লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৭ মে ২০২৫: হৃদয় ছাড়া আমরা জীবন কল্পনাও করতে পারি না। আমাদের কাছে এটি একটি পাম্পিং মেশিনের মতো যা এক মুহূর্তও না থামিয়ে নিজের কাজ চালিয়ে যায়। এটি রক্ত পাম্প করে এবং সারা শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে। তারপর এটি অক্সিজেনহীন রক্তকে ফুসফুসে ঠেলে দেয় অক্সিজেন পাওয়ার জন্য। এক মুহূর্তের জন্যও যদি হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে শ্বাস-প্রশ্বাসও বন্ধ হয়ে যায়। তাই হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার স্বাস্থ্যের প্রতি একটু সচেতন হন তবে সুস্থ হৃদয়ের জন্য আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে পারেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে, নয়াদিল্লীর অ্যাপোলো হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মুকেশ গোয়েল কিছু জলখাবার বিকল্পের পরামর্শ দিয়েছেন, যা কেবল সুস্বাদুই নয় বরং হৃদরোগের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করে। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে, দিনটি শুরু করা উচিৎ ভালো এবং পুষ্টিকর জলখাবার দিয়ে। সকালের জলখাবারে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং হৃদরোগের জন্য উপকারী খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে আপনার হৃদপিণ্ডের ওপর ভালো প্রভাব পড়তে পারে। তাহলে, আসুন জেনে নিই এমন ৬টি জলখাবার সম্পর্কে-
১. ওটমিল এবং তাজা বেরি - ওটমিল হৃদপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী কারণ এতে বিটা-গ্লুকান নামক দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে সাহায্য করে। ব্লুবেরি বা স্ট্রবেরির মতো তাজা বেরি যোগ করলে স্বাদ বাড়ে এবং শরীরকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও ফাইবার সরবরাহ করে, যা প্রদাহ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
২. গ্রীক দই এবং মিশ্র শুকনো ফল - গ্রীক দই প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। এটি পেশী এবং শরীরের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বাদাম, আখরোট বা পেস্তার মতো শুকনো ফল যোগ করলে ভালো ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম পাওয়া যায়। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
৩. অ্যাভোকাডো সহ পুরো শস্যের টোস্ট - পুরো শস্যের টোস্টে জটিল কার্বোহাইড্রেট থাকে। এগুলো দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে শক্তি সরবরাহ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। আপনি যদি এতে অ্যাভোকাডো যোগ করেন, তাহলে এটি ভালো মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট দেয়। এটি খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। এটি হৃদপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী।
৪. মিশ্র সবজির সাথে ডিমের সাদা অংশের অমলেট - ডিমের সাদা অংশ হল কম চর্বিযুক্ত এবং উচ্চ প্রোটিনযুক্ত একটি বিকল্প। এটি হৃদপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী। পালং শাক, টমেটো, ক্যাপসিকামের মতো সবজি যোগ করলে এর ফাইবার এবং পুষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। এটি প্রদাহ কমায় এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
৫. সবুজ স্মুদি (পালং শাক, কলা এবং তিসির বীজ) – পালং শাক, কলা এবং তিসির বীজ দিয়ে তৈরি সবুজ স্মুদিতে পটাশিয়াম, ফাইবার এবং উদ্ভিদ-ভিত্তিক ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই পুষ্টি উপাদানগুলি রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে, কোলেস্টেরল কমাতে এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৬. আস্ত শস্যের সিরিয়াল, কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং কুঁচি করা বাদাম- আস্ত শস্যের সিরিয়াল শরীরকে জটিল কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে। এগুলো শক্তি এবং রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কম চর্বিযুক্ত দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এটি হৃদপিণ্ড এবং হাড়ের জন্য অপরিহার্য। ওপরে থেকে কাটা বাদাম যোগ করলে ভালো ফ্যাট এবং ফাইবার পাওয়া যায়, যা এটিকে একটি সম্পূর্ণ এবং হৃদয়গ্রাহী খাবারে পরিণত করে।
বি.দ্র: খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন বা নতুন ফিটনেস রুটিন শুরুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
No comments:
Post a Comment