সামাজিক মাধ্যমে লাইকের উন্মাদনা! ৭২ ঘন্টায় অসতর্কতার বলি ৮
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৭ জুলাই: সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইকের ক্ষিদে এখন মারাত্মক হয়ে উঠছে। মানুষ তাদের ফলোয়ার্স বাড়ানোর জন্য তাদের জীবনের ঝুঁকি নেওয়া থেকেও বিরত হয় না। গত ৭২ ঘন্টায় এমন ৪টি অবহেলা ও অসতর্কতার ঘটনা সামনে এসেছে, যাতে প্রাণ হারিয়েছে ৮ জন।
শুধু যুবকরাই নয়, এমন অসতর্কতামূলক কাজ থেকে বাদ যাচ্ছেন না বয়স্করাও। এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে মুম্বাইয়ে, যেখানে দুই সন্তানের বাবা-মা সমুদ্রের তীরে ছবি তুলতে গিয়েছিলেন, তাও আবার ডেঞ্জার জোনে। এ সময় প্রবল ঢেউ এসে দুজনকেই গভীর সমুদ্রে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। কোনওমতে ওই নারীর স্বামীর জীবন রক্ষা পেলেও এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ওই নারী।
উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়ায় দিদার বাড়িতে আসা ২ ছেলে নদীতে ডুবে মারা যায়। এদের মধ্যে একজনের দেহ পাওয়া গেলেও অপরজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। দুজনেই ইটাওয়ার ইকদিল এলাকায় সিঙ্গার নদীতে নেমে ইনস্টাগ্রাম রিল তৈরি করছিলেন। ছেলেদের মামা দিল্লীর বদরপুরের বাসিন্দা শামি খান জানান, বড় ছেলে রেহানের বয়স ১৭ বছর এবং ছোট চাঁদের বয়স ছিল 13 বছর। এ সময় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করে দুজনেই ইনস্টাগ্রামের জন্য স্নানের ভিডিও শ্যুটিং শুরু করে। এই সময় হঠাৎ রেহানের পা পিছলে পড়ে সে ডুবে যায়। চাঁদ তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও দুজনেই নদীতে ডুবে যায়। এ সময় তার সঙ্গে আরও চারজন ছেলে ছিল, কিন্তু কেউ তাদের বাঁচাতে পারেনি।
কানপুরে, ইনস্টাগ্রামে রিল করতে গিয়ে পান্ডু নদীর স্রোতে ভেসে যান আনশ নামে এক যুবক। তার চার সঙ্গী তার সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করতে থাকে। পাঁচ জল পান্ডু নদীর তীরে রিল বানাতে গিয়েছিলেন। এদিকে আনশ তার জামা কাপড় খুলে নদীর স্রোতে ঝাঁপ দেয়। তাঁর সঙ্গী সাকশাম জানিয়েছেন যে আনশ দাবী করেছেন যে তিনি সাঁতার জানেন। কিন্তু নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর তাকে পাওয়া যায়নি।
মুকেশ সোনার (৩৫), যিনি তার স্ত্রী জ্যোতি সোনার (৩২) এবং দুই সন্তানের সাথে পিকনিক করতে এসেছিলেন, মুম্বাইয়ের বান্দ্রা বিচে ঢেউয়ের কবলে পড়েছিলেন। এই দুর্ঘটনায় মুকেশ কোনও মতে বেঁচে গেলেও জলে ডুবে মারা যান তার স্ত্রী জ্যোতি। দুজনেই গিয়ে ছবি তোলার জন্য সমুদ্রের তীর থেকে কিছুটা দূরে জলের মাঝখানে রাখা পাথরের ওপর বসে পড়ল। এ সময় একটি বড় ঢেউ এসে দুজনকে টেনে নিয়ে যায়। স্ত্রীকে বাঁচাতে মুকেশ তার শাড়ি শক্ত করে ধরেছিলেন, কিন্তু শাড়িটি তার হাত ছাড়িয়ে যায় এবং তার স্ত্রী সমুদ্রে ভেসে যায়। তবে পরে পুলিশ ও ডুবুরিদের সহায়তায় জ্যোতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে সেলফি তুলতে গিয়ে পুকুরে ডুবে ৪ যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি চন্দ্রপুর জেলার নাগভীদ তহসিলের ঘোড়জারি পুকুরের। ওয়ারোরা তহসিলের শেগাঁও থেকে ৮ যুবক ঘোড়জারি পুকুরে গিয়েছিলেন বৃষ্টির মজা উপভোগ করতে। এর মধ্যে এক যুবক পুকুর পাড়ে সেলফি তুলতে শুরু করলে পা পিছলে পুকুরে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে তার ৩ বন্ধু একে একে পুকুরে ঝাঁপ দিলেও তারা তিনজনই পুকুরে ডুবে যেতে থাকে। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় স্থানীয় পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দল। বর্তমানে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় দেহ উদ্ধারের কাজ চলছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন মনীশ শ্রীরামে (২৬), ধীরাজ ঝাদে (২৭), সংকেত মোদক (২৫), চেতন মান্দাদে (১৭)।
No comments:
Post a Comment