ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮:০০: মন্দিরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার গভীর রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের বিখ্যাত শ্রী বরাহ লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী মন্দিরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত আটজন ভক্তের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। 'চন্দনোৎসব' উপলক্ষে ভক্তরা 'নিজরূপ দর্শন'-এর জন্য লাইনে দাঁড়ানোর সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, এই মন্দিরটি সিংহচলম মন্দির নামেও পরিচিত।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদিন গভীর রাত আড়াইটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রবল বর্ষণে কাতার রোডের পাশে অবস্থিত একটি শপিং কমপ্লেক্সের কাছে মন্দির পরিসরের একটি দেওয়াল হঠাৎ ধসে পড়ে। বলা হচ্ছে, দেওয়ালটি নতুন করে নির্মিত এবং বৃষ্টির কারণে মাটি আলগা হয়ে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভাঙ্গালাপুদি অনিথা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন এবং বলেছেন যে, প্রবল বৃষ্টি এবং ভক্তদের চাপের কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি বলেন, "ভক্তরা ৩০০ টাকা মূল্যের বিশেষ দর্শন টিকিট নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বৃষ্টির কারণে দেওয়ালটি জলে ভিজে দুর্বল হয়ে পড়েছে।"
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এবং স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ শুরু করে। বিশাখাপত্তনমের জেলা কালেক্টর হরেন্দ্র প্রসাদ এবং পুলিশ কমিশনার শঙ্খ ব্রত বাগচিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। রাজ্য সরকার দুর্ঘটনার উচ্চ-পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু এই মর্মান্তিক ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে আছি। মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তৎপরতা পর্যালোচনা করেন এবং আহতদের পূর্ণ চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
দুর্ঘটনায় তিন মহিলার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং মৃতদেহগুলিকে বিশাখাপত্তনমের কিং জর্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে আহতদের চিকিৎসাও চলছে।মৃতদের মধ্যে ৫ জন পুরুষও রয়েছেন।
উল্লেখ্য, চন্দনৎসবম উত্সব হল সিংহাচলম মন্দিরের একটি বার্ষিক উত্সব, যেখানে ভগবান নরসিংহ স্বামীকে বছরে একবার চন্দনের লেপ অপসারণের পরে ভক্তদের কাছে তাঁর 'আসল রূপে' দেখানো হয়। এই উপলক্ষটি হাজার হাজার ভক্তের জন্য অত্যন্ত শুভ এবং বিরল বলে বিবেচিত হয়। মঙ্গলবার গভীর রাত ১ টায়, 'সুপ্রভাত সেবা' দিয়ে ভগবানকে জাগ্রত করা হয় এবং বিশেষ রৌপ্য যন্ত্রের সাহায্যে চন্দনের লেপ অপসারণের মাধ্যমে তাঁর আসল রূপ প্রকাশ করা হয়। এর পরে, অভিষেকম এবং অন্যান্য বৈদিক আচারগুলি যথাযথভাবে সম্পাদন করা হয়।
ঐতিহ্যগতভাবে, মন্দিরের উত্তরাধিকারী ট্রাস্টি পুষ্পপতি অশোক গজপতি রাজু এবং তার পরিবারকে প্রথম দর্শন দেওয়া হয এবং চন্দনের নৈবেদ্য প্রথম পূজা করা হয়। রাজ্য সরকারের তরফে রাজস্ব মন্ত্রী অঙ্গনি সত্য প্রসাদ প্রভুকে রেশম বস্ত্র উপহার দেন।
No comments:
Post a Comment