লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০৩ মে ২০২৫, ১৭:০০:০০: বাজারে প্রতিদিনই ভেজালের খেলা চলতে থাকে। কোনও কিছুর চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে তাতে ভেজালের সম্ভাবনাও দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি পনিরকে ভারতের সবচেয়ে ভেজালযুক্ত খাদ্যদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এখন পনির, তেল, ঘি, ফল এবং সবজির মতো আইসক্রিমও ভেজালের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে, যখন আইসক্রিমের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়, তখন অনেক দোকানদার এবং এটি তৈরিকারী কোম্পানি এতে ক্ষতিকারক জিনিস যোগ করে মানুষের স্বাস্থ্যের সাথে খেলা শুরু করে।
এখন বাজারে পাওয়া আইসক্রিমে কৃত্রিম দুধ, ডিটারজেন্ট, ইউরিয়া, কৃত্রিম রঙ এবং স্যাকারিনের মতো বিপজ্জনক রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। সস্তা এবং আরও টেকসই আইসক্রিম তৈরিতে এই রাসায়নিকগুলি যোগ করা হয়। কিন্তু এগুলো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। এই ভেজাল আইসক্রিম বিশেষ করে ছোট শিশু এবং বয়স্কদের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হতে পারে। অতএব, আমাদের ভেজাল আইসক্রিম শনাক্ত করতে শেখা এবং সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
ভেজাল আইসক্রিমের ক্ষতিকর প্রভাব-
ভেজাল আইসক্রিম স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতে উপস্থিত ডিটারজেন্ট এবং স্যাকারিনের মতো রাসায়নিক পদার্থ শরীরে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু প্রধান অসুবিধা নিম্নরূপ:-
খাদ্যে বিষক্রিয়া: ভেজাল আইসক্রিম খেলে বমি, ডায়রিয়া এবং পেট ব্যথা হতে পারে।
অ্যালার্জি এবং ত্বকের প্রতিক্রিয়া: কৃত্রিম রঙ বা রাসায়নিক পদার্থ ত্বকে ফুসকুড়ি এবং অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
লিভার এবং কিডনির ক্ষতি: দীর্ঘ সময় ধরে এগুলি গ্রহণ করলে লিভার এবং কিডনি বিকল হতে পারে।
শিশু এবং বয়স্কদের ওপর বেশি প্রভাব: শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তাই ভেজাল পণ্য তাদের দ্রুত প্রভাবিত করতে পারে।
ভেজাল আইসক্রিম কীভাবে শনাক্ত করবেন?
এখন প্রশ্ন জাগে যে বাজারে পাওয়া আইসক্রিম আসল না নকল তা কীভাবে শনাক্ত করবেন? নিচে কিছু সহজ এবং ঘরোয়া প্রতিকার দেওয়া হল যা আপনাকে সাহায্য করতে পারে-
১. গরম জল পরীক্ষা
- গরম জলে এক চামচ আইসক্রিম দিন।
-এতে ২-৩ ফোঁটা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCL) যোগ করুন।
- যদি আইসক্রিমের রঙ বদলে যায় বা গোলাপী-লাল হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে এটি ভেজাল।
২. ঘষে পরীক্ষা
আইসক্রিমটি আঙুলের ফাঁকে ঘষে নিন।
- যদি এতে সাবানের মতো তৈলাক্ত ভাব অনুভূত হয়, তাহলে বুঝতে হবে এতে ডিটারজেন্টের ভেজাল থাকতে পারে।
- আসল আইসক্রিম মসৃণ এবং ক্রিমি রঙের হয়, নকল আইসক্রিমে স্ফটিক বা দানাদার ভাব থাকে।
৩. জল পরীক্ষা
- এক গ্লাস জল নিন এবং তাতে এক চামচ আইসক্রিম দিন।
- আসল আইসক্রিম জলে ধীরে ধীরে দ্রবীভূত হবে।
- নকল আইসক্রিম থেকে বুদবুদ বের হতে শুরু করবে অথবা পানিতে ভেসে উঠবে, যা ভেজালের ইঙ্গিত দেয়।
৪. গন্ধ এবং স্বাদ দিয়ে সনাক্তকরণ
- যদি আইসক্রিমের গন্ধ তীব্র বা রাসায়নিক হয়, অথবা এর স্বাদ খুব মিষ্টি, তেতো বা কৃত্রিম হয়, তাহলে এটি ভেজাল হতে পারে।
- রাসায়নিকযুক্ত আইসক্রিম সাধারণত মুখে একটি অদ্ভুত স্তর রেখে যায়।
ভোক্তাদের জন্য টিপস-
- শুধুমাত্র ব্র্যান্ডেড এবং এফএসএসএআই (ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া) দ্বারা প্রত্যয়িত আইসক্রিম কেনার চেষ্টা করুন।
- রাস্তার ধারের আইসক্রিম বা খুব সস্তা আইসক্রিম খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
- বাচ্চাদের আইসক্রিম দেওয়ার সময়, সর্বদা এর গন্ধ এবং গঠনের দিকে মনোযোগ দিন।
No comments:
Post a Comment