প্রতীক তুলতে চাপ সিপিআইএম প্রার্থীকে! কাঠগড়ায় প্রশাসন ও দল

প্রতীক তুলতে চাপ সিপিআইএম প্রার্থীকে! কাঠগড়ায় প্রশাসন ও দল 

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২৪ জুন: দলের নির্দেশে ডিসিআর কেটে ব্লকে নমিনেশন ফাইল জমা করেছিলেন প্রার্থী হালিমা খাতুন। এমনকি ব্লক থেকে মিলেছিল দলের প্রতীকও, প্রতীক পাওয়ার পর থেকেই বুথে শুরু করে দিয়েছিলেন ভোট প্রচার। তারপরই হঠাৎ রহস্যজনকভাবে ব্লক প্রশাসন থেকে জানানো হয় তাকে ভুল করে প্রতীক দেওয়া হয়েছে। সেই প্রতীক তুলে নেওয়া হবে এবং তার পরিবর্তে তাকে নির্দল হিসেবে দাঁড়াতে হবে বুথ থেকে। এমনকি দল তাকে প্রার্থী পদ দেওয়ার কথা সরাসরি অস্বীকার করেছে। 

আর এই অবস্থায় দোলাচলে পড়েছেন প্রার্থী। কি করবেন তিনি কিছুই ভেবে পাচ্ছেন না। ব্লক প্রশাসন থেকে তাকে বারবার ফোন করে এক প্রকার বিরক্ত করে তুলেছেন বলে অভিযোগ। ব্লক প্রশাসন ও দলের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে প্রার্থী হালিমা খাতুনের স্বামী রাজ মুরাদ হুমকি দিয়েছেন তার স্ত্রী দলের প্রতীক না পেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক এলাকার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের রানীপুরা গ্রামে‌।

    

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রানীপুরা ৫৮ নং বুথের সিপিআইএমের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করেছিলেন হালিমা খাতুন। সিপিআইএম দলের পক্ষ থেকে হাতুড়ি, কাস্তে ও তারা প্রতীক পান তিনি। শুধু তাই নয়, ব্লক প্রশাসন তাকে প্রতীক পাওয়ার চিঠিও প্রদান করে। কিন্তু তারপরেই শুরু হয় গোলমাল। হঠাৎই হালিমা খাতুনকে জানানো হয় তাকে প্রতীক দেওয়া হচ্ছে না। ব্লক প্রশাসন জানান, তাকে নির্দল হয়ে দাঁড়াতে হবে এবং নৌকা প্রতীক চিহ্ন নিতে হবে।

    

এদিকে রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম-এর কনভেনার আব্দুল মান্নান জানান, ওই সিটে কংগ্রেস থেকে জোট প্রার্থী হিসেবে নাজিদা বানুকে মনোনীত প্রার্থী করা হয়েছে। ব্লকের ভুলের কারণে হয়তো তার নামের পাশে সিপিআইএম-এর কাস্তে, হাতুড়ি ও তারা প্রতীক পড়ে গিয়েছে। হালিমা খাতুন দলকে না জানিয়ে গোপনভাবে নমিনেশন ফাইল জমা করেছিলেন। দল পরে জানতে পারে। প্রতীকের জন্য তার নামে ব্লকে বি ফর্ম জমা করা হয়নি। তাহলে তিনি কি করে প্রতীক পেলেন?'

    

পাশাপাশি সিপিআইএম-এর মনোনীত প্রার্থী হালিমা খাতুন জানান, দলের নির্দেশে তিনি মনোনয়নপত্র জমা করেছিলেন। দল তাকে প্রতীক দিয়েছে, এখন অস্বীকার করছে। এলাকার মানুষ তাকে সিপিআইএম-এর প্রার্থী হিসেবে জেনে গেছেন। তিনি বুথে ভোট প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। দল তাকে না জানিয়ে গোপনভাবে জোট করে কংগ্রেসের প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে, এটা দলের ভুল। এই প্রতীক নিয়েই‌ তিনি লড়বেন। ব্লক প্রশাসন বারবার ফোন করে তাকে চাপ দিচ্ছেন তিনি যেন অতিসত্ত্বর ব্লকে এসে তার প্রতীক চিহ্ন বাতিল করে প্রদত্ত প্রতীক চিহ্ন নিয়ে যান। আর এরপরে হালিমা খাতুন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

     

তিনি আরও জানান, তিনি কখনই নির্দল হিসেবে দাঁড়াবেন না। আর তার প্রতীক কেড়ে নিলে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যদিও এ প্রসঙ্গে ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, ভুল করে ওই প্রার্থীর পাশে সিপিআইএম-এর প্রতীক পড়ে গিয়েছে। সেটা সংশোধন করার জন্য ওনাকে ফোন করে ডাকা হচ্ছে, কিন্তু উনি ব্লকে আসছেন না।