নিজস্ব সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি, ২৪ ফেব্রুয়ারি: চিরঘুমের দেশে কিংবদন্তি টেবিল টেনিস প্রশিক্ষক ভারতী ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বেশ কয়েক মাস ধরেই তিনি বার্ধ্যক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। শেষমেষ জীবনের লড়াইয়ে হার মানলেন ক্রীড়াগুরু। ক্রীড়াজগত থেকে রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিরা তার চিকিৎসার সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। সম্প্রতি ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁর অসুস্থতার খবর শুনে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করেন তিনি। তাঁর হস্তক্ষেপেই ভারতী ঘোষকে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না, সোমবার সকালেই প্রয়াত হলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়ামহলে।
মান্তু ঘোষ বলেন, 'ভারতী দি'র প্রয়ান ক্রীড়াজগতের এক অপূরনীয় ক্ষতি। তাঁর প্রশিক্ষণে অনেক তারকা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় উঠে এসেছে।" মেয়র গৌতম দেব বলেন, 'খুব খারাপ লাগছে। তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বার্ধক্যজনিত অনেক সমস্যা ছিল। ক্রীড়াগুরু ও বঙ্গরত্ন সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। খুব খারাপ লাগছে।'
শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ায় ছোট্ট একটি ঘরে থাকতেন তিনি। একা হাতে কাজ সামলে কোচিংয়ের জন্য সময়ে পৌঁছাতে কোনও খামতি রাখতেন না। শিলিগুড়ির টেবিল টেনিস এবং ভারতী ঘোষ যেন সমার্থক। খুব অল্প বয়সেই এই খেলার সঙ্গে পরিচয় ভারতী ঘোষের। ধীরে ধীরে তাঁর ভাবনায় আসে খেলোয়াড় তৈরিতে গুরুত্ব দেবেন। ভারতী ঘোষের হাত ধরে অন্তত ৩০০০ টেবিল টেনিস খেলোয়াড় উঠে এসেছেন। ২০১৯ সালে রাজ্য সরকারের তরফে বঙ্গরত্ন এবং ২০২১ সালে ক্রীড়া দপ্তরের তরফে 'ক্রীড়া গুরু' সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল তাঁকে।
প্রশিক্ষকের ডিগ্রি না থাকলেও ভারতী ঘোষ শুধু উত্তরের নন, রাজ্যের অন্যতম সেরা টেবিল টেনিস কোচ ছিলেন। নিজের জীবনটাকেই উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন টেবিল টেনিসকে। হাতে ধরে গড়ে তুলেছেন অনেক খেলোয়াড়।অনেক দুস্থ এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদেরও কোচিং করিয়েছেন তিনি। তাঁর ছাত্রছাত্রীরা সর্বভারতীয় স্তরে যেমন প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তেমনই আন্তর্জাতিক মঞ্চেও করেছেন। কেবল শিলিগুড়ি নয়, এদিন গোটা বাংলা হারালো এমনই একজন ক্রীড়াগুরুকে।
No comments:
Post a Comment