নিজস্ব প্রতিবেদন, ০২ মার্চ, কোচবিহার : কোচবিহারের রাসমেলার সূচনা হয় মুসলমানের হাতে তৈরি রাসচক্র দিয়ে। মদন মোহন দেবের এই রাসচক্রটি তৈরি হত আলতাফ মিয়াঁর হাতে। অনেক কঠোর নিয়ম এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তিনি এই কাজটি সম্পন্ন করতেন। পরে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও এই কাজে যোগ দেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর শনিবার প্রয়াত হন আলতাফ মিয়াঁ। তিনি কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোক প্রকাশ করেছেন। সর্বত্র শোকের ছায়া।
আলতাফ মিয়াঁর পরিবার বংশ পরম্পরায় রাসচক্র তৈরি করে আসছে। আলতাফের বাবার মৃত্যুর পর, তিনি মদন মোহন দেবের রাসচক্রের প্রধান স্থপতি ছিলেন। তৃতীয় প্রজন্মের রাসচক্রের কারিগর। শনিবার রাত ৮টার দিকে তাঁর মৃত্যুর খবর জানান পরিবারের সদস্যরা। জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ৪০ বছর ধরে রাসচক্র তৈরির পর, এই প্রথম গত দুই বছর ধরে তিনি এটি করতে পারছিলেন না। পেটের অনেক সমস্যা ছিল।
তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। X হ্যান্ডেলে লিখেছেন, "কোচবিহারের বিখ্যাত রাস মেলার রাসচক্রের প্রস্তুতকারক আলতাফ হোসেনের প্রয়াণে আমি মর্মাহত। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। বাংলার যে ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্য তার অন্যতম ধারক-বাহক ছিলেন তিনি। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারকে আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। আমি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি শেষকৃত্যে পরিবারকে সবধরনের সাহায্য করার জন্য।"
এদিকে, দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার অর্থাৎ আজ সকালে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাসভবনে যান। উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, আব্দুল কাদির হক, পার্থ প্রতিম রায় প্রমুখ। এই দিনে, আলতাফ মিয়াঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর, তার মরদেহ শেষকৃত্যর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment