মুসলিম ভোট বিভাজনের ভয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করছেন মমতা
কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বহুবার মুসলিম তুষ্টির প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, মুসলমানদের আকৃষ্ট করার এই পদক্ষেপ মমতার উপর ভারী হবে কি না। ব্যাপকভাবে বলতে গেলে, পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম। গত কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গেছে মুসলিমরা ঐক্যবদ্ধভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ভোট দিয়েছে। শুধু বিজেপি নয়, কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গেও যেতে পছন্দ করেননি তিনি। এখন প্রশ্ন হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি মাত্র ৩০ শতাংশ ভোটারকে টেনে আনতে থাকেন, তাহলে বাকি ৭০ শতাংশ ভোটার এক হতে পারবেন না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল টিএমসি 'একলা চলো রে' স্লোগান গ্রহণ করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস বা বামেদের সঙ্গে জোট করেনি। পশ্চিমবঙ্গের সবকটি ৪২টি আসনে একাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিএমসি। এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে যে, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় টিএমসি কংগ্রেস ও বামদের সঙ্গে জোট করতে চায়নি। যাতে মুসলিম ভোট বাম ও কংগ্রেসের দিকে না যায়। মুসলমানরা যাতে পূর্ণ সমর্থন পায় তা নিশ্চিত করতে টিএমসি এই কৌশল নিয়ে কাজ করছে।
গত কয়েক বছর ধরে, পশ্চিমবঙ্গের টিএমসি সরকার মুসলিম ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয়তামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে মুসলমানদের সব ধরনের ছাড় দেওয়া। তৃণমূল সরকার মুসলিম ধর্মগুরুদের ভাতা বাড়িয়েছে। এর বাইরে রাজ্য মেডিকেলে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অতিরিক্ত কোটা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া সব বেসরকারি মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বলা হচ্ছে, মুসলিম ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ববহরমপুর আসন থেকে প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করছেন টিএমসি। কংগ্রেসের অধীর রঞ্জন চৌধুরী বর্তমানে বহরমপুরের সাংসদ। অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে টিএমসি একটি বড় মুসলিম মুখকে মাঠে নামিয়েছে। এটাও বলা হচ্ছে যে ইউসুফ পাঠান হারলেও, টিএমসি বহরমপুরে মুসলমানদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি নথিভুক্ত করতে সফল হবে।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বহুবার ধর্মের তাস খেলার অভিযোগ উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবার মঞ্চ থেকে বলেছিলেন যে রমজানে রোজা রাখার জন্য তাকে মজা করা হয়েছিল। বিজেপি আমার নামও পাল্টেছে। কিন্তু আমি ধার ধারি না. অন্য একটি ছবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন হাতে ধরে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া সন্দেশখালীর মতো ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দলকে আসামি শাহজাহান শেখের পক্ষে যুক্তি দিতে দেখা গেছে।
মালদা দক্ষিণের টিএমসি প্রার্থীর নাম নিয়েও তোলপাড় চলছে। আসলে এখান থেকে শাহনওয়াজ আলি রেহানকে প্রার্থী করেছে টিএমসি। শাহনওয়াজ আলী রেহানকে মুসলিম অধিকারের পোস্টার বয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একই সঙ্গে শাহনওয়াজ আলি রেহানের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
No comments:
Post a Comment