Friday, April 18, 2025

ভারতের পাঁচ কুখ্যাত ডাকাত! নাম শুনলে আজও কেঁপে উঠে মানুষ



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩০:০২ : ভারতের ইতিহাসে, কিছু ডাকাত তাদের সন্ত্রাসের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে ভয় তৈরি করেছিল। ফুলন দেবী, মান সিং, পান সিং তোমার, বীরাপ্পান এবং জগ্গা জাটের মতো নামগুলি এখনও মানুষের মেরুদণ্ডে কাঁপুনি দেয়। সেই গল্পগুলি কেবল অপরাধের জগতকেই চিত্রিত করে না, বরং সামাজিক অবিচার এবং পরিস্থিতিকেও তুলে ধরে।




ফুলন দেবী: ডাকাত রাণী


'দস্যু রানী' নামে পরিচিত ফুলন দেবী ছিলেন আশির দশকে চম্বলের সবচেয়ে বিপজ্জনক দস্যু। দরিদ্র মাঝি পরিবারে জন্মগ্রহণকারী ফুলনের শৈশবেই এক বয়স্ক ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়েছিল। বিবাহিত জীবনে শোষণ এবং গ্রামের ঠাকুরদের দ্বারা গণধর্ষণ তাকে বিদ্রোহী করে তুলেছিল। ১৯৮১ সালে, ফুলন বেহমাই গ্রামে ২২ জন ঠাকুরকে খুন করে প্রতিশোধ নেন, তাকে আলোচনায় নিয়ে আসেন। ১৯৮৩ সালে, তিনি ইন্দিরা গান্ধীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং পরে মির্জাপুর থেকে সাংসদ হন। কিন্তু ২০০১ সালে তাকে খুন করা হয়।




বীরপ্পান: জঙ্গলের রাজা



দক্ষিণ ভারতের বনাঞ্চলে ভয়ের আরেক নাম ছিল বীরাপ্পান। কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর সীমান্তে চন্দন কাঠ ও হাতির দাঁত পাচারকারী এই ডাকাত দলটি ১৯৭০ সাল থেকে সক্রিয় ছিল। সে ২০০০ টিরও বেশি হাতি শিকার করেছিল এবং ৮০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছিল। বীরাপ্পনকে ধরার জন্য সরকার ২০ কোটি টাকা খরচ করেছে। ২০০৪ সালে, তামিলনাড়ু পুলিশের একটি এনকাউন্টারে তিনি নিহত হন।




পান সিং তোমার: ক্রীড়াবিদ থেকে ডাকাত



পান সিং তোমারের গল্পটি অনুপ্রেরণামূলক এবং দুঃখজনক। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সুবেদার এবং সাতবার জাতীয় স্টিপলচেজ চ্যাম্পিয়ন পান সিং ১৯৫০-৬০ এর দশকের একজন বিখ্যাত ক্রীড়াবিদ ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর, মোরেনায় এক জমি বিরোধ তাকে ডাকাতে পরিণত করে। সে তার দলবলের সাথে চম্বলে সন্ত্রাস ছড়িয়েছিল, কিন্তু দরিদ্র এবং মহিলাদের সম্মান করত। ১৯৮১ সালে এক পুলিশ এনকাউন্টারে তিনি মারা যান। তাঁর জীবনের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র তাঁকে আরও বিখ্যাত করে তোলে।




জগ্গা জাট: দরিদ্রদের মশীহ



পাঞ্জাবের বিখ্যাত ডাকাত জগ্গা জাট ধনীদের কাছ থেকে ডাকাতি করে দরিদ্রদের সাহায্য করত। সামাজিক অবিচার এবং পুলিশের খুন তাকে বিদ্রোহী করে তুলেছিল। তার সাহসিকতা এবং উদারতা তাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। জগ্গা তার এলাকার দরিদ্র মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে নিহত হন। তার গল্প এখনও লোককাহিনীতে জীবিত।




মান সিং: চম্বলের রবিন হুড


মান সিং রাঠোর ছিলেন চম্বলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ডাকাত এবং ১৯৩৯ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন সন্ত্রাসের সমার্থক। আগ্রার খেদা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মান সিং ১,১১২টি ডাকাতি এবং ১৮৫টি খুন করেছেন, যার মধ্যে ৩২ জন পুলিশ সদস্যও ছিলেন। সে ধনীদের কাছ থেকে ডাকাতি করত এবং দরিদ্রদের সাহায্য করত, যে কারণে লোকেরা তাকে 'রবিন হুড' বলে ডাকত। ১৯৫৫ সালে, মধ্যপ্রদেশ পুলিশ ভিন্দ জেলায় তার মুখোমুখি হয়। আজও চম্বলের ইতিহাসে মান সিং-এর নাম অমর।


No comments:

Post a Comment