বসু বাড়ির দুর্গা পূজা, হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেন অভিনেতা বিশ্বনাথও - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday 3 October 2023

বসু বাড়ির দুর্গা পূজা, হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেন অভিনেতা বিশ্বনাথও

 


বসু বাড়ির দুর্গা পূজা, হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেন অভিনেতা বিশ্বনাথও



বসিরহাট: দুর্গা পুজো প্রায় দোরগোড়ায়। পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।‌ বারোয়ারি পুজোর পাশাপাশি বনেদি বাড়ির পুজোর তোরজোড়ও শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের মত তারকারাও আনন্দে মেতে উঠবেন পুজোর দিনগুলোতে। আর যাদের বাড়িতে দুর্গা পুজো হয়, তাদের তো কথাই আলাদা।‌ এরকমই একটি পুজো হল অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর বাড়ির দুর্গা পুজো। 


বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়ার আড়বেলিয়ার বসু বাড়ির পুজো এই এলাকার অন্যতম পুরাতন পুজো। লোকেরা এই পুজোকে এখন অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর বাড়ির পুজো হিসাবেই চেনেন। ৩৫০ বছরেরও পুরাতন এই দুর্গা পুজো অনেক বাধা বিপত্তিতেও এক বারের জন্য বন্ধ হয়নি।


গ্রামের নাগ চৌধুরী পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করার সুবাদে যৌতুক হিসেবে আড়বেলিয়ায় সম্পত্তি পেয়েছিলেন সোনারপুরের সুভাষ গ্রামের বসু পরিবার। ওই পরিবারের রামেন্দ্র বসু এখানে এক চালার দুর্গা পূজার সূচনা করেছিলেন। সেই সময় পুজোর দিনগুলো যাত্রা, নাটক হতো, মেলা বসত। সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। বিশ্বনাথ বসু সারা বছর কলকাতায় থাকেন। সারা বছর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও পুজোর ক'টা দিন তিনি সব কাজ ফেলে নিজের গ্রামের পৈত্রিক ভিটেতে আসবেনই। 


শুধু পুজোতে আসাই নয় পুজোর ক'দিন পরিবারের অন্যদের সাথে পুজোর কাজে হাত লাগান তিনি। এই চারটে দিন শুধু নিজের বাড়ির পুজো নিয়েই মেতে থাকেন বিশ্বনাথ। এছাড়াও, সারা বছর যখনই সুযোগ পান গ্রামের বাড়িতে ছুটে আসেন। ঠাকুর ভক্ত বিশ্বনাথ বাড়িতে আসলেই পুকুরে স্নান করে তাদের বাড়ির শিব মন্দিরে গিয়ে শিব ঠাকুরকে প্রণাম করে তারপর বেল গাছ তলায় পুজো দিয়ে ঠাকুর দালানে পুজো করে সেখান থেকে ঘরে রাধা কৃষ্ণের পুজো করেন।


বিশ্বনাথ জানান, আগে গরুর গাড়িতে করে বড় জ্বালায় ভর্তি করে ব্যারাকপুর থেকে গঙ্গার জল নিয়ে আসা হতো। সেই গঙ্গার জল দিয়ে মায়ের বোধন করা হতো। এখন অবশ্য গরুর গাড়ি করে নয়, গঙ্গার জল নিয়ে আসা হয় ভ্যানে করে। বংশপরম্পরা মেনে আজও সেই রীতি বহন করে চলেছে অভিনেতার পরিবার। 


রথের দিন প্রতিমা কাঠামো পুজো হয়। ষষ্ঠীর দিন বোধন দিয়ে পুজো শুরু হয় প্রতিপদে তৃতীয়া থেকেই ঘট বসে যায়। ঠাকুরদালানে পাঁচ দিন ধরে সেই ঘট পুজো হয়। ষষ্ঠীর দিন ঠাকুর দালানে প্রবেশ করানো হয় উমাকে। সেখানে ঠাকুর দালানের সামনে বেলতলায় বোধন শুরু হয়। 


বসু পরিবারের পুজোর বৈশিষ্ট্য হল এক চালায় প্রতিমা সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। এই পুজোয় বলির প্রচলন আছে। অনেক আগে মহিষ বলি হত কিন্তু এখন আর তা হয় না। তবে, নবমীতে কুমড়ো বলির প্রথা রয়েছে। আত্মীয়-স্বজনরা যে যেখানেই থাকুন কেন পুজোর সময় ছুটে আসেন বাড়িতে। পুজোর কটা দিন একসাথে হৈ হৈ করে কাটান। দশমীর দিন ২৪ জন বেয়ারা কাঁধে করে প্রতিমা নিয়ে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে ইছামতী নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জন দিতে প্রথমে বসু বাড়ির প্রতিমাটি থাকে তার পর থাকে গ্রামের অন্য প্রতিমা। প্রচুর মানুষ তো থাকেনই এমনকি দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই বিসর্জন দেখতে। প্রতিবারই সিনে জগতের কেউ না কেউ আসেন বিশ্বনাথের বাড়িতে পুজো দেখতে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad