'গরীবের টাকা মেরে ছেলে খেলা', রাজ্যকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদন, ১৬ সেপ্টেম্বর, কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা রাজ্য সরকারের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে হাইকোর্ট। মহিলা সমবায় সমিতিতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে, তার তদন্ত সিআইডি-র পরিবর্তে সিবিআই ও ইডি-র হাতে নেওয়ার নির্দেশ কার্যকর করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই জরিমানা করেছে হাইকোর্ট। শুক্রবার এই নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিনি।
উল্লেখ্য কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ২৪ আগস্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, এই মামলার তদন্ত সিবিআই এবং ইডিকে হস্তান্তর করতে হবে। এছাড়াও, মামলা সংক্রান্ত সমস্ত প্রাসঙ্গিক নথিও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির কাছে হস্তান্তর করতে বলেন।
কিন্তু রাজ্য সরকার এখনও সিবিআই ও ইডি-র কাছে তদন্ত হস্তান্তর করেনি। তাই হাইকোর্ট জরিমানা করেছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে এই টাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি সিবিআই ও ইডি-র কাছে নথি হস্তান্তর করতে সরকারকে তিন দিনের সময় দিয়েছে হাইকোর্ট।
রাজ্যের আলিপুরদুয়ার জেলার মহিলা সমবায় সমিতিতে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। জনগণ সমিতিতে জমা দেওয়া টাকা ফেরত পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর ২০২০ সালে এই সমিতি কাজ বন্ধ করে দেয়।
তিন বছর ধরে এই মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত জমা হওয়া টাকা কোথায় গেল তা জানা যায়নি। সিআইডি তদন্তে ক্ষুব্ধ হয়ে হাইকোর্ট সিবিআই ও ইডিকে এই মামলার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।
এদিন বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, তিন বছর ধরে তদন্ত করে কী পরিমাণ হল! এত বড় দুর্নীতি অথচ কোনও রাঘববোয়ালের হদিশ সিআইডি দিতে পারেনি, উল্টে চুনোপুঁটিদের অভিযুক্ত করছে।'
অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, 'গরীবের টাকা মেরে ছেলেখেলা করছেন আপনারা? এই টাকা কারা নিয়েছে এতদিনেও সিআইডি জানে না কিন্তু আমি জানি।'
এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, সিআইডির কাছ থেকে সিবিআর হাতে তদন্ত ভার তুলে দিতে হবে তিন দিনের মধ্যে আর তিন দিনের মধ্যেই এই তদন্ত সিবিআইকে শুরু করতে হবে। পাশাপাশি ইডি-কেও তদন্ত শুরু করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর না হলে এবার স্বরাষ্ট্র সচিবকে তলব করা হবে। রেজিস্টার কে এ ব্যাপারেও নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
No comments:
Post a Comment