কাত্যায়ণী রূপে বড় গোস্বামী বাড়িতে পূজিতা হন মা! ভোগ রান্নাতেও রয়েছে বিশেষ নিয়ম - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday 6 October 2023

কাত্যায়ণী রূপে বড় গোস্বামী বাড়িতে পূজিতা হন মা! ভোগ রান্নাতেও রয়েছে বিশেষ নিয়ম


 কাত্যায়ণী রূপে বড় গোস্বামী বাড়িতে পূজিতা হন মা! ভোগ রান্নাতেও রয়েছে বিশেষ নিয়ম




নদিয়া: বাঙালির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। এই উপলক্ষে ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে বিভিন্ন বনেদি বাড়ি এবং বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপগুলো। বারোয়ারিতে বা ক্লাবে থিমের ছোঁয়া, সঙ্গে বিভিন্ন রকম জৌলুষে ভরা। তবে বনেদি বাড়ির পুজোগুলিতে দেখা যায় প্রাচীন ঐতিহ্য, সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। সেরকমই এক বনেদি বাড়ির পূজা হল নদিয়ার শান্তিপুর বড় গোস্বামী বাড়ির পুজো। আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছরের পুজো এখানে হয়ে আসছে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে। এখানে দেবী কাত্যায়ণী রূপে পূজিতা হন। 


এখানে দেবীর মূর্তিতেও রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য। অন্যান্য দুর্গা প্রতিমা যেমন আমরা দেখি, বা বনেদি বাড়ির দুর্গা প্রতিমা যেরকম দেখি, সেরকমটি নয়; এখানে দেবী মূর্তির দুটি হাত বড় অর্থাৎ এই দুটি হাত দিয়েই সংহারের কথা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু বাকি আটটি হাত অনেকটাই ছোট। বড় গোস্বামী বাড়ির সদস্যদের মতে এই পুজো আনুমানিক ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে চলে আসছে। 


এই পুজোর ইতিহাস সম্পর্কে তারা জানান, একদিন তাদের ইষ্ট দেব রাধারমন হঠাৎ মন্দির থেকে অন্তর্ধান হয়ে যান। তারপর গৃহকর্তীরা বাড়ির মন্দিরের উঠোনে বসে দেবী কাত্যায়ণীর ব্রত পালন করতে থাকেন। এরপর তিনদিন পর বাড়ির যিনি জ্যেষ্ঠ কর্তী, তাকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, রাধারমন মূর্তি কোথায় রয়েছে। তারপরেই পাওয়া যায় তাদের ইষ্টদেব রাধারমনের মূর্তি। এরপর থেকেই দেবীর পুজো শুরু হয় নদিয়ার শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে। 


একেবারেই জৌলুসহীন এই পুজো। এই পুজোতে সাবেকি মাতৃমূর্তি এবং নিয়মনিষ্ঠাই একমাত্র অবলম্বন। দেবী মূর্তির আরেকটি বিশেষ দিক লক্ষ্য করা যায়; এখানে দেবীর সন্তান কার্ত্তিক এবং গণেশ বিপরীত স্থানে অবস্থান করেন। তবে নবপত্রিকা বসানো হয় সঠিক থানেই । অর্থাৎ কার্ত্তিকের পাশেই বসে নবপত্রিকা। কর্মক্ষেত্র কিংবা অন্যান্য কাজে বাড়ির যে সমস্ত সদস্যরা বাড়ির বাইরে থাকেন, তারা পুজোর ওই চার দিন দেবী কাত্যায়ণীর পুজোতে মেতে ওঠেন।


আরও জানা যায়, নবমীতে দেশবাসী তথা রাজ্যবাসীর জন্য বিশেষ মঙ্গল কামনা করা হয়। এলাকার মানুষদের খাওয়ানো হয় ভোগ। এই ভোগ রান্নাতেও রয়েছে আকর্ষণ, যে সমস্ত বিবাহিত মহিলারা দীক্ষিত তারাই দেবী কাত্যায়ণীর ভোগ রান্নার কাজে নিযুক্ত হন এবং যে সমস্ত মেয়েরা অবিবাহিত তারা দেবীর অন্যান্য পূজার সামগ্রী একত্রিতর কাজে নিযুক্ত থাকেন। 


আধুনিক যুগে আধুনিক পূজার সাথে বনেদিআনার মেলবন্ধন কতটা সামঞ্জস্য বা কীভাবে দেখছেন? বড় গোস্বামী বাড়ির এ যুগের সন্তানরা এই প্রশ্নে জানান, নিয়ম নিষ্ঠা এবং ভক্তি এটি এই বাড়ির মূল উদ্দেশ্য। আর তাতেই দেবি কাত্যায়ণীর পুজোতে তারা অংশগ্রহণ করেন এবং মেতে ওঠেন আজ থেকে ৪০০ বছরের ইতিহাস প্রসিদ্ধ সেই পুজোয়।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad