ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক সিঁদুর ধর্মঘটের প্রভাব এখন বাংলাদেশের সীমান্তেও পৌঁছেছে। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পদক্ষেপের পর, বাংলাদেশের ইউনূস সরকার তার নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে সতর্ক করেছে। বিশেষ করে ভারত সংলগ্ন সীমান্তে মোতায়েন করা পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এই সতর্কতা জারি করেছেন।
বুধবার এক অনুষ্ঠানে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের কারণে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সতর্কতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কতা এমন এক সময়ে এসেছে যখন ভারত সম্প্রতি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সিঁদুর হামলা চালিয়েছে, যেখানে সন্ত্রাসী লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করা হয়েছে।
ধর্মঘটের পর বাংলাদেশে সতর্কতা জারি
বাংলাদেশের ৩০টি জেলার সীমান্ত ভারতের সাথে, আর ৩টি জেলার সীমান্ত মায়ানমারের সাথে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সামরিক পদক্ষেপ বা কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব সরাসরি বাংলাদেশের সীমান্তে দেখা যেতে পারে। ইউনূস সরকার সচেতন যে দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য কোনও বহিরাগত উত্তেজনা ব্যবহার করা উচিত নয়। এর আওতায় বাংলাদেশ পুলিশের সকল সীমান্তবর্তী জেলার সুপারিনটেনডেন্টদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
আইজিপি আলম কী বললেন?
ঢাকার গুলশানে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে অনুষ্ঠিত পুলিশ শুটিং প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আইজিপি আলম এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার উত্তাপ যাতে বাংলাদেশের শান্তির উপর প্রভাব না ফেলে, সেজন্য সকল পুলিশ বিভাগ একসাথে কাজ করবে। আইজিপির এই বক্তব্যকে ইউনূস সরকারের কঠোর নিরাপত্তা নীতি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে আঞ্চলিক উত্তেজনা থেকে দেশকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার উত্তেজনায়
এটা লক্ষণীয় যে ভারতের সিঁদুর হামলা কেবল পাকিস্তানকেই নাড়া দিয়েছে তা নয়, বরং প্রতিবেশী দেশগুলিকে তাদের নিরাপত্তা কাঠামো পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে। বাংলাদেশে আশঙ্কা রয়েছে যে ভারতের আগ্রাসী সামরিক নীতির কারণে সীমান্তে কিছু অপ্রত্যাশিত কার্যকলাপ ঘটতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সেইসব এলাকায় যেখানে ভারত থেকে অনুপ্রবেশ বা অন্যান্য নিরাপত্তা উদ্বেগ আগে থেকেই দেখা দিয়েছে।
এই পুরো ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে ভারতের অস্ত্রোপচার নীতি এখন আর পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এর মানসিক প্রভাব এখন তার প্রতিবেশীদের উপরও দৃশ্যমান। ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা থেকে নিজেকে দূরে রাখা এবং সীমান্ত নিরাপদ রাখা বাংলাদেশের জন্য একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ। ইউনূস সরকারের এই সতর্কতা এই কৌশলগত চিন্তাভাবনারই একটি অংশ, যা আগামী দিনে আরও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।
No comments:
Post a Comment