বিজেপি সভাপতির বিরুদ্ধে ধ-র্ষণের নালিশ, এফআইআর দায়ের! কাঠগড়ায় স্বনামধন্য গায়ক রকি মিত্তলও - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, January 14, 2025

বিজেপি সভাপতির বিরুদ্ধে ধ-র্ষণের নালিশ, এফআইআর দায়ের! কাঠগড়ায় স্বনামধন্য গায়ক রকি মিত্তলও


প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৪ জানুয়ারি: ধর্ষণের অভিযোগ উঠল হরিয়ানার বিজেপি সভাপতি মোহন লাল বাডোলি ও গায়ক রকি মিত্তালের বিরুদ্ধে। পুলিশ তাদের দুজনের বিরুদ্ধে হিমাচল প্রদেশের কাসৌলিতে এফআইআর দায়ের করেছে। এই মামলাটি হিমাচলের কাসাউলি থানায় ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪-এ নথিভুক্ত হয়েছিল, যার তথ্য এখন প্রকাশ্যে এসেছে।


অভিযোগ রয়েছে যে, ৩ জুলাই, ২০২৩-এ তারা দুজনেই নির্যাতিতাকে মদ্য পান করতে বাধ্য করে, তার শ্লীলতাহানি করে এবং তাঁকে হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে। রকি মিত্তাল (জয় ভগবান) তাঁকে অভিনেত্রী বানানোর জন্য প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত। মোহন লাল বাডোলির বিরুদ্ধে লোকেদের প্রলুব্ধ করে সরকারি চাকরি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। 


এফআইআর অনুসারে, নির্যাতিতা সোলানের কাসৌলিতে অবস্থিত একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন তার বান্ধবর সঙ্গে। অভিযোগে তিনি বলেন, “বিকাল প্রায় ৫টার দিকে হোটেলে পৌঁছাই। সেদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘোরাঘুরি করছিলাম। সেখানে দুজন লোককে দেখতে পাই যারা সেখানে থাকছিলেন। এই সময় তাঁদের সঙ্গে কথোপকথন শুরু হয়, যার মধ্যে একজন ছিলেন মোহনলাল বাডোলি, যিনি নিজেকে একজন রাজনীতিবিদ বলছিলেন। দ্বিতীয়, রকি মিত্তাল ওরফে জয় ভগবান নিজেকে একজন গায়ক হিসেবে পরিচয় দেন। কথা বলতে বলতে তাঁরা আমাদের নিজেদের রুমে নিয়ে যান, বলেন 'বসে কথা বলি'। জয় ভগবান বলেন যে, তিনি আমাকে তাঁর অ্যালবামে অভিনেত্রীর রোল দেবেন। আর মোহন লাল বাডোলি আমাকে বলেছিলেন, 'তোমাকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেব, আমার খুব উচ্চ পর্যায়ে পরিচয় রয়েছে' এবং আমার প্রশংসা করতে শুরু করেন।"


তাঁর কথায়, "এরপর কথায়-কথায় তাঁরা আমাদের মদের প্রস্তাব দেন। যার জন্য আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমাদের অস্বীকৃতি সত্ত্বেও তাঁরা কথা বলার সময় আমাদের মদ পান করতে বাধ্য করেন।


নির্যাতিতা অভিযোগে বলেন, "আমাকে মদ খাওয়ানোর পর তারা আমাকে শ্লীলতাহানি করে। আমি এর বিরোধিতা করেছিলাম। এরপর তাঁরা আমার বান্ধবীকে ভয় দেখিয়ে পাশে বসিয়ে দেয় এবং আমাকে হুমকি দেয় যে, আমি যদি তাদের কথা না মানি তাহলে মেরে ফেলবে। এরপর দুজনেই পালাক্রমে আমাকে ধর্ষণ করে।'


তিনি অভিযোগে আরও বলেন, "আমার অশ্লীল ছবি ও ভিডিওও করা হয়েছে। তাঁরা আমাকে হুমকি দেন গুম করে দেবেন। 'কোথাও তোমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদি তুমি এই কথা রুমের বাইরে কাউকে বলেছো বা পুলিশকে কিছু বলছো'।"


নির্যাতিতা বলেন, “তারা আমাকে হুমকি দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। ভয়ে ও লজ্জায় এ ঘটনা কাউকে বলতে পারিনি। প্রায় দুই মাস আগে, তাঁরা আবার আমাকে হুমকি দেয় এবং ভয় দেখিয়ে পঞ্চকুলায় ডাকে, যেখানে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার চেষ্টা করেন। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন।"


নির্যাতিতার দাবী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং তাদের ফোন থেকে তাঁর ছবি ও ভিডিও মুছে দেওয়া হোক।


হিমাচল পুলিশ বাডোলি এবং রকির বিরুদ্ধে আইপিসির ৩৭৬ ডি এবং ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। সোলান জেলার পারওয়ানুর ডিএসপি মেহর পানওয়ার বলেছেন যে, বাডোলি এবং মিত্তালকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।


মহিলার দাবী, কাসৌলিতে তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কাসৌলি থানার উপ-পরিদর্শক ধনবীর সিং জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। নির্যাতিতা মহিলা বিবাহিত এবং মেডিক্যাল করাতে অস্বীকার করেছেন।


এই গোটা বিতর্কের মধ্যেই এই বিষয়টি রাজনৈতিকভাবেও উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে কারণ হিমাচলে কংগ্রেস সরকার রয়েছে। অন্যদিকে, কয়েকদিন পরেই বাডোলিকে টানা দ্বিতীয়বার হরিয়ানা বিজেপির রাজ্য সভাপতি করার ঘোষণা আসতে পারে।


এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সোনিপাতের বাড়িতে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করছিলেন মোহন লাল বাডোলি। দুপুরে যখনই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার খবর আসে বাডোলি একাই ঘরে চলে যান। এরপর দলীয় কর্মীরাও তাঁর বাড়ি ছেড়ে চলে যান। বাডোলি মিডিয়ার সাথে কথা বলেননি, তবে দৈনিক ভাস্করের সাথে ফোনে কথা বলার সময় তিনি তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। বাডোলি বলেছেন যে, 'এই পুরো বিষয়টি রাজনৈতিক স্টান্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।'


অপরদিকে এ বিষয়ে রকি মিত্তাল বলেন, 'আমি সংবাদমাধ্যম থেকে মামলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমার জীবন নিজেই একটি ভিন্ন ধরনের। আমি এসবের মধ্যে একেবারেই ঢুকি না। সেপ্টেম্বরে যখন নির্বাচন চলছিল, তখন বিজেপির দু-একজন বড় নেতাও আমার বাড়িতে মেয়ে পাঠিয়েছিলেন। আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি বললাম ওরা আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। ডিজিপি ও পুলিশ কমিশনারকেও চিঠি দিয়েছি। আমার কাছে তার কপি আছে। আমার কথা কেউ শোনেনি।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad