চলতি ট্রেনে বৃহন্নলাদের জোরজুলুম, রাশ টানতে পদক্ষেপ রেলের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ২৪ জুন, আলিপুরদুয়ার : দূরপাল্লার বা লোকাল ট্রেনে যাতায়াতের সময় বৃহন্নলাদের আওয়াজে অনেকেই বিরক্ত হন। কষ্টকর যাত্রায় অনেকের পকেট খালি হয়ে গেছে। এখন হয়তো সেই হয়রানি থেকে রেহাই পেতে চলেছে রেল যাত্রীরা। শনিবার আলিপুরদুয়ার ডিআরএম অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বৃহন্নলাদের ভিক্ষা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল দফতর। জানা যায়, এদিন জংশন রেলওয়ে ডিভিশনের ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার দেবাশীষ ব্যানার্জি বহু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে বৈঠক করেছিলেন।
জানা যায়, রেলওয়ে ডিভিশনের অধীনে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স, জেনারেল রেলওয়ে পুলিশ, বন বিভাগ এবং আবগারি বিভাগের বিভিন্ন আধিকারিকদের নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রেলপথ ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হয়ে আসছে।
তাদের বিরুদ্ধে নারী পাচার, কাঠ চোরাচালান, গাঁজা ও ব্রাউন সুগারের মতো বিভিন্ন মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। অনেক সময় বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা অনেক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে সফল হয়েছেন। কিন্তু তারপরও প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে এ সব কাজ অব্যাহতভাবে চলছে বলে অভিযোগ।
এই সব আলোচনা ছাড়াও তার মধ্যে একটি ছিল ট্রেনে বৃহন্নলদার নির্যাতনের কথাও। কারণ অনেক সময় দেখা গেছে ভুয়ো বৃহন্নলা ট্রেনে চুরি বা ভিক্ষার নামে যাত্রীদের চাপিয়ে ও নির্যাতন করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ফলস্বরূপ, অনেক যাত্রী তাদের স্ত্রী এবং পরিবারের সাথে সমস্যার সম্মুখীন হয়।
ট্রেনে যাত্রীদের দুর্ভোগের ভাইরাল ভিডিও দেখা গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাই ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে রেল বিভাগ। তাই এখন থেকে ট্রেনে ভিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে রেল বিভাগ। এখন থেকে বৃহন্নলারা বৈধ টিকিট ছাড়া আলিপুরদুয়ার রেলওয়ে ডিভিশন এলাকায় কোনো ট্রেনে উঠতে পারবেন না।
ধরা পড়লে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই সব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে এদিন রেল বিভাগ বিশেষ পরিকল্পনা করে। এদিন যৌথভাবে এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কীভাবে দমন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডি কে চৌধুরী, সহকারী নিরাপত্তা কমিশনার, জংশন রেলওয়ে ডিভিশন, অমিতা লেপচা, অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট, আলিপুরদুয়ার এক্সাইজ ডিপার্টমেন্ট, জলদাপাড়া বন বিভাগের রেঞ্জার প্রসেনজিৎ পাল, শিলিগুড়ির ডেপুটি এসআরপি তপন ভট্টাচার্য এবং অন্যান্য আধিকারিকরা।
রেলওয়ে বিভাগের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রেল যাত্রীরা। আলিপুরদুয়ার শহরের এক রেল যাত্রী বলেন, “নিঃসন্দেহে একটি ভাল পদক্ষেপ। অনেক সময় বৃহন্নদাসকে সবার সামনে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। তারা ইচ্ছামত টাকা চায়। এটা জবরদস্তি। সবাই অনেক আগেই এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিল।"
No comments:
Post a Comment