ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৫ মে ২০২৫: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মোহাম্মদ ইউনূসের ওপর তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে ইউনূস আমেরিকার নির্দেশে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং সন্ত্রাসীদের সহায়তায় সরকার পরিচালনা করছেন। এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন প্রতিবেশী দেশটিতে আবারও বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, সেনাবাহিনী ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবী জানানোর পর ইউনূস পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন যে, তাঁর পিতা এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেন্ট মার্টিন দ্বীপ আমেরিকাকে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন এবং এর কারণে তাঁকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল।
তিনি লিখেছেন, “আমেরিকা যখন সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চেয়েছিল, তখন আমার বাবা তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তাঁকে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে হয়েছিল। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশ বিক্রি করার কথা আমি কল্পনাও করতে পারি না। যে দেশের স্বাধীনতার জন্য ৩০ লক্ষ মানুষ তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেই দেশের এক ইঞ্চিও কেউ কীভাবে দিতে পারে?”
শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন যে ইউনূস সন্ত্রাসী এবং নিষিদ্ধ সংগঠনের সহায়তায় ক্ষমতা দখল করেছেন। তিনি বলেন, "সন্ত্রাসীদের সাহায্যে তিনি ক্ষমতা দখল করেছে। যাদের হাত থেকে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে বাঁচিয়েছিলাম, তারা আজ মুক্ত। কারাগার খালি করা হয়েছে এবং সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এখন বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের রাজত্ব।"
শেখ হাসিনা তাঁর দল আওয়ামী লীগের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংবিধানের সাথে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার নেই। হাসিনা বলেন, "আমাদের সংবিধানের ভিত্তি মুক্তির সংগ্রামের ওপর প্রতিষ্ঠিত। সংবিধানের সাথে হস্তক্ষেপ করার জন্য এই অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা কারা? তার কোনও জনমত নেই, না সাংবিধানিক ভিত্তি। তিনি যে পদে অধিষ্ঠিত তার কোনও আইনি অস্তিত্ব নেই। সংসদ ছাড়া আইন পরিবর্তন করা সম্পূর্ণ অবৈধ।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, এই বিবৃতি আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরণের অস্থিরতার ইঙ্গিত দিতে পারে। ইউনূস এবং হাসিনার মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও গভীর হচ্ছে এবং এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করতে পারে।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্ররা বিদ্রোহ করেছিল। এর পর শেখ হাসিনাকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে পালাবদল ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা।
No comments:
Post a Comment