ভারতকে চীনের হুঁশিয়ারি! ব্রহ্মপুত্র নদের জল বিরোধে ভারত-পাক বিরোধকে নতুন করে উস্কে দিল - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, May 31, 2025

ভারতকে চীনের হুঁশিয়ারি! ব্রহ্মপুত্র নদের জল বিরোধে ভারত-পাক বিরোধকে নতুন করে উস্কে দিল


 কয়েক দশক ধরে চলে আসা জলবণ্টন বিরোধ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যখন উত্তেজনা আবারও বাড়ছে, তখন উত্তর দিক থেকে এখন একটি নতুন এবং উদ্বেগজনক ফ্রন্ট খুলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই অস্থির এই পরিস্থিতিতে চীন দ্রুত হস্তক্ষেপ করেছে এবং ভারতকে একটি গোপন কিন্তু স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছে। প্রভাবশালী বেইজিং-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর চায়না অ্যান্ড গ্লোবালাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ঝিকাই গাও কূটনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেছেন—


"অন্যদের সাথে এমন আচরণ করো না যা তুমি চাও অন্যেরা তোমার সাথে করুক।"

এই বিবৃতিটি, যা প্রথম নজরে দার্শনিক বলে মনে হলেও ভেতর থেকে কৌশলগত হুমকির একটি গুরুতর সতর্কীকরণ বহন করে, ভারতের জন্য সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সতর্কীকরণ এমন এক সময়ে এসেছে যখন আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি ইতিমধ্যেই অত্যন্ত সংবেদনশীল।

ব্রহ্মপুত্রের মাধ্যমে চীনের চাপ কৌশল?

ঝিকাই গাওয়ের বক্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে চীন ভারতে প্রবাহিত নদীগুলির উপর তার উচ্চ-প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করতে চায়, বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র (তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নামে পরিচিত) একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে। চীন ইতিমধ্যেই নদীর উপর বেশ কয়েকটি বিতর্কিত বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যা ভারত এবং বাংলাদেশের মতো ভাটির তীরবর্তী দেশগুলির জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তির অধীনে ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের সাথে জল বিরোধের মুখোমুখি। পাকিস্তান পশ্চিমাঞ্চলীয় নদীগুলিতে অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে ভারত চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে আসছে। এখন যদি চীনও চাপ প্রয়োগ করে, তাহলে ভারত পশ্চিম (পাকিস্তান) এবং উত্তর (চীন) উভয় দিক থেকেই জল সংকটের মুখোমুখি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে "জল-প্রিন্সার" (জল-প্রিন্টার) কৌশল হিসেবে দেখছেন।

আক্রমণাত্মক অবস্থান, কেবল কথার নয়

কৌশলগত বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে চীনের এই অবস্থান কেবল কথার খেলা নয়। এটি একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে চীন "জল-প্রিপ" নিয়ন্ত্রণ করে এবং এটি কূটনৈতিক চাপের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এটি জল-কূটনীতি বা জল-যুদ্ধের একটি পরিশীলিত স্তর।

জল একটি কৌশলগত অস্ত্র তৈরি করেছে

এই সতর্কবার্তাটি এমন একটি প্যাটার্নের অংশ বলে মনে হচ্ছে যেখানে চীন আঞ্চলিক সংঘাতে জল সম্পদের সামরিকীকরণের ক্রমাগত অনুশীলন করে আসছে। চীন পূর্বে জলবিদ্যুৎ সংক্রান্ত তথ্য আটকে রেখে, নদীর প্রবাহকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে এবং আন্তঃসীমান্ত নদীতে দ্রুত বাঁধ নির্মাণ করে নিম্নভূমির দেশগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

চীন-পাকিস্তান জল জোট?

কিছু বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন যে এই বিবৃতি ভারতকে চাপ দেওয়ার জন্য চীন-পাকিস্তান জল জোটের সূচনা হতে পারে। চীন এবং পাকিস্তান ইতিমধ্যেই চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (CPEC) মাধ্যমে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করেছে এবং এখন জল সম্পদ তাদের নতুন কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।

ভারতের প্রতিক্রিয়া?

এখন পর্যন্ত, ভারত সরকার ঝিকাই গাওয়ের মন্তব্যের আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে সূত্র জানিয়েছে যে বিবৃতির বিস্তৃত তাৎপর্য বোঝার জন্য সাউথ ব্লকে একটি উচ্চ-স্তরের পর্যালোচনা চলছে।

যদি পরিস্থিতি এই দিকে চলতে থাকে, তাহলে ভারতকে তার জল কূটনীতির একটি বড় পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে এবং ভবিষ্যতে ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে জল ব্যবহারের সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad