হাবড়ার সভা থেকে শুভেন্দুর নিশানায় কাকলি-রথীন, নারায়ণ ছাড়াও সিপিএম
উত্তর ২৪ পরগনা: সন্দেশখালি ও দেগঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে শাহজাহান, বাকিবুর রহমানের পরিণতি উল্লেখ করে তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার, খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ এবং অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামীকে হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সিপিএমকে করলেন কটাক্ষ। হাবড়ার পল্লীমঙ্গল খেলার মাঠে বিজেপির কর্মী সভায় এসে শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন শাহজাহান, বাকিবুররা কাদের হাতে তৈরি ?
শুভেন্দু বলেন, "মোতার্জা হোসেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা এবং রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর হাতেই তৈরি বাকিবুর। আর সন্দেশখালির শাহজাহান শেখ কার সৃষ্টি, জানেন? মোসলেম শেখের। সিপিএমের সন্দেশখালির নেতা।"
খানিক থেমে কটাক্ষের সুরে যোগ করেছেন, "ওরা নাকি বিরাট সৎ! একুশের বিধানসভার মতো লোকসভাতেও ওদের ভাগ্যে সেই শূন্যই লেখা আছে!"
রাজ্যের সব থেকে বড় জেলা উত্তর ২৪ পরগনা। এবারের লোকসভা ভোটে এই জেলার সবকটি লোকসভা আসনেই বিজেপির জয় সুনিশ্চিত করার আহ্বান জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু বলেন, "বনগাঁ, ব্যারাকপুর তো আমাদেরই রয়েছে। দমদম আগে আমাদের ছিল, ওখান থেকে জিততেন তপন সিকদার। বাকি রইল বসিরহাট, আর বারাসত। এবারে, উত্তর শূন্য করে দিতে হবে।"
বাড়ি বাড়ি প্রচারে গিয়ে মানুষের কাছে কী বলতে হবে, কর্মীদের সেই সম্পর্কে 'তালিম' দেওয়ার পাশাপাশি মঞ্চ থেকে শাসকদলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে 'বাড়াবাড়ি' না করার পরামর্শও দিয়েছেন শুভেন্দু।
হাবড়ার সভা থেকে নারায়ণ গোস্বামীর উদ্দেশ্যে শুভেন্দু বলেন, "অশোকনগরের এমএলএ বেশি ফটফট করবেন না, গরু পাচারে আপনার নাম আছে। একটু স্লো চলুন।"
নাম না করে টেনে এনেছেন বারাসতের বিদায়ী সাংসদ তথা এবারের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারের প্রসঙ্গও। শুভেন্দুর কথায়, "বারসতের এমপির পিএ বাপি যা মাল তুলেছে এবং তাঁর সঙ্গে জড়িত সাংসদও। আমি একথা বলেছিলাম বলে মানহানির মামলা করেছিল। পাল্টা আইজীবীর চিঠিতে বাপ তোলার প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিতেই তারপর থেকে আমাকে আর খোঁচাতে আসেনি। বাপির (পিএ) বস্তাটা যদি খুলে দিই ওঁর ঘর থেকে বেরিয়ে প্রচার করা মুশকিল হয়ে যাবে!"
নাম না করে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকেও আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। গার্ডেনরিচের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু বলেন, "মধ্যমগ্রামে যদি হাত দেন, গার্ডেনরিচের মতো কত ভুয়ো বিল্ডিং বেরোবে! পুর দুর্নীতিতে উনি জড়িত। আমার কাছে তার প্রমাণ রয়েছে। প্রচারে সেগুলো বলব। কয়েকদিন আগে ইডি, সিবিআই ওকে বাড়িতে গিয়ে আদর করে এসেছে!"
পর্যবেক্ষকদের মতে, নরমে গরমে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী-প্রার্থীদের চাপে রাখতেই এমন কৌশলী বক্তব্য পেশ করেছেন শুভেন্দু। তবে এব্যাপারে শাসকদলের প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি। প্রতিক্রিয়া এলে প্রতিবেদনে আপডেট করে দেওয়া হবে।
একই সঙ্গে ৩৭০ ধারা বাতিল, রাম মন্দিরের উদ্বোধন সহ একাধিক ইস্যুতে মোদী সরকারের সাফল্যের দাবি করে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিরোধী দলনেতার আহ্বান, "আরেকবার কি কেউ উদ্বাস্ত হতে চান? দেশ ভাগ হোক, কেউ চান কি? তা না চাইলে ইভিএমে কে ভোটে দাঁড়িয়েছে দেখার দরকার নেই। শুধু পদ্ম চিহ্নে ছাপ দিলেই হবে। মোদীজির হাতে দেশের ভার তুলে দেওয়া মানে দেশকে সুরক্ষিত রাখা।"
No comments:
Post a Comment