প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৩ মে ২০২৫, ১৫:৫৭:০১ : পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায়, ভারত সরকার আরও একটি কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে এবং পাকিস্তান থেকে সকল ধরণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তথ্য প্রদান করে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিতে একটি নতুন বিধান যুক্ত করা হয়েছে, যার অধীনে "পাকিস্তান থেকে উৎপন্ন বা রপ্তানি করা যেকোনো পণ্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানি বা পরিবহন" নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এর সাথে সাথে, জাহাজ চলাচল অধিদপ্তর একটি নির্দেশও জারি করেছে যে পাকিস্তানি পতাকাযুক্ত কোনও জাহাজকে ভারতীয় বন্দরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। নির্দেশে বলা হয়েছে, "ভারতীয় সম্পদ, পণ্যসম্ভার এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।" একই সাথে, নির্দেশে বলা হয়েছে যে ভারতীয় পতাকাযুক্ত কোনও জাহাজ পাকিস্তানি বন্দরে যাবে না।
এই নির্দেশের অর্থ হল পাকিস্তান থেকে আসা বা রপ্তানি করা যেকোনও পণ্যের আমদানি বা পরিবহন ভারতে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পণ্যগুলি আগে থেকেই আমদানির জন্য বিনামূল্যে ছিল অথবা বিশেষ অনুমতি নিয়ে আসত, এখন তা তাৎক্ষণিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাকিস্তান থেকে সরাসরি বা তৃতীয় কোনও দেশ (পরোক্ষভাবে) দিয়েও কোনও পণ্য ভারতে আসতে পারবে না।
ভারত ইতিমধ্যেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র স্থল বাণিজ্য পথ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত থেকে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায়, পাকিস্তানও ভারতের সাথে সকল ধরণের বাণিজ্য স্থগিত করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে পুলওয়ামা সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত পাকিস্তান থেকে 'মোস্ট ফেভারড নেশন' (এমএফএন) মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেয়, যার পরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দুর্বল হতে থাকে।
২০২৩-২৪ সালে, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে মোট ৩,৮৮৬.৫৩ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছিল। তবে, গত কয়েক বছরে পাকিস্তান থেকে ভারতের সরাসরি আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে ভারত পাকিস্তান থেকে মোট ৩ মিলিয়ন ডলার আমদানি করেছে, যার বেশিরভাগই কৃষি পণ্য।
তবুও, নিষেধাজ্ঞা এড়াতে কিছু পণ্য দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং কলম্বোর মতো তৃতীয় দেশগুলির মাধ্যমে ভারতে পরিবহন করা হচ্ছিল। এখন নতুন নিষেধাজ্ঞার অধীনে, এই পরোক্ষ রুটগুলি দিয়ে পণ্যের আগমনও সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ভারতের সাথে বাণিজ্য বন্ধের সবচেয়ে বড় প্রভাব পাকিস্তানের ওষুধের চাহিদার উপর পড়তে পারে। পাকিস্তান অনেক প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ওষুধের কাঁচামালের জন্য ভারতের উপর নির্ভরশীল। ভারতের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং তারা এখন বিকল্প সরবরাহ উৎস খুঁজছে।
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে ভারতের এই কৌশলগত পদক্ষেপ পাকিস্তানের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং নির্মাণ খাতের উপর গভীর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে। ভারত আবারও স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে জাতীয় নিরাপত্তার সাথে কোনও আপস করা হবে না।
No comments:
Post a Comment