পাঁঠা বলি না দিলে মা শান্ত হন না
প্রদীপ ভট্টাচার্য, ৬ই নভেম্বর, কলকাতা: পাঁঠা বলি না দিলে শান্ত হন না মা। সূর্য উদয়ের আগে দিতে হয় বিসর্জন। জাগ্রত এই শ্যামা মায়ের পুজোয় মেতে উঠেন একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। মালদহে অবস্থিত পাকুয়াহাট, আর এই পাকুয়াহাটে অবস্থিত প্রায় দুশো বছরের প্রাচীন শ্রী শ্রী আদি শ্যামা কালী মায়ের মন্দির। কথিত আছে শ্যামা মায়ের কাছে যে যা মানত করে, মা তাদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। সারা বছর মা কালীর পুজো হলেও কালীপূজোর দিন মায়ের বিশেষভাবে আরাধনা করা হয়।
শোনা যায় নন্দী চৌধুরী নামে এক জমিদার এই পুজো চালু করেছিলেন। তিনি কিন্তু জমিদারি ছেড়ে বর্ধমানে যাওয়ার আগে পাকুয়াহাটে নটি গ্রামের বাসিন্দাদের হাতে এই পুজোর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। আর সেই থেকে পুরনো নিয়ম মেনে আজও আদি শ্যামা মায়ের পুজো হয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একজন বলেন, 'আমি খুব ছোটো থেকেই এই পুজো দেখে আসছি। এই পুজো কম করে দুশো বছরের পুরনো তো হবেই। আগে পাঁঠা বলি অনেক বেশি হত, এখন পরিমাণ অনেক কমে এসেছে। হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়। অনেক দূর দূর থেকে লোকেরা এখানে আসেন পুজো দেখতে। যারা মায়ের মহিমা জানে তারা সবাই এখানে আসেন। আগে সূর্যোদয়ের আগেই মায়ের বিসর্জন হতো। এখন লোকজনের আগমন বেশি হওয়ার কারণে, তাদের দেখবার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সূর্যোদয়ের পরে পরের দিন মাকে বিসর্জন দেওয়া হয়।'
জানা যায়, এই মা কালীর পুজোয় পাঠাবলিরও নিয়ম রয়েছে। পুজোর দিন কয়েকশো পাঠা বলি দেওয়া হয়। পাকুয়াহাট সহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আজও নিয়ম নীতি মেনে পুজো করে আসছেন এই শ্যামাকালী।
এ ব্যাপারে মন্দিরের পুরোহিত মশাই জানালেন, প্রথমে আমার বাবা পুজো করতেন, তারপর আমার দাদা এবং এখন আমি পুজো করছি। বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, মালদা প্রভৃতি দূর-দূরান্ত থেকে এখানে লোকজন আসেন প্রতিমা দেখতে। ছশো থেকে সাতশো পাঁঠা বলি হয় এখানে। এছাড়া মনস্কামনা পূর্ণ হলেও অনেকে এখানে মায়ের কাছে পুজো দিতে আসেন।
No comments:
Post a Comment