শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে বন্ধ স্কুল! দ্রুত খুলুক, চাইছেন অভিভাবকরা
নিজস্ব সংবাদদাতা, হাওড়া, ০২ ফেব্রুয়ারি: ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তর্গত মাকড়দহ পায়রাটুঙ্গি মাঝের পাড়ার পায়রাটুঙ্গি শিক্ষা কেন্দ্র স্কুল বন্ধ হয়ে আছে। স্কুল মাঠে যেখানে স্কুলের পড়ুয়ারা ঘুরে বেড়াত, সেখানে আজ মুরগি, ছাগল গবাদি পশু চড়ছে। স্কুলের কক্ষে লাগানো আছে তালা। একসময় এই স্কুল বাড়িতে কোলাহল হত, স্কুলের ঘন্টার আওয়াজ শোনা যেত। সেই জায়গায় বর্তমানে নিস্তব্ধতা গ্রাস করে আছে। বেঞ্চে পড়েছে ধুলো জানালায় মাকড়সার জাল বুনছে। মিড ডে মিলের রান্নাঘরে সপ্তাহের খাদ্য তালিকা এখনও জ্বলজ্বল করছে। দূর থেকে স্কুলের নাম ও বাড়িটাই দেখা যাচ্ছে কিন্তু দেখা নেই ছাত্র-ছাত্রী সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
পায়রাডুঙ্গি শিক্ষা কেন্দ্র স্কুল পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হতো। স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, স্কুলটি ২০০৩ সালে স্থাপিত হয়। সেই সময়ে শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৬ জন এবং মোট পড়ুয়া সংখ্যা আনুমানিক ২৮০জন। গ্রামের বাসিন্দারা খুশি হয়েছিলেন তাদের এলাকায় শিক্ষাকেন্দ্র হওয়ার জন্য। পঠন-পাঠন চলছিল খুব ভালো। পতন ঘটতে শুরু করল ২০১৮ সাল থেকে। এক এক করে শিক্ষকদের সংখ্যা কমতে শুরু করল, নতুন করে শিক্ষক নিযুক্ত না হওয়ায় ২০২৪ সালে ১ জন শিক্ষক এসে দাঁড়ায়। একজন শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব নয় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল পরিচালনা করা। অতএব বাধ্য হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যে ক'জন পড়ুয়া ছিল তাদের স্কুলের পক্ষ থেকে টিসি ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং স্কুলের গেটে পড়ল তালা।
এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই এলাকার মধ্যে স্কুলটি হওয়ার জন্য তাদের সন্তানদের অনেক সুবিধা ছিল, দূরে কোথাও যেতে হতো না। এখন বাধ্য হয়ে ৫ কিলোমিটার দূরে স্কুল যেতে হচ্ছে। পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিডিওকে জানিয়েছেন স্কুলটি চালু রাখার জন্য কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। স্কুলের যিনি জমিদাতা তাদের বংশধর জানান, অনেক আশা নিয়ে এবং এলাকার গ্রামবাসীদের কথা ভেবে তারা যাতে শিক্ষার আলো পায় তাই এই জমিটি দান করেছিলেন তাদের পূর্বপুরুষ। বর্তমানে এই পরিস্থিতি দাঁড়াবে তারা ভাবতে পারেননি।
এই বিষয়ে মাকড়দহ দু'নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জানান, তিনি চেষ্টা করেছিলেন স্কুলটি চালু রাখার জন্য এমনকি ব্লক শিক্ষার সচিবকে জানিয়েছিলেন, কিন্তু কাজ হয়নি। এই বিষয়ে তিনি আরও বিভিন্ন দপ্তরে জানাবেন, বলেও জানিয়েছেন। তবে এই স্কুল কবে চালু হবে! সেই আশাতেই দিন গুনছেন এলাকার মানুষজনেরা।
No comments:
Post a Comment