মহালয়া অমাবস্যা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কলকাতা: সামনেই দুর্গা পুজো। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের সবচেয়ে বড় উৎসব এটাই। তবে এর আগে রয়েছে মহালয়া অমাবস্যা। পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে সূচনা হবে দেবীপক্ষের। এই দিনে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের স্মরণ করি এবং তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানাতে তর্পণ করা হয়। এছাড়াও আমাদের অতীতের সাথে আমাদের সংযোগ শক্তিশালী করতে এবং ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আমাদের পূর্বপুরুষদের সম্মান করা গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছর মহালয়া অমাবস্যা পড়েছে শনিবার, ১৪ অক্টোবর।
মহালয়া অমাবস্যার গুরুত্ব
মহালয়া অমাবস্যা আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার একটি সুযোগ নিয়ে আসে। অতীতের সাথে আমাদের সম্পর্কের কারণেই মানব সংস্কৃতি এগিয়েছে এবং বিকশিত হয়েছে। মানবজাতির প্রতিটি প্রজন্ম মানব উন্নয়নে নতুন কিছু অবদান রেখেছে। এর ওপর ভিত্তি করে আগামী প্রজন্মের জীবনযাপন সহজতর হয়। এর ফলে ধারাবাহিক অগ্রগতি হয়েছে। এটি মানবতার বিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মহালয়া অমাবস্যার সময় প্রয়োজনীয় আচার-অনুষ্ঠান সম্পাদন করা অতীতের সাথে আমাদের সংযোগকে শক্তিশালী করে।
পিতৃপক্ষকে হিন্দু ধর্মে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনে আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের আশীর্বাদ করতে পৃথিবীতে আসেন। বলা হয়, আমাদের পূর্বপুরুষরা যারা এই পৃথিবী ছেড়ে অন্য কোনও পৃথিবীতে বসবাস করছেন তারা এই সময় পৃথিবীতে আসেন। এই সময়ে, তাদের খুশি করতে, আমন্ত্রণ জানাতে এবং তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ পেতে পারেন। তাই এই দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এটি এমন একটি সময় যখন কেবল সাধারণ মানুষই নয়, প্রবৃদ্ধ যোগী এবং ঋষিরাও তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন। মহালয়া অমাবস্যায় আমাদের প্রয়াত পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আশীর্বাদ পেতে বিশেষ পূজা করা হয়, যাকে আমরা তর্পণ বলি।
মহালয়া অমাবস্যার কাহিনী
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, একবার দেবতা ও অসুরদের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়েছিল। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষের অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। ভাদ্রপদ বহুল পদয়ামীতে এই যুদ্ধ শুরু হয়ে অমাবস্যা পর্যন্ত চলে। এই কারণে এই সময়কালকে শাস্ত্রহথ মহালয়া নাম দেওয়া হয়। সেই যুদ্ধে গত দেবতা ও অসুরদের সম্মানে এই মহালয়া অমাবস্যায় পূজা করা হয় এবং আমাদের পূর্বপুরুষদেরও স্মরণ করা হয়।
No comments:
Post a Comment