তীব্র দহনে জলের হাহাকার! প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৫ মে: প্রচণ্ড গরমে জল কষ্ট, উপায় না দেখে সোমবার গ্রামে টায়ার জ্বালিয়ে হাঁড়ি-কলসি নিয়ে বিক্ষোভে সামিল হলেন গ্ৰামবাসীরা। ঘটনা সোমবার মালদার।
মালদহের আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচন্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে জল সংকট। গরম পড়তেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছে। অভিযোগ, বারবার বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে গ্রামে টায়ার জ্বালিয়ে হাঁড়ি-কলসি নিয়ে চলছে তুমুল বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের।
বুলবুলচন্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোহরপুর এলাকা এলাকায় চল্লিশটি পরিবারের বসবাস। রয়েছে একটি মাত্র সাবমার্সিবল, সেই সাবমারসিবল আবার পাশের গ্রামের লোকও ব্যবহার করে। এদিকে তীব্র গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ায় জল উঠছে না পাম্প মেশিন থেকে। বাধ্য হয়ে গ্রামের নোংরা পুকুরের জল ব্যবহার করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। যে পুকুরে গরু-মহিষ স্নান করে, হাঁস চড়ে বেড়ায়, সেই জল ব্যবহার করার ফলে বিভিন্ন রকম অসুখ দেখা দিচ্ছে, দেখা দিচ্ছে চর্মরোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা নন্দরানি মাহাতো বলেন, 'এখানে জলের খুব সমস্যা, একটাই পুকুর আছে এখানে গরু-মহিষ স্নান করে সেই জলই আমরা ব্যবহার করছি।'
অপর এক বাসিন্দা ফুলেশ্বরী মাহাতো বলেন, "আমাদের জলের খুব সমস্যা। গরু-মহিষ স্নান করে, ঐ জলেই আমরা সময়ে থালাবাসন মাজি। আমাদের শিশুরা ওই জলেই স্নান করছে, গায়ে চুলকানি হচ্ছে। এখানে একটাই মার্সিবেল আছে, সেটা খারাপ হয়ে গেলে অবস্থা আরও চরমে ওঠে।"
এদিকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ মালদা বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি। তিনি বলেন, "তৃণমূলের রাজ্য সরকার এবং জেলা পরিষদ থেকে শুরু করে যে তৃণমূল নেতৃত্বরা আছেন তারা আদিবাসীদের জন্য সবসময় কুমির কান্না কাঁদছেন। কিন্তু বাস্তবে এখানে এখানে যারা আদিবাসী আছে, তাদের উন্নতি আমরা দেখতে পাচ্ছি না।"
তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের কোনও প্রকল্পের কাজ এখানে দেখা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, "তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত, তারপরেও মানুষের জল কষ্ট দূর হচ্ছে না। আদিবাসী এলাকায় চরম জল কষ্ট।"
অন্যদিকে প্রকৃতির মার বলে কার্যতো বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শুভময় বসু। তিনি বলেন, 'প্রকৃতির মারের সঙ্গে যুদ্ধ করা অসম্ভব। এমনিতেই হবিবপুর খরা প্রবণ এলাকা। মাটির নিচে জল নেই।' তিনি আরও বলেন, 'মানুষ যাতে সচেতন না হয়, জল অপচয় যদি বন্ধ না করেন তাহলে আগামী দিনে বিপদ বাড়বে।' তবে তিনি এও জানান, জল কষ্ট দূরীকরণে চেষ্টা চলছে এবং এই তীব্র দহনে জলকষ্ট থেকে যেন মানুষ মুক্তি পায়, জলের যেন ব্যবস্থা করা হয়, তা পঞ্চায়েতকে বলা হবে।
No comments:
Post a Comment