'বাংলায় বড় ধরনের কোনও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি', ডিজিপির বক্তব্য তোলপাড় সৃষ্টি
নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৪ জুলাই, কলকাতা : রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত ১৩ জন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। মনোনয়ন পর্ব থেকেই অশান্তি, বোমা হামলা এবং গুলিবর্ষণের ঘটনা শুরু হয়েছে, তবে রাজ্যের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ মনোজ মালব্য একে 'ছোট ঘটনা' বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে রাজ্যে আগের তুলনায় সহিংসতার ঘটনা কম হয়েছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বড় ধরনের কোনও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।
বাংলার পুলিশ মহাপরিচালক বলেছেন যে, "সহিংসতার ঘটনা এখনও যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে। যেকোনও ছোট ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যে লাগাতার হিংসা চলছে।" এদিকে পুলিশ মহাপরিচালকের বক্তব্যের পর বিরোধী দলগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
বিরোধীরা বলছে, গত ২৪ দিনে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও রাজ্য পুলিশের ডিজি কেমন করে এমন দাবী করছেন। রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক বলেছেন, “রাজ্যের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখানে অনেক সহিংসতা হয়েছিল। কিছু জিনিস ঘটতে পারে। কিন্তু বাংলার অনেক ছোট ঘটনাকে বড় দেখানো হয়।"
বাংলায় বড় ধরনের কোনও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি
তিনি বলেন, "আপনি কি সত্যিই মনে করেন যে বাংলায় হিংসা আছে? বাংলায় দু-তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যাতে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।" মঙ্গলবার বেঙ্গল ডিজি ঝাড়খণ্ডের ডিজিপি এবং বিহারের ডিজিপির সাথে বৈঠক করেছেন।
বাংলার পুলিশ মহাপরিচালক বিহার ও ঝাড়খণ্ডের পুলিশ মহাপরিচালকের সাথে শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচনই নয়, আন্তঃরাজ্য অপরাধ নিয়ে আলোচনা করেছেন। আলোচনায় সাইবার ক্রাইমও ছিল।
অন্যান্য রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর ডিজি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সহিংসতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন যে, "রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ২-৩টি ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে।" এমন পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে প্রতিদিনই অশান্তির খবর আসছে। গত শনিবার বাসন্তীতে ক্ষমতাসীন দলের এক কর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়। রবিবার ও সোমবারও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে।
উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি চালানোর খবর আসছে। এর পেছনে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াই বা শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াই।
রাজ্য পুলিশ সহিংসতা দমনে কতটা সক্রিয় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত নিজেই। এরপর স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য পুলিশের ডিজির এমন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলতে দেখা গেছে নির্যাতিতা বা নির্যাতিতার স্বজনদের।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “১৩টি পরিবারের সঙ্গে যা হয়েছে, তারা কীভাবে বলবে এটা একটা ছোট ঘটনা? পুলিশকে নিয়ে মানুষ কী ভাববে? বোমা পড়ল আর পুলিশ বলছে কোথায় বোমা পড়ছে?"
No comments:
Post a Comment