বোয়াল মাছ চাষ পদ্ধতি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday 30 May 2024

বোয়াল মাছ চাষ পদ্ধতি



বোয়াল মাছ চাষ পদ্ধতি


রিয়া ঘোষ, ৩০ মে : বোয়াল মাছ এখন বিপন্ন।   তবে বেশি চাষ করে এর প্রজাতি বাঁচানো সম্ভব।   প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে এখন আর আগের মতো মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।   কিন্তু বোয়াল একটি রাক্ষুসে প্রকৃতির মাছ।   তাই এই মাছকে প্রজনন ও উৎপাদনে আনতে হলে বিশেষ কিছু দিকে খেয়াল রাখতে হবে।


  এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বোয়াল মাছ ফোটে।   প্রজননকালে স্ত্রী ও পুরুষ মাছ সহজেই শনাক্ত করা যায়।   প্রজনন মরসুমে স্ত্রী মাছের পেট ডিমে ভরা থাকে এবং পুরুষ মাছের পেট সাধারণ মাছের মতোই থাকে।   এ ছাড়া পুরুষ মাছের পেটে চাপ দিলে সাদা দুধ বের হয়।   এভাবে পুরুষ ও মহিলা বোয়াল শনাক্ত করা যায়।


  বোয়াল মাছকে ডিম পাড়ার জন্য শুধুমাত্র পিজি হরমোন দিয়ে ইনজেকশন দেওয়া হয়।   প্রথম ডোজের সময় শুধুমাত্র স্ত্রী মাছকে ইনজেকশন দিতে হবে।   ডোজ ২ মিলিগ্রাম বা কেজি।  ৬ ঘন্টা পর দ্বিতীয় ডোজ ৪ মিগ্রা বা কেজি।


  বোয়ালের ডিম দুইভাবে সংগ্রহ করা যায়।   বোয়াল মাছে পিজি হরমোন ইনজেকশন দেওয়ার পর স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে।   বোয়াল মাছ সাধারণত দ্বিতীয় মাত্রার ৬ ঘন্টা পরে জন্মায়।   উল্লেখ্য যে যখনই ২-১টি ডিম ফুটে। এর পরই এক এক করে মাছগুলো ঘর থেকে বের করে দিতে হবে।


  এখন স্ত্রী মাছের পেটে আলতো করে চাপ দিলে ডিম বেরিয়ে আসবে।   স্ত্রী মাছ ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পরপরই পুরুষ মাছের পেটে চেপে দুধ বের করে ডিমে থাকা পাখির পালকের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে দেয়।


  এরপর ডিমগুলো বিশুদ্ধ জল দিয়ে ২-৩ বার পরিষ্কার করে ৩-৪ ইঞ্চি উঁচু জলের ট্যাংকে রাখতে হবে।   একটি পাতলা প্লাস্টিকের পাইপে একটি গর্ত করে একটি ফোয়ারা স্থাপন করা উচিৎ।   এইভাবে, ২০-২২ ঘন্টার মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হবে।



বিকল্পভাবে, পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে হরমোন দিয়ে ইনজেকশন দেওয়া হয় এবং একসঙ্গে একটি বড় বাড়িতে ছেড়ে দেওয়া হয়।   দ্বিতীয় মাত্রার ৬ ঘন্টার মধ্যে তারা স্বাভাবিকভাবে ডিম পাড়তে পারে।   ডিম পাড়ার পর ব্রুডফিশকে সাবধানে তুলে ফেলতে হবে।   তারপর ঘরে জল ৩-৪ ইঞ্চি কমিয়ে ছিদ্রযুক্ত পাইপ দিয়ে জল ছিটিয়ে দিতে হবে।   এখানেও ২০-২২ ঘন্টার মধ্যে ডিম ফুটবে।


  কিন্তু বোয়াল মাছের অণ্ডকোষ খুবই ভীতিকর।   হ্যাচিং এর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে, একটি অন্যটি খেতে শুরু করে।   অন্যান্য মাছ ডিমের কুসুম বা ছোট প্ল্যাঙ্কটন খায়, বোয়া ডিম ডিমের কুসুম বা প্ল্যাঙ্কটন কোনও ধরনের খায় না।   সে অবস্থায় মাছের লার্ভা জীবিত অবস্থায় তাদের খেতে হয় বা পোনা খেতে হয়।   এভাবে এটি ৮-১০ দিনের মধ্যে ২ ইঞ্চি আকারের পিউপাতে পরিণত হয়।


  বোয়াল মাছ একা পালন করা যায় না।   একজন অন্যটিকে খায় যতক্ষণ না শেষ পর্যন্ত কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।   তদুপরি, কৃত্রিম খাবার খাওয়ানো ছাড়া মাছ খুব বড় হয় না।   তাই বিভিন্ন মাছ দিয়ে এগুলো পালন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।   মিশ্র চাষে মজুদ ঘনত্ব প্রতি ৫ শতাংশে ১টি মাছ।


  মাছ ছাড়ার সময় একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা হলো, কোনও অবস্থাতেই তলদেশের আকার যেন পুকুরে উপস্থিত অন্যান্য মাছের সমান না হয়।   সেক্ষেত্রে অন্যান্য মাছের ওজন হবে ১৫০-২০০ গ্রাম।  একটি ২ ইঞ্চি আকারের বল বাকি থাকতে হবে।   তা না হলে বোয়াল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে অন্য মাছ খেতে পারে।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad