ইতিহাসের কিছু নৃশংস বিজ্ঞানী এবং তাদের নিমর্ম কয়েকটি এক্সপেরিমেন্ট - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday 29 October 2023

ইতিহাসের কিছু নৃশংস বিজ্ঞানী এবং তাদের নিমর্ম কয়েকটি এক্সপেরিমেন্ট

 




ইতিহাসের কিছু নৃশংস বিজ্ঞানী এবং তাদের নিমর্ম কয়েকটি এক্সপেরিমেন্ট



প্রেসকার্ড নিউজ লাইফ স্টাইল ডেস্ক,২৯অক্টোবর: একজন বিজ্ঞানী যেমন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচাতে পারে ঠিক তেমনি একজন বিজ্ঞানী লক্ষ লক্ষ মানুষকে কয়েক নিমিষের মধ্যে মেরেও ফেলতে পারে। বিভিন্ন জিনিস আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীরা নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন । আগের দিনে এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর জন্য কোনরকম বাধা নিষেধ ছিল না। তাই কিছু বিজ্ঞানী ইতিহাসে তেমনো আছেন যারা নতুন কিছু আবিষ্কারের জন্য নৃশংস এক্সপেরিমেন্ট করতেন।


১৯৬০ সালের এক অদ্ভুত এক্সপেরিমেন্টের ব্যাপারে জানব, যেটা পরিচালনা করেছিলেন ডক্টর ডানকেন মেকডগাল নামের একজন বিজ্ঞানী। এই বিজ্ঞানী আত্মার ওজন মাপতে চেয়েছিলেন শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে,এই এক্সপেরিমেন্টে এমন কিছু তথ্য উঠে এসেছিল যেগুলো অবাক করার মত ছিল। এই এক্সপেরিমেন্ট এর জন্য তিনি ছয়জন এমন রোগীকে বেছে নিয়েছিলেন যাদের কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যাওয়ার কথা। তাদের মৃত্যুর ঠিক আগেই একটা ওজন মাপার মেশিনে তাদের ওজন মেপে রাখা হয়। যাতে রোগীদের মৃত্যুর আগের ওজনের সঙ্গে রোগীর মৃত্যুর পরের ওজনের তুলনা করে আত্মার ওজন মাপা যায়।


 আমরা সবাই জানি যে মৃত্যুর পর আত্মা মানুষের শরীর থেকে বেরিয়ে যায় আর এই আত্মার ওজনই মাপতে চেয়েছিলেন এই পাগল বিজ্ঞানী। এক এক করে সব রোগের উপর তিনি এক্সপেরিমেন্ট চালান। প্রথম রোগীর মৃত্যুর পর যখন তার মৃতদেহের ওজন মাপা হয় তখন আগের থেকে একুশ গ্রাম কম ওজন লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু দ্বিতীয় জনের মৃত্যুর পর ওজন কমেছিল ঠিকই তবে কিছুক্ষণ পর দেখা যায় ওজন আবার আগের মত হয়ে গেছে। 


 এর পরের দুজন রোগীর ক্ষেত্রে ওজন কিছুটা কম লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কয়েক মিনিট পর তাদের ওজন হঠাৎ করে মৃত্যুর আগের ওজনের থেকে অনেক বেশি বেড়ে যায়। এরপর একদম শেষ যার এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল তখন তার ওজনে এমন কোন বদল দেখা যায়নি। কিন্তু এক মিনিট পর হঠাৎ করে তার ওজন ২৮ গ্রাম কমে যায়।


প্রত্যেক ব্যক্তির আলাদা আলাদা ওজন হওয়ার ফলে এটা প্রমাণ করা যায়নি যে, আত্মার ওজন ঠিক কতটা বা সত্যি আত্মার কোন ওজন আছে কিনা। এখানে যে বৈজ্ঞানিক ফলাফল পাওয়া গিয়েছিল সেটা হল মৃত্যুর পর মানুষের শরীরের ওজনের তারতম্য দেখা যায়। এই এক্সপেরিমেন্টের খবর যখন সরকারের কানে পৌঁছায় তখন সরকার এই এক্সপেরিমেন্টের ওপর ব্যান্ড লাগিয়ে দেন। কেননা এই ধরনের এক্সপেরিমেন্ট হিউমান রাইট ভায়োলেন্স করে।


এরকম আরো একটা এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল ১৯৩৪ সালে সেখানে একজন মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করার চেষ্টা করা হয়। এটি করেছিলেন আমেরিকার একজন জনপ্রিয় ডাক্তার রবার্ট ইরকনেস। তিনি মনে করেন মৃত ব্যক্তির শরীরে যদি রক্তের চলাচল পুনরায় চালু করা যায়। তাহলে মৃত ব্যক্তিকে আবার জীবিত করা সম্ভব। কারণ যখন কোন মানুষের মৃত্যু হয় তখন তার রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এই রক্ত প্রবাহ চালু করে দিলেই মানুষটি বেঁচে উঠবে। এই এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য তিনি কয়েকজন মৃত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন তারপর ওই মৃত ব্যক্তিদের শরীরে অ্যাড্রিলিন কেমিকাল ইনজেকশন দিয়ে দেন। যার ফলে রক্ত পাতলা হয়ে যায় এবং শরীরে দ্রুত রক্ত প্রবাহ চালু হয়। তারপর একটি লম্বা বিছানায় সেই মৃত ব্যক্তিকে শুইয়ে দেওয়া হয় এবং তাকে ভালোভাবে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর সেই ব্যক্তিকে জোরে জোরে উপরে নিচে ঝাঁকানো শুরু করা হয়। যাতে রক্ত প্রবাহ তাড়াতাড়ি শুরু হয়। কিন্তু এর পরেও মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করা সম্ভব হয়নি। পরে বিজ্ঞানের রবাট এই পরীক্ষাটিকের কিছু কুকুরের ওপর করেছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে পাঁচটি কুকুরের মধ্যে দুটি কুকুর এই পদ্ধতিতে জীবিত হয়ে যায়। কিন্তু তিনটি কুকুর জীবিত হয়নি। এই এক্সপেরিমেন্টকে তিনি আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমেরিকার সরকার এরকম এক্সপেরিমেন্ট এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেয়। কারণ মৃত ব্যক্তির ওপর এক্সপেরিমেন্ট করা সমাজের দৃষ্টিকোণ থেকে একদমই অনৈতিক। কিন্তু এর কিছু বছর পর ১৯৪০ সালে এরকম একটি এক্সপেরিমেন্ট করা হয় রাশিয়াতে। যেখানে বিজ্ঞানীরা একটি কুকুরের মাথাকে জীবিত রাখার চেষ্টা করেছিল। এই এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য কুকুরটির শরীর থেকে মাথা কেটে আলাদা করে দেওয়া হয়। তার মাথাকে জীবিত রাখার জন্য একটি মেশিনের সাহায্যে রক্ত প্রবাহ চালু করা হয়। রক্ত প্রবাহ শুরু হওয়ার ফলে কুকুরের কাটা মাথায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন শব্দ হলে কান নাড়াচাড়া করা, চোখে আলো পড়লে চোখের পাতা নাড়াচাড়া করা, জিভ দিয়ে নাকচাটা প্রভৃতি। এরকম অবস্থা দেখে বৈজ্ঞানিক ভাষায় রেসপন্স টু এক্সট্রিমলি বলা হয়।( এই এক্সপেরিমেন্ট এর আসল ফুটেজ আপনি ইউটিউবে পেয়ে যাবেন) 

এই এক্সপেরিমেন্ট অনেক বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছিল। তাই এইরকম এক্সপেরিমেন্ট এর ওপর লাইফ টাইম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কারণ এটি করলে এনিমেলদের অ্যাবিউজ করা হচ্ছে।


জীবন এবং মৃত্যু একটি প্রাকৃতিক নিয়ম মৃত্যু কোন কিছুকেই জীবিত করতে চাওয়ার অর্থই প্রকৃতির নিয়মের সঙ্গে মজা করা এটা একদম করা উচিৎ না।

এরপর ১৯৬৩ সালের একজন বিজ্ঞানের যার নাম স্টানলি মিল্ক রাম এই বিজ্ঞানী। মানুষের নিজের মালিকের আদেশকে মান্য করার পরিমানকে মাপতে চেয়েছেন। সে জানতে চেয়েছিল হিটলারের আদেশে তার সহযোগীরা কিভাবে বছরের পর বছর সাধারণ মানুষের ওপর অকথ্য অত্যাচার করেছিল। এটি একটি সাইকোলজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট ছিল।যেখানে দুটি ঘরে দুটি মানুষকে রাখা হয়েছিল এবং তাদের একজন শিক্ষক বা বস বসেছিলেন। ঘরের লোক দুটো ওই বসের সব কথা শুনতো ঘর দুটি এমন ছিল যে যেখানে দুটি মানুষ একে অপরের কথা শুনতে পেত কিন্তু কেউ কাউকে দেখতে পেত না। এই এক্সপেরিমেন্টে বস সেখানে থাকা দুজন লোককে কিছু প্রশ্ন করত। প্রত্যেকটা ভুল উত্তরের জন্য তাদেরকে বৈদ্যুতিক শখ দেওয়া হতো। এই এক্সপেরিমেন্ট থেকে ফলাফল আসে যে যে কোন ব্যক্তি তার বসের কথা এমন ভাবে মেনে চলে যেন তার বস তার কোন ব্যবহারে রেগে না যায়। আর তাদের বসকে ভয় পেয়ে এমন কিছু করে ফেলে যেগুলো করা একদমই উচিৎ নয়। এই এক্সপেরিমেন্টের জন্য জনগণ এই বিজ্ঞানের প্রচুর সমালোচনা করেন এবং এক্সপেরিমেন্ট বন্ধ করার দাবি করা হয়।

 শেষমেষ এই এক্সপেরিমেন্ট অনৈতিক ঘোষণা করা হয়। এই এক্সপেরিমেন্টের কয়েক বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন হিটলার অনেক কঠিন আইন জারি করেছিল। সেই সময় জার্মানির একজন বিজ্ঞানী জোসাফ ম্যাঙ্গেলের ভয়ংকর সব এক্সপেরিমেন্ট সবার সামনে এসেছিল। এই সময় হাজার হাজার এক্সপেরিমেন্ট করা হয়েছিল এবং সবই করা হয়ে ছিল হিটলারের সুবিধার্থে উদ্দেশ্যে। ঔষধ এবং চিকিৎসার জন্য লিডার ছিল জোসেফ ম্যাঙ্গেলে যাকে এঞ্জেল অফ ডেথ বলা হতো। যখন কোন বাচ্চা চিকিৎসার জন্য জোসেফ এর কাছে আসতো তখন জোসেফ তাদের দিকে ভয়ংকর ভাবে তাকাতো এবং দেখতো সেখানে যমজ বাচ্চা আছে কিনা। সে জমজ বাচ্চার জন্য পাগল ছিল, কারণ সে জমজ বাচ্চাদের জোড়া লাগানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করত। তবে সেই এক্সপেরিমেন্টের সময় জমজ বাচ্চাদের অনেক সময় জ্ঞান গ্রীন এর মত রোগ হত এবং তারা খুবই ভয়ঙ্কর ভাবে মারা যেত। এই এক্সপেরিমেন্ট ছাড়াও আরো অনেক ভয়ঙ্কর এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন। যেমন লোকজনকে প্রেসার চেম্বারে রেখে দেওয়া, তাদের বরফের মধ্যে জমিয়ে মেরে ফেলা, এছাড়াও শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গকে শরীর থেকে আলাদা করে দেওয়া, লিঙ্গ বদল করা প্রভৃতি। 


এসব কথা শুনলে যে কারোর গায়ে কাঁটা দিতে বাধ্য। তাহলে বুঝলেন তো কতটা ভয়ংকর ছিল এই বিজ্ঞানীরা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad