দুধ-চায়ের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি ক্ষতি করতে পারে স্বাস্থ্যের সমস্যা - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, 28 August 2023

দুধ-চায়ের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি ক্ষতি করতে পারে স্বাস্থ্যের সমস্যা


দুধ-চায়ের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি ক্ষতি করতে পারে স্বাস্থ্যের সমস্যা 

প্রেসকার্ড নিউজ, হেল্থ ডেস্ক, ২৮ আগস্ট: সারা বিশ্বে বিপুল সংখ্যক মানুষের বেড-টি পান করার অভ্যাস রয়েছে, অর্থাৎ সকালে ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে বিছানায় চা পান করা বা ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমে চা পান করা।  অনেকের মধ্যে এই অভ্যাস এতটাই বেড়ে যায় যে, চা পান না করে তারা দৈনন্দিন কাজ (মলত্যাগ ইত্যাদি) করতে পারেন না বা অন্য কোনও কাজও করতে পারেন না। এই অভ্যাসটি গ্রাম বা শহরে বসবাসকারী বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই রয়েছে।  কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, এই অভ্যাস ভালো নয়। খালি পেটে চা পানের অভ্যাস বা দিনে কয়েকবার চা পান করার ফলে অনেক রোগ ও সমস্যা হতে পারে।

যারা খালি পেটে দুধের সাথে চা পান করেন এবং দিনে কয়েকবার চা পান করেন তাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা যায়। শুধু তাই নয়, চা পানের ইচ্ছা সাধারণতঃ চা পানকারীদের মধ্যে একটি নেশার মতো কাজ করে। যদি কোনও ব্যক্তি সকালে বা দিনে তার নিয়মিত চা পানের সময় চা না পান, তবে তার মধ্যে রাগ, বিরক্তি বা নার্ভাসনেসের মতো সমস্যাগুলিও দেখা যায়।

চিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেছেন যে, একজন ব্যক্তি যখন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরপরই চা পান করেন, তখন সারারাত তার মুখের মধ্যে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়া চায়ের সাথে তার পেটে চলে যায়। চা পাতায় নিকোটিন, ক্যাফেইন ইত্যাদি পাওয়া যায়, যা শুধু মানুষের মধ্যে চায়ের প্রতি আসক্তিই সৃষ্টি করে না, এর ফলে শরীরের নানাভাবে ক্ষতিও হতে পারে। চা-আসক্তদের আরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো ।

পেট ফাঁপা এবং হজমের সমস্যা -

সাধারনতঃ মানুষ মনে করে চা পান করলে ক্লান্তি দূর হয়। কিন্তু সত্যি কথা হল চা পান করলে ক্লান্তি দূর হয় না, বরং সারাদিনের ক্লান্তি তো থাকেই, সেই সাথে মানুষের মধ্যে রাগ ও বিরক্তির মত অনেক আচরণগত সমস্যাও দেখা যায়। সকালে খালি পেটে চা পান করলে পেটে পিত্তের রস বেশি হয়, যা নার্ভাসনেস, বমি বমি ভাব এবং বমির মতো সমস্যা তৈরি করে। চায়ের মধ্যে ট্যানিনও পাওয়া যায়, যার কারণে পেট ফুলে যায়। ক্ষিদে লাগে না ও গ্যাস উৎপন্ন হয়। ডাঃ রাজেশ ব্যাখ্যা করেছেন যে,  সকালে খালি পেটে চা পান করা বা প্রচুর পরিমাণে চা পান করলে পেটের ভিতরের পৃষ্ঠের ক্ষতি হয়।  যার কারণে আলসার ও হাইপার অ্যাসিডিটির সমস্যাও হতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা -

চায়ে মূত্রবর্ধক উপাদান পাওয়া যায়, যা অতিরিক্ত প্রস্রাব তৈরি করে। অর্থাৎ প্রচুর পরিমাণে চা পান করলে শরীরে অনেক সময় প্রস্রাব তৈরির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। এই কারণে যারা দিনে কয়েকবার চা পান করেন, বা সকালে খালি পেটে চা পান করেন তাদের ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দেখা যায়। এতে অনেক সময় শরীরে জলের অভাব হয়।

রক্তচাপের সমস্যা -

যেহেতু চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ বেশি, তাই খালি পেটে চা পান করলে বা দিনে বেশিবার চা পান করলে শরীরে ক্যাফেইনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি এবং হার্টের স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

চায়ের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নিন -

দুধ-চায়ের পরিবর্তে আরও অনেক স্বাস্থ্যকর বিকল্প রয়েছে যা ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো স্বাস্থ্যের ক্ষতির পরিবর্তে উপকার করে, যেমন- গ্রিন টি, ভেষজ চা এবং কালো চা ইত্যাদি।

বিশেষ করে ভেষজ চায়ের ক্ষেত্রে, প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে তৈরি চা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে। ভেষজ চায়ে, বিশেষ করে- কালো চা, তুলসীর চা, লিকোরিস এবং দারুচিনি চা, পুদিনা চা এবং জুঁই ও ক্যামোমাইলের মতো চা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।  এগুলো শুধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় না, এতে উপস্থিত ঔষধিগুণ আমাদের মেটাবলিজমকে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে। এই ধরনের চায়ে আদা, গোলমরিচ এবং লবঙ্গের ব্যবহার চায়ের প্রভাবকে গরম করে, যা শরীরকে স্বাভাবিকভাবে তাপ দেয়।

কাশ্মীরের কাহওয়া চা এবং বর্তমানে গোল্ডেন লাটে নামে পরিচিত বিখ্যাত হলুদ চা-ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।  কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান।

চা পান করার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন -

যারা দুধ চায়ের লোভ ছাড়তে পারছেন না, তারা অবশ্যই কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন। যেমন- খালি পেটে চা পান করবেন না।  চায়ের আগে বা সাথে কিছু বিস্কুট বা হালকা খাবার খান। চা পানের আগে অন্তত এক গ্লাস জল পান করতে হবে, অথবা চা পানের পরপরই খাবার খেয়ে নিন। চিকিৎসকরা বলেন, সকালের খাবারের প্রায় এক ঘণ্টা পর চা পান করা ভালো।  আর সারাদিনে ২-৩ কাপের বেশি চা পান করবেন না। রাতে ঘুমানোর আগে বা রাতের খাবারের পরেও চা এড়িয়ে চলতে হবে।

বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad