কীভাবে সুস্থ রাখবেন আপনার ফুসফুস,হার্ট,কিডনি এবং অন্ত্র?
প্রেসকার্ড নিউজ,লাইফস্টাইল ডেস্ক,১ এপ্রিল: আজকাল ঘরে বসেই সবাই নানা রকম খাবার উপভোগ করে।অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং প্রায় সবাই জাঙ্ক ফুড,ভাজা এবং মশলাদার খাবার খেতে শুরু করে।একই সময়ে শারীরিক কার্যকলাপ প্রায় অস্তিত্বহীন।খুব কম লোকই আছে যারা ঘরে বসেও ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করে।এই অবস্থা চলতে থাকলে শীঘ্রই আপনার স্বাস্থ্যের অবনতি হবে।বিশেষ করে কিডনি,ফুসফুস,হৃৎপিণ্ড ও অন্ত্রের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে।যার কারণে ডায়াবেটিস,উচ্চ রক্তচাপ,স্থূলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য,বদহজম ইত্যাদি সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।শরীর যাতে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য মানুষকে তাদের দৈনন্দিন রুটিন উন্নত করতে হবে।
ফুসফুস সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ টিপস -
আপনার যদি শ্বাস নিতে সমস্যা হয়,তার মানে আপনার ফুসফুসে সমস্যা আছে।ধূমপান এবং অতিরিক্ত মদ্যপান ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে টিবি,অ্যাজমা,নিউমোনিয়া,ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের মতো রোগ দেখা দেয়।আর এর জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।আপনার ফুসফুস সুস্থ রাখতে এই নিয়মগুলি মেনে চলুন -
ধূমপান,তামাক,গাঁজা ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন।এর মাধ্যমে ফুসফুস ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করবে।
খুব বেশি অ্যালকোহল পান করবেন না।
জল সব রোগের নিরাময়।আপনার ফুসফুস সুস্থ রাখতে যতটা সম্ভব জল পান করুন।জল ফুসফুস থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।এইভাবে ফুসফুস সবসময় সুস্থ থাকে।
ভাজা এবং মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।যতটা সম্ভব সবুজ শাক-সবজি এবং মরসুমি ফল খান।
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।এতে একটি নাকের ছিদ্র বন্ধ করে অন্য নাকের ছিদ্র দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।কমপক্ষে ২ মিনিটের জন্য এই প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন।ফুসফুস আরাম পাবে।
দূষণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক পরতে ভুলবেন না।
ঘরে জমে থাকা ধুলাবালি ও জীবাণুও ফুসফুসের ক্ষতি করে। তাই ঘর পরিষ্কার রাখুন।
প্রতিদিন ব্যায়াম ও যোগব্যায়াম করলে ফুসফুস সুস্থ থাকে।
হার্ট সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ টিপস -
উচ্চ রক্তচাপ,নিম্ন রক্তচাপ,কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি,হার্ট অ্যাটাক,হার্ট ফেইলিওর,হার্টের ব্যথা,ডায়াবেটিস ইত্যাদি সব হার্ট সম্পর্কিত রোগ,যা আমাদের খারাপ জীবনধারা এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়ে থাকে।হৃৎপিণ্ডের সাহায্যে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহিত হয়,তাই হার্টকে সুস্থ রাখা খুবই জরুরি।
অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মশলাদার খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ধূমপান বন্ধ করুন।
যতটা সম্ভব সবুজ শাক-সবজি এবং মরসুমি ফল খান।
চা এবং কফির পরিবর্তে জুস পান করুন।
প্রতিদিন ব্যায়াম ও যোগাসন করলে হার্ট সুস্থ থাকে।
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা আধা ঘণ্টা হাঁটলে হার্ট সুস্থ থাকে।
বেশি করে জল পান করলে রক্ত থেকে টক্সিন বের হয়ে যায়, যার ফলে রক্ত চলাচল ঠিক থাকে।
পিৎজা-বার্গার ইত্যাদিতে উপস্থিত চিজ ও মেয়োনিজ দ্রুত ওজন বাড়ায়,যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।তাই এটি কম খান।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের সাহায্যে ওজন নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগ এড়ানো যায়।একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হল এমন একটি যেটিতে আপনি আপনার ক্যালরি গ্রহণ কম করেন এবং সুষম পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট,প্রোটিন এবং চর্বি গ্রহণ করেন।
কিডনি সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ টিপস -
অনুমান অনুসারে,ভারতের প্রায় ১০ শতাংশ যুবক কিডনি রোগে ভুগছেন।এর প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ।এমন অনেক কারণ রয়েছে যার কারণে একজন ব্যক্তি কিডনি রোগের শিকার হন।যার জন্য তিনি নিজেই দায়ী।এসব কারণের মধ্যে রয়েছে অত্যধিক অ্যালকোহল পান,ধূমপান,শরীরে জলের অভাব, মাদকের অপব্যবহার,খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যথানাশক ওষুধ অতিরিক্ত খাওয়া ইত্যাদি।
দিনে অন্তত ২-৩ লিটার জল পান করুন।কারণ কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়।
শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখুন।এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে,যা কিডনিকে সুস্থ রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে কিডনির সমস্যা এড়ানো যায়।
বিটরুট খাওয়া কিডনির ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।
ধূমপান,তামাক,মাদক ইত্যাদি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন।
কম অ্যালকোহল পান করুন।
কিডনি সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের রুটিনে পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।
ন্যূনতম ব্যথানাশক গ্রহণ করুন।
শুধুমাত্র ফোটানো বা ফিল্টার করা জল পান করুন।
অন্ত্র সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ টিপস -
অন্ত্রের স্বাস্থ্য সম্পূর্ণরূপে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে।ভাজা ও মশলাদার খাবার,অতিরিক্ত খাবার খাওয়া,লাল লংকা অতিরিক্ত খাওয়া,ক্ষুধা কমে যাওয়া, রাতে ভারী খাবার খাওয়া,সকালে ব্রেকফাস্ট না করা,শারীরিকভাবে সক্রিয় না থাকা ইত্যাদি সবই অন্ত্রের স্বাস্থ্য নষ্ট করে।
ধীরে ধীরে খাবার খান এবং চিবিয়ে খান।দিনে তিনবার পরিপূর্ণ খাবার না খেয়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে অল্প অল্প করে খাবার খান।
খাওয়ার পরপরই ঘুমাবেন না।কিছুক্ষণ হাঁটুন।এটি হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়।
বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।
No comments:
Post a Comment