ছাপ্পা রুখে দিতেই ভোটের হার কমল বাংলায় - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday 28 April 2024

ছাপ্পা রুখে দিতেই ভোটের হার কমল বাংলায়

 


ছাপ্পা রুখে দিতেই ভোটের হার কমল বাংলায় 


কলকাতা: বিজেপিই তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়বে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে ছাপ্পা রুখে দেওয়া এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোট দিতে বাড়ি না ফেরার কারণে ২৩ শতাংশ মানুষ ভোট দেননি। এদের মধ্যে বিরাট অংশ আবার হিন্দু। রাজনৈতিক দলগুলোর দাবী, ভোট দানে এগিয়ে মুসলিমরা। একারণে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু আসনে জয়ের স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল। যদিও বিজেপির দাবী, তৃণমূলের স্বপ্নের গুড়ে বালি। ফল প্রকাশের পর তা তৃণমূল বুঝতে পারবে। 


প্রথম দুই দফা নির্বাচনে গতবারের তুলনায় ভোটের হার কম। আবার ১ম দফার তুলনায় দ্বিতীয় দফায় ভোটের হার কম। অথচ ভোট দিতে নানা ধরণের কর্মসূচির মাধ্যমে উৎসাহ দিতে সব ধরনের চেষ্টা করেছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডারা ভোটারদের ভোট দিতে আহ্বান করেছেন। এমনকি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আরএসএস কার্যকর্তারাও ভোট দিতে প্রচার করেছেন। তারপর কমেছে ভোটদানের হার। 


নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট আসন তিনটিতে ভোটদানের হার ছিল ৮০.৬২ শতাংশ। এ বার দ্বিতীয় দফায় দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৭৬.৫৮ শতাংশ। কেন চার শতাংশ ভোট কম পড়ল, তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলি। ধন্দে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা। রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, চোপড়া, শিলিগুড়িতে তীব্র গরমের জন্য যেমন ভোট কম পড়তে পারে, তেমনই প্রযুক্তি-নির্ভর নজরদারিতে ভুয়ো ভোট কমেছে কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।


কমিশনের খবর, বালুরঘাট , দার্জিলিংয় এবং রায়গঞ্জে ভোটদানের হার যথাক্রমে ৭৯.০৯%, ৭৪.৭৬% ও ৭৬.১৮%। অথচ ২০১৯ সালে বালুরঘাটে ভোট পড়েছিল ৮৩.৬০%, দার্জিলিংয়ে ৭৮.৭৩% এবং রায়গঞ্জে ৭৯.৫৪%। প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশমনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভোটে কারচুপিরুখতে একশো শতাংশ বুথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই)-যুক্ত 'ওয়েবকাস্ট' পদ্ধতি চালু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। 


প্রতি বুথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভোট প্রক্রিয়া সরাসরি কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সম্প্রচারিত হয়। এআই থাকার কারণে বিশেষ কোনও ঘটনার ইঙ্গিত মিললে তৎক্ষণাৎ সঙ্কেত যায় কমিশনে। তাই পরিস্থিতির সামান্যতম হেরফেরেই সঙ্কেত এসেছে, ঘটনাস্থলে যেতে হয়েছে 'কুইক রেসপন্স টিম'- কে। ভোট চলাকালীন এক প্রিসাইডিং অফিসারকে কমিশন ওই প্রযুক্তির সূত্রেই সরিয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে। এর উপর রয়েছে মাইক্রো অবজারভার, সাধারণ পর্যবেক্ষক, পুলিশ পর্যবেক্ষক ও খরচ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষকদের নজর। তাই ভুয়ো ভোট এড়ানো অসম্ভব নয়। আছে তীব্র দহনও। 


গৌড়বঙ্গে প্রবল গরম চলছে। শুক্রবার কোনও কোনও এলাকায় তাপপ্রবাহ চলেছে। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পাহাড়ি এলাকা বাদ দিলে সমতলেও তাপের দাপট আছে। তাই অনেকে ভোট দিতে বেরোতে উৎসাহ পাননি বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে কেউ কেউ মনে করাচ্ছেন, প্রতি বছর গ্রীষ্মে লোকসভা, বিধানসভা ভোট হয়। গরম উপেক্ষা করে ভোটের লম্বা লাইনের সচিত্র প্রমাণও আছে। ভোটদানের হারেও তা প্রতিফলিত হয়। তবে কেন আম-জনতা ভোটদান থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন?


ভোটের দিন রাজনৈতিক দলগুলোর বুথ ক্যাম্পে বসা কর্মীদের ব্যাখ্যা, পরিষায়ী শ্রমিকদের বিরাট অংশ ভোট দিতে বাড়ি আসেননি। বিজেপি বিরোধী অনেকেই ভোট দিতে আসেননি তাদের রাজনৈতিক দলগুলোর দূর্বলতা ও দলের জোট নীতির কারণে। বহু সচেতন ভোটার আছেন যারা শাসক বিরোধী দলগুলোর জননীতি থেকে সরে আসার কারণে ভোট দিতে আসেননি।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad