প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১৮ মে ২০২৫, ১৯:০১:০১ : বারাণসী, যা কাশী এবং বানারস নামেও পরিচিত, কেবল তার আধ্যাত্মিকতা এবং গঙ্গার ঘাটের জন্যই নয়, কিছু রহস্যময় গল্পের জন্যও বিখ্যাত। এর মধ্যে একটি হল ক্যান্ট এলাকায় অবস্থিত একটি পুরাতন সেতুর গল্প, যাকে স্থানীয়রা এখন "ভূত সেতু" নামে ডাকতে শুরু করেছে। এই সেতু সম্পর্কে গুজব রয়েছে যে রাতের বেলায় পাশ দিয়ে যাতায়াতকারী লোকেরা অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায় এবং কেউ কেউ ভয়ঙ্কর ছায়া দেখতে পায়। এটি কি কেবল মনের কল্পনা, নাকি সত্যিই এই সেতুর পিছনে কোনও ভৌতিক সত্য লুকিয়ে আছে? আসুন এই রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই সেতু, যাকে আনুষ্ঠানিকভাবে "ক্যান্ট ওভারব্রিজ" বলা হয়, কয়েক দশকের পুরনো। বলা হয় যে ১৯৬০-এর দশকে এই সেতু নির্মাণের সময় অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে সেই শ্রমিকদের আত্মা এখনও এখানে ঘুরে বেড়ায়। সম্প্রতি, এই সেতু সম্পর্কে গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। স্থানীয় এক যুবক দাবী করেছেন যে তিনি রাতে সেতুর উপর সাদা শাড়িতে মোড়ানো একটি ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন যা হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায়। এই গল্পগুলি মানুষের মধ্যে এতটাই ভয়ের সৃষ্টি করেছিল যে অনেকেই রাতে এই সেতুটি এড়াতে দীর্ঘ পথ বেছে নেয়।
পুলিশ এই গুজবগুলিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং সম্প্রতি রাতে সেতুতে টহল বাড়িয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট থানার একজন আধিকারিক বলেছেন, "আমরা অনেক অভিযোগ পেয়েছি যে এখানে মানুষ ভয় পায়। আমরা তদন্ত করেছি কিন্তু এখনও কোনও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাইনি। এগুলি গুজব হতে পারে তবে আমরা এটিকে হালকাভাবে নিচ্ছি না।" পুলিশ আরও বলেছে যে রাতে সেতুতে অসামাজিক উপাদানের উপস্থিতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না, যা ভয়ের কারণ হতে পারে।
বারাণসীর মতো শহরে, যেখানে প্রতিটি রাস্তায় আধ্যাত্মিকতা এবং রহস্য বাস করে, এই ধরনের গল্প নতুন কিছু নয়। স্থানীয় লোককাহিনীতে অনেক জায়গাকে ভূতুড়ে হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যেমন মণিকর্ণিকা ঘাট, যেখানে শেষকৃত্য হয়। কিছু ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন যে সেতুর গল্পটি পুরানো লোককাহিনীর অংশ হতে পারে। স্থানীয় ইতিহাসবিদ ডঃ অনিল মিশ্র ব্যাখ্যা করেন, "এই ধরনের গল্পগুলি প্রায়শই এমন জায়গাগুলির সাথে যুক্ত থাকে যেখানে কোনও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। সেতু নির্মাণের সময় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাগুলি মানুষের মনে গেঁথে থাকতে পারে।"
তবে, কিছু লোক এটিকে কেবল একটি কুসংস্কার বলে মনে করেন। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ সঞ্জয় শর্মা বলেন, "আধুনিক যুগেও মানুষ ভূতের গল্পে বিশ্বাস করে। এটি একটি মানসিক ভয় হতে পারে, যা রাতে অন্ধকার এবং নির্জন স্থানের কারণে বৃদ্ধি পায়।" তবুও, সেতুর গল্পটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, "কেউ কি রাতে এই সেতুতে যাওয়ার সাহস করবে?" অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, "পুলিশের রাতে ক্যামেরা লাগানো উচিত যাতে সত্য প্রকাশ পায়। এই সেতুটি কি সত্যিই ভূত দ্বারা আচ্ছন্ন, নাকি এটি কেবল মানুষের কল্পনার একটি কল্পনা?" তদন্তের ফলাফল না আসা পর্যন্ত রহস্য রয়ে গেছে। তবে এটা নিশ্চিত যে এই গল্পটি বারাণসীর মানুষের মধ্যে কৌতূহল এবং ভয় উভয়ই জাগিয়ে তুলেছে।
No comments:
Post a Comment