দেশী কই মাছ চাষের পদ্ধতি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 29 May 2024

দেশী কই মাছ চাষের পদ্ধতি



দেশী কই মাছ চাষের পদ্ধতি


রিয়া ঘোষ, ২৯ মে : দেশী মাছের মধ্যে কই মাছ খুবই জনপ্রিয় মাছ।  কই মাছ চর্বি কম, পুষ্টিকর এবং খেতে খুবই সুস্বাদু।   এই মাছ জীবিত বাজারজাত করা যায় তাই এই মাছের বাজার মূল্য তুলনামূলকভাবে বেশি।   অতীতে পুকুর, মোহনা, খাল ও বন্যা সমভূমিতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত।



  বর্তমানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের জন্য বাঁধ নির্মাণ, শিল্পকারখানার বর্জ্য, জল দূষণ, নির্বিচারে মাছ আহরণ, প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাটের কারণে মাছের রোগবালাই বৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে মাছের প্রাচুর্য হ্রাস পাচ্ছে।  ফসলি জমিতে কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার।



পুকুর নির্বাচন এবং প্রস্তুতি


  কই মাছের পুকুরটি রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গায় হওয়া উচিৎ।


  কই মাছ চাষের জন্য এমন পুকুর নির্বাচন করতে হবে যাতে কাদা কম থাকে।


  পুকুরে ৪-৫ মাস জল থাকে।


  ১৫-১০০ শতাংশ ভলিউম সহ পুকুর নির্বাচন করা ভাল।   তবে এর চেয়ে বড় বা ছোট হলে মাছ চাষ করা যায়।

  পুকুরের পূর্ব ও দক্ষিণ তীরে কোনও গাছপালা থাকা উচিৎ নয়।   উত্তর ও পশ্চিম দিকে লাগানো গাছপালা খুব একটা ক্ষতি করে না।   যদি তাই হয়, তাহলে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে পাতা জলে না পড়ে।


  পুকুরে জল সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে।


  জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।


  পুকুরের চারপাশে জালের বেড়া দিতে হবে।




  পুকুর সেচ


  পুকুর শুকিয়ে গেলে চুন যোগ করার ২-৩ দিন পর নিরাপদ উৎস থেকে ২-২.৫ ফুট জল দিতে হবে।   পুকুরে গভীর নলকূপের জল দিতে হবে।  পুকুর থেকে জল সরবরাহ করা হলে পাইপের মুখে ফিল্টার নেট বা ড্রেনে জাল দিয়ে জল পরিশোধন করতে হবে।   যাতে জলের সাথে অন্য কোনও জলজ প্রাণী, পোকামাকড়, দানব ও বোয়াল মাছ প্রবেশ করতে না পারে।


  ছানা সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা


  প্রস্তুত পুকুরে ২০০০-৫০০০ পর্যন্ত মাছ পালন করা যায়।


  মাছটি ছাড়ার ৯০-১২০ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যেতে পারে।


  ৩০% প্রোটিনযুক্ত সম্পূর্ণ পেলেট ফিড মজুদের দিন থেকে দিতে হবে।


  মাছের দৈহিক ওজনের ১৫% সকালে ও বিকালে ছিটিয়ে দিতে হবে।



  মাছের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি ১৫ দিন অন্তর জাল টেনে খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।



জলের গুণাগুণের কথা মাথায় রেখে মাছ চাষ করতে হবে।


  জলের মান হবে PET ৭.৫-৮.৫ এবং অ্যামোনিয়া ০-০.০২ মিলি/লিটার।   পরিমিত পরিমাণে রাখতে হবে।


  প্রতি মাসে অন্তত একবার পুকুরে ২০-৩০% বিশুদ্ধ জল যোগ করা উচিৎ।


  প্রতি ১৫ দিন, ২০০ গ্রাম চুন এবং ৪০০ গ্রাম লবণ যোগ করতে হবে।


  চুন এবং লবণ ২ ঘন্টা অন্তর দিতে হবে।


  জলের গভীরতা হবে ১ মিটার।


  

  আগে উৎপাদিত মাছের পোনা ব্যবহার করা যাবে না অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদিত পোনা ব্যবহার করা যাবে না।


  মাছের সঠিক গড় ওজন নির্ণয় করে খাওয়াতে হবে এবং সপ্তাহে একবার খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে।

  সর্বোপরি আপনাকে একজন পরিশ্রমী এবং উদ্যমী ব্যক্তি হতে হবে।   স্থানীয় মৎস্য ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করলে আপনি সফল হবেন।   এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে শুধুমাত্র নিজের সঠিক ব্যবস্থাপনাই সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad