মরক্কোতে শোক! ধ্বংসাবশেষ থেকে বের হচ্ছে মৃতদেহ, বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০০০
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১০ সেপ্টেম্বর : আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে শুক্রবার গভীর রাতে হওয়া ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৬.৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পের কারণে এখন পর্যন্ত ২০০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে এবং আরও বেশি লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এখানে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ভূমিকম্পের কম্পনে আতঙ্কে লোকজনকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। ভূমিকম্পের কারণে অনেক ভবনের ভিত্তি নড়ে গেছে এবং কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মরক্কোতে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে মারাকেশে। এখানে ভবন ধসে পড়ার অনেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। শহরের ঐতিহাসিক ভবন ও মসজিদগুলো কাঁপতে দেখা গেছে। এটি ১৯৬০ সালের পর মরক্কোতে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। মুহুর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ে উঁচু ভবনগুলো।
মরক্কোতে যখন ভূমিকম্প হয় তখন শপিং কমপ্লেক্স ও খেলার মাঠে লোকজন উপস্থিত ছিল। মাটি কেঁপে উঠলেই মানুষের মধ্যে পদপিষ্টের ঘটনা হয়। মানুষ প্রাণ বাঁচাতে এদিক ওদিক ছুটতে থাকে। আতঙ্কে মানুষ সারা রাত রাস্তায় কাটিয়ে দেয়। এমন ভূমিকম্প হয়েছিল যে, সারা দেশে তোলপাড়। মরক্কোতে ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়েছে পর্তুগাল এবং আলজেরিয়া পর্যন্ত।
ভূমিকম্পের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সর্বত্র চিৎকার। সবাইকে প্রাণ বাঁচাতে ছুটে যেতে দেখা গেছে। যেখানেই জায়গা পেয়েছেন, সেখানেই তাকে প্রাণ বাঁচাতে দেখা গেছে। ভূমিকম্পের পর গত কয়েক ঘন্টা ধরে উদ্ধার অভিযান চলছে। কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে, তবে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে বেশিরভাগই মৃতদেহ বের হচ্ছে।
ভূমিকম্পের পরপরই মরক্কোর সেনাবাহিনী ও জরুরি সেবাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানোর চেষ্টা করলেও আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় যাওয়ার রাস্তাগুলো যানবাহনে জ্যাম হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি অনেক পাহাড়ি পাথর সড়কে চলে এসেছে, যার কারণে এসব এলাকায় উদ্ধার অভিযান শ্লথ হয়ে গেছে।
মরক্কোর এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল অ্যাটলাস পর্বতমালার কাছে অবস্থিত ইঘিল নামের একটি গ্রাম বলে জানা গেছে। ইঘিল যা মারাকেশ শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। একই সময়ে, ভূমিকম্পের গভীরতা মাটির নীচে প্রায় ১৯ কিলোমিটার বলে জানা গেছে। ভূমিকম্পের কারণে মরক্কোতে অবস্থিত লাল দেয়ালের কিছু অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষিত হয়েছে।
No comments:
Post a Comment