মৃত মায়ের সঙ্গে এক বছর সংসার ২ বোনের! উদ্ধার কম্বলে মোড়ানো কঙ্কাল
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ নভেম্বর: পরিবার-সমাজের সব বন্ধন ছিন্ন করে নিজ ঘরেই বন্দি হলেন দুই বোন। পাশাপাশি দুই বোনই তাদের মৃত মায়ের কঙ্কাল এক বছর ধরে ঘরে লুকিয়ে রেখেছিল। হাড়হিম এই ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বারাণসী জেলার। ২৭ বছর বয়সী পল্লবী এবং ১৯ বছর বয়সী বৈষ্ণবী তাদের মায়ের সাথে বসবাস করছিলেন যিনি এক বছর আগেই মারা যান। পল্লবী এবং বৈষ্ণবীর মা ঊষা তিওয়ারি ৮ ডিসেম্বর, ২০২২-এ মারা যান। দুই বোনই প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের জানিয়েছিলেন যে, তারা তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন।
দুই বোনই তাদের মৃত মায়ের গহনা ও বাসনপত্র বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিজের বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেননি। প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের সাথে তাদের সম্পর্ক সম্পূর্ণ ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এই মেয়েরা যখন বেশ কয়েক দিনের জন্য নিজেদের আবদ্ধ করে রেখেছিল এবং ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেয়, তখন লোকেদের সন্দেহ হয়।
প্রতিবেশী রমেশ সিং মেয়েটির মামা ধর্মেন্দ্র ত্রিপাঠীকে ফোন করে পুরো বিষয়টি জানান, যিনি মির্জাপুরে থাকেন। লঙ্কা থানার ইন্সপেক্টর শিবকান্ত মিশ্রকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান ধর্মেন্দ্র ত্রিপাঠী। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছান কাশী জোনের ডিপি আরএস গৌতমও। পুলিশ জোর করে দরজা খুলে দিলে লোকজনের চক্ষু চড়কগাছ।
বাড়িতে মেয়ে দুটির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। লঙ্কা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জানান, বাড়িতে চাদর ও কম্বলে মোড়ানো একটি কঙ্কাল পাওয়া গেছে। কঙ্কাল ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে এই মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি খুন।
জিজ্ঞাসাবাদে বোঝা যায়, বাবা-মা মারা যাওয়ার পর দুই মেয়েরই মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। এ কারণে এত দিন মায়ের দেহ লুকিয়ে রেখেছিলেন তারা। জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েরা জানায়, সম্পদের অভাবে তারা মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেনি।
উল্লেখ্য, বালিয়ার রামকৃষ্ণ পান্ডে ৩০ বছর আগে বালিয়ার দেবেশ্বর তিওয়ারির সাথে তিন মেয়ের মধ্যে বড় ঊষাকে বিয়ে করেছিলেন। স্বামীর সঙ্গে মতবিরোধের পর ঊষা তার মেয়ে পল্লবী ও বৈষ্ণবীকে নিয়ে মাদারবনে তার বাবার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পল্লবী এমকম করেছে। হাইস্কুল শেষ করে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছিলেন বৈষ্ণবী। বিহারের এসিসি সিমেন্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর, রামকৃষ্ণ তার বাড়ির কাছে একটি কসমেটিক দোকান খোলেন।
পল্লবীর আচরণ ভালো না হওয়ায় প্রায় দেড় বছর আগে রামকৃষ্ণ লখনউতে কনিষ্ঠ কন্যা উপাসনার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পল্লবী দোকানের দখল নিলেও চালাতে পারেননি। ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর মা ঊষা মারা যান। দুমাস আগে রামকৃষ্ণ এসেছিলেন, কিন্তু পল্লবী তাঁকে ঘরে ঢুকতে দেননি। যাওয়ার আগে, রামকৃষ্ণ তার প্রতিবেশী রমেশ সিংকে তার নম্বর দিয়েছিলেন, যাতে প্রয়োজনে তার সাথে যোগাযোগ করা যায়।
No comments:
Post a Comment