প্রেসকার্ড নিউজ স্পোর্টস ডেস্ক, ২৩ ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারাল ভারত। এদিন ভারতের জয়ের নায়ক ছিলেন অপরাজিত সেঞ্চুরি করা বিরাট কোহলি। খুশদিল শাহের বলে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি। ভারতকে জিতিয়েও দিন। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর আজকের (২৩ ফেব্রুয়ারি) ম্যাচে অসাধারণ কীর্তি দেখিয়েছেন বিরাট কোহলি।
ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর ৫১তম সেঞ্চুরি করলেন বিরাট কোহলি। ওয়ানডে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির নিরিখে ইতিমধ্যেই এগিয়ে গিয়েছেন বিরাট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার ৮২তম সেঞ্চুরি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে ১১১ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন বিরাট।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল ভারতীয় দল। যেখানে প্রাথমিক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল পাকিস্তানি দল। এই ম্যাচে জিতে সেমিফাইনালের দাবী আরও মজবুত করতে চাইবে ভারতীয় দল।
এদিন পাকিস্তানের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ভারতীয় দলের শুরুটা খুবই ভালো ছিল। ভারত প্রথম ধাক্কা পায় পঞ্চম ওভারেই, যখন অধিনায়ক রোহিত শর্মা শাহিন আফ্রিদির বলে বোল্ড হন। রোহিত ১৫ বলে ২০ রান করেন, যার মধ্যে ৩টি চার এবং একটি ছক্কা ছিল। রোহিতের আউটের সময় ভারতের স্কোর ছিল ৩১ রান। এখান থেকে শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি একসঙ্গে ইনিংসের দায়িত্ব নেন। কোহলি ও শুভমানের মধ্যে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়ে ওঠে। শুভমান গিলকে আউট করে এই জুটি শেষ করেন লেগ স্পিনার আবরার আহমেদ। গিল ৫২ বলে ৪৬ রান করেন, যার মধ্যে ছিল সাতটি চার।
গিল প্যাভিলিয়নে ফেরার পর বিরাট কোহলির সঙ্গে দায়িত্ব নেন শ্রেয়াস আইয়ার। তৃতীয় উইকেটে দুজনের মধ্যে ১১৪ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি জুটি ছিল। এই সময়ের মধ্যে, কোহলি চারটি চারের সাহায্যে ৬৩ বলে তার ফিফটি পূর্ণ করেন। শ্রেয়াস আইয়ারও ৬৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। ৫৬ রান করে আউট হন শ্রেয়াস। ৬৭ বলের ইনিংসে পাঁচটি চার ও এক ছক্কা হাঁকান শ্রেয়াস। ইমাম উল হকের হাতে খুশিদল শাহের হাতে ক্যাচ আউট হন শ্রেয়াস। শ্রেয়াসের পর হার্দিক পান্ডিয়া (৮) আউট হন।
ম্যাচে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৪ ওভারে ২৪১ রান করে। পাকিস্তানি দলের শুরুটা ছিল মোটামুটি। বাবর আজম ও ইমাম উল হক মিলে প্রথম উইকেটে ৪১ রানের জুটি গড়েন। দিশাহীন বোলিং করে ভারতের কাজ কঠিন করে দিয়েছিলেন মহম্মদ শামি। ম্যাচের প্রথম ওভারেই পাঁচটি ওয়াইড বোলিং করেন শামি। ভারতীয় দলের জন্য প্রথম সাফল্য হার্দিক পান্ডিয়া এনে দিয়েছিলেন, যিনি ৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাবর আজমকে উইকেটরক্ষক কেএল রাহুলের হাতে ক্যাচ আউট করেছিলেন। বাবর ২৬ বলে ২৩ রান করেন, যার মধ্যে পাঁচটি চার ছিল। এরপর দ্বিতীয় ওপেনার ইমাম উল হক (১০) রকেট থ্রোতে অক্ষর প্যাটেলের বলে রান আউট হন।
দুই উইকেটের পতনের পর পাকিস্তানি ইনিংসের দায়িত্ব নেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিল। তৃতীয় উইকেটে দুজনের মধ্যে ছিল ১০৪ রানের জুটি। এই সময়ে শাকিল ৬৩ বলে চারটি চারের সাহায্যে ফিফটি পূর্ণ করেন। এই সেঞ্চুরি জুটি ভাঙেন অক্ষর প্যাটেল, যিনি দুর্দান্ত বল করে রিজওয়ানকে বোল্ড করেন। ৭৭ বলে তিন চারের সাহায্যে ৪৬ রান করেন রিজওয়ান। এরপর সৌদ শাকিলকে আউট করে ভারতীয় দলকে বড় সাফল্য এনে দেন হার্দিক পান্ডিয়া। শাকিল ৭৬ বলে ৬২ রান করেন, যার মধ্যে ছিল পাঁচটি চার।
এরপর রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হন তৈয়ব তাহির (০)। পাকিস্তান ১৫ রানে তিন উইকেট হারায়। কুলদীপ যাদব এরপর পাকিস্তান দলের সহ-অধিনায়ক সালমান আলি আগা (১৯) এবং শাহীন আফ্রিদিকে (০) পরপর বলে আউট করেন এবং সাত উইকেটে পাকিস্তান ২০০ রানে পৌঁছায়। নাসিম শাহও বিশেষ কিছু করতে পারেননি এবং ১৪ রান করে কুলদীপ যাদবের শিকার হন। হারিস রউফও ৮ রান করে রান আউট হয়ে যান, যার ফলে পাকিস্তান দলের স্কোর হয়ে যায় ৯ উইকেটে ২৪১ রান।
উইকেট পতনের মধ্যে খুশদিল শাহ ৩৮ রানের ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে সম্মানজনক স্কোরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। খুশদিল ৩৯ বলে দুই ছক্কায় ৩৮ রান করেন। ৫০তম ওভারে হর্ষিত রানার শিকার হন খুশদিল। ভারতের হয়ে কুলদীপ যাদব নিয়েছেন সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট। যেখানে হার্দিক পান্ডিয়া পেয়েছেন দুটি উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন অক্ষর প্যাটেল, হর্ষিত রানা ও রবীন্দ্র জাদেজা।
No comments:
Post a Comment