্ঘ চার বছর লড়াইয়ের পর ২০২২ সালের জুলাই মাসে তিনি চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু এরপরেই সামনে আসে তাঁর নম্বর গড়মিলের তথ্য। 



ববিতা সরকারের চাকরির বৈধতা নিয়ে অনামিকা রায় নামে প্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁর দাবী ছিল, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর পদে চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। কিন্তু ওই পদে চাকরি পাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই মামলার রায়ে এদিন অনামিকাকে নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত, ববিতা সরকার ও অনামিকা রায় দুজনেই ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস পরীক্ষার্থীর ও দুজনেই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রাপ্ত। 


মঙ্গলবার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তিনি মনে করছেন ববিতা সরকারের চাকরিতে বহাল থাকা উচিৎ নয়, কারণ তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে প্রাপ্ত নম্বর সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেননি। অনামিকা রায়ের থেকে দু'নম্বর কম পেয়েছিলেন তিনি। সেই জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তিনি নির্দেশ দেন ববিতা সরকারকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে যোগ্য প্রার্থী অনামিকা রায়কে তাঁর বাড়ির কাছাকাছি কোনও স্কুলে নিয়োগ দিতে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে তাকে নিয়োগ করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন দেবাংশু। এছাড়াও 'অঙ্কিতা to ববিতা ত অনামিকা! হে ঈশ্বর" ক্যাপশান দিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করে বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তিনি।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad