বাংলাদেশে কি আবার ক্ষমতার পরিবর্তন হতে চলেছে? এই প্রশ্নটি উত্থাপিত হচ্ছে কারণ শনিবার হঠাৎ করে বাংলাদেশে হট্টগোল বেড়ে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় প্রচণ্ড রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। একদিকে হাজার হাজার ইউনূস সমর্থক রাস্তায় নেমে আসেন, অন্যদিকে, ইউনূস হঠাৎ করে তার উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা ডাকেন। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি দেশজুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় ৪১ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্ধ্যায় ইউনূসের বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সাথে বৈঠক করার কথা রয়েছে। এর পরে কিছু বড় ঘোষণা করা হতে পারে।
ঢাকার রাস্তায় যে জনতা জড়ো হয়েছিল তারা কেবল সমর্থনের জন্যই আসেনি, বরং ক্ষমতার দিক পরিবর্তনের দাবিতে এসেছিল। ইউনূসের সমর্থকরা বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করে ইউনূসকে দেশের নতুন রাষ্ট্রপতি করার দাবি জানান। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বার্তাগুলিতে শুক্রবারের নামাজের পর জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। অনুমান অনুসারে, শুধুমাত্র ঢাকাতেই ২০,০০০ এরও বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছিল।
উগ্রপন্থী এবং ছাত্র সংগঠনগুলি একত্রিত হয়েছিল
এই পুরো আন্দোলনকে বিশেষ করে তোলে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) এবং জামায়াতে ইসলামীর একত্রিত হওয়া। ইউনূসের সমালোচক এনসিপি এবার তার সমর্থনে বেরিয়ে এসেছে। উভয় সংগঠনই দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে লাইনচ্যুত হওয়া রোধ করার জন্য ইউনূসকে নেতৃত্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
জরুরি সভায় কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল?
শনিবার শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে ইউনূসের সভাপতিত্বে অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভার একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে নির্বাচন, সংস্কার এবং ন্যায়বিচার সম্পর্কিত সরকারের তিনটি প্রধান দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকের পর সরকার স্পষ্ট করে দেয় যে ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। সরকার আবারও জানিয়েছে যে তারা জুলাইয়ের বিদ্রোহের চেতনাকে সম্মান করে এবং জনগণের সমর্থন নিয়ে এগিয়ে যাবে। কাউন্সিল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে কিছু রাজনৈতিক শক্তি এবং বিদেশী শক্তি সরকারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে। যদি এই বাধাগুলি অব্যাহত থাকে, তাহলে সরকার সমস্ত তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরবে এবং তাদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবে।
বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের সাথে ইউনূসের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে
ইউনূস আজ সন্ধ্যা ৭টায় বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সাথে দেখা করবেন, যেখানে পরবর্তী কৌশল নির্ধারণ করা হবে। এই বৈঠকটিকে এ কারণেও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে যে এখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে নাকি আরও গভীর হবে। এর ফলে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা আবারও দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের সমর্থনে টিকে থাকার দাবি করছে, অন্যদিকে বিরোধী দল এবং ভিন্নমতাবলম্বী দলগুলি একত্রিত হয়ে রাস্তায় তাদের শক্তি প্রদর্শন করছে। আগামী সপ্তাহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করতে পারে এবং সকলের দৃষ্টি এখন সন্ধ্যায় সেই নির্ণায়ক বৈঠকের দিকে।
No comments:
Post a Comment