বিয়ের আগে কনেকে অপহরণ করাই যে দেশে রীতি
প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৭ জানুয়ারি: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিয়ে রীতি ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু জানেন কি এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে বিয়ের আগে কনেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বর? শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! সেখানে বিবাহযোগ্য কোনও পুরুষ যেকোনও মেয়েকে পছন্দ হলেই জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে পারেন। এই দেশ হল কিরগিজস্তান। বিশ্বজুড়ে যেখানে মেয়েদের অনুমতি ছাড়া জোরপূর্বক বিয়ে করা আইনে নিষিদ্ধ সেখানে এই দেশে একেবারেই উল্টো রীতি। জোরপূর্বক বিয়ে আজও এখানে একটি সাধারণ ব্যাপার। ফলত অল্প বয়সী মেয়েদের অপহরণের ঘটনা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে অনেক বেশি।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, কিরগিজস্তানে ৬০ শতাংশ বিয়ের ক্ষেত্রে এই জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ধরণের বিয়ের নাম দেওয়া হয়েছে আল কাচুউ। রীতি অনুযায়ী, ছেলেরা দল বেঁধে একটি মেয়েকে খোঁজে এবং পছন্দ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। আর এইসব ঘটনা ঘটে প্রকাশ্যে। তবে একটা সময় কনে অপহরণ করে বিয়ের বিরুদ্ধে এখানে কড়া আইন ছিল। সেই সময় এই দেশটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সোভিয়েত ভেঙ্গে কিরগিজস্তান আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা পেলে এই আইনেরও বিলোপ ঘটে।
এই দেশের নিয়মানুযায়ী ছেলেরা বিবাহযোগ্য হলেই পরিবার তাকে আল কাচুউর দিকে প্ররোচিত করে। শুরু হয় সুন্দরী ও সুস্থ মেয়েদের খোঁজ। এই জোরপূর্বক বিয়ের সবচেয়ে বেশি শিকার হয় দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা। তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় ছেলের বাড়িতে। এরপর মেয়ের পরিবারের লোকজন ছেলের বাড়িতে হাজির হয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেয়েকে সেখানে বিয়ে দিতেই হয়। দেশটি যেহেতু মুসলিম অধ্যুষিত, তাই বিয়েতে সম্মতি না দিলে পরবর্তী কালে ওই মেয়েকে বিয়ে দিতে অসুবিধা পড়তে হয় পরিবারকে।
ছেলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর মেয়ের মাথায় সাদা স্কার্ফ বেঁধে দেওয়া হয় জোর করে। এর অর্থ, মেয়েটি বিয়ের জন্য প্রস্তুত। অনেক সময় বয়সের কারণে বিয়ে করতে মেয়েটি অস্বীকার করলেও ছেলের বাড়ির লোকেরা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে, প্রলোভন দেখায় গাড়ি-বাড়ি সম্পদের। এরপরও রাজি না হলে মেয়েটির ওপর চলে অত্যাচার। কোনও অবস্থাতেই মেয়ে যদি রাজি না হয়, তাহলে ধর্ষণ ও খুন করতেও দ্বিধা করেন না তারা। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে একটি এমন ঘটনা সেখানে ঘটেছিল।
No comments:
Post a Comment