কিডনি ক্যান্সারের এই লক্ষণগুলি একেবারেই উপেক্ষা নয়, সময় থাকতেই সতর্ক হন - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, May 6, 2025

কিডনি ক্যান্সারের এই লক্ষণগুলি একেবারেই উপেক্ষা নয়, সময় থাকতেই সতর্ক হন


লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০৬ মে ২০২৫, ১৬:০০:০০: কিডনি ক্যান্সার এমন একটি রোগ, যা শরীরে ধীরে ধীরে বিকশিত হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এর লক্ষণগুলি খুবই সাধারণ। আর মানুষ প্রায়শই এগুলো ছোটখাটো ভেবে উপেক্ষা করেন। এই কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগটি যখন উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রসর হয় তখন এটি শনাক্ত হয়। তবে, যদি সময়মতো শরীরে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলির দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়, তাহলে প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগটি শনাক্ত করা সম্ভব, যা সফল চিকিৎসার সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়। 


১. প্রস্রাবে রক্ত: কিডনি ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ-

কিডনি ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রাথমিক লক্ষণ হল প্রস্রাবে রক্ত, যাকে হেমাটুরিয়া বলা হয়। এই অবস্থা কখনও কখনও ব্যথাহীন থাকে এবং প্রস্রাবের রঙ হালকা গোলাপী, গাঢ় লাল বা কোলা-জাতীয় হতে পারে। যেহেতু এই লক্ষণটি মাঝেমধ্যে দেখা দেয়, তাই লোকেরা প্রায়শই এটিকে উপেক্ষা করেন, পাথর বা সংক্রমণের জন্য এটিকে দায়ী করে। কিন্তু প্রস্রাবে রক্ত শরীরের কোনও গুরুতর ব্যাধির লক্ষণ হতে পারে এবং এটিকে একেবারেই উপেক্ষা করা উচিৎ নয়।


২. পিঠ এবং কোমরে ব্যথা: প্রদাহ বা টিউমারের লক্ষণ

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হল পিঠ বা কোমরের একপাশে ক্রমাগত ব্যথা, বিশেষ করে যখন কোনও স্পষ্ট কারণ থাকে না। এই ব্যথা কখনও কখনও স্থায়ী হয় এবং সাধারণ ওষুধ দিয়েও উপশম হয় না। এই ধরণের ব্যথা কিডনিতে পিণ্ড বা টিউমারের বিকাশের লক্ষণ হতে পারে। যদি এই ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা এবং প্রয়োজনীয় স্ক্যান করানো গুরুত্বপূর্ণ।


৩. পেটে ফোলাভাব বা পিণ্ডের অনুভূতি: কিডনি ক্যান্সারের সতর্কতা চিহ্ন

অনেক সময় পেট, পিঠ বা কিডনির চারপাশে কোনও ধরণের ফোলাভাব বা শক্ত পিণ্ড অনুভূত হয়, যা প্রায়শই লোকেরা গ্যাস বা পেশী শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই পিণ্ডটি যদি টিকে থাকে বা আকারে বৃদ্ধি পায়, তাহলে তা কিডনি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। এই ধরণের ক্ষেত্রে, দেরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। 


৪. ওজন হ্রাস এবং ক্ষিদের অভাব: গুরুতর অসুস্থতার লক্ষণ

এছাড়াও, যদি কোনও ডায়েটিং বা ব্যায়াম ছাড়াই হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করে এবং ক্ষিদেও কমে যায়, তাহলে এটি শরীরে কোনও গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। কিডনি ক্যান্সার শরীরের বিপাককে প্রভাবিত করে, যার ফলে ক্ষিদে হ্রাস পায় এবং ওজন হ্রাস পায়। এই লক্ষণটি অন্যান্য রোগের পাশাপাশি কিডনি ক্যান্সারের সাথেও যুক্ত হতে পারে, তাই এটিকে হালকাভাবে নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।


৫. ক্লান্তি এবং দুর্বলতা: কিডনির কার্যকারিতায় সমস্যা

কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে শরীরে বিষাক্ত উপাদানের জমা বৃদ্ধি পায়, যার কারণে একজন ব্যক্তি সবসময় ক্লান্ত এবং দুর্বল বোধ করতে পারেন। এই ধরণের মানুষরা প্রায়শই খিটখিটে হয়ে ওঠেন, কাজ করতে ইচ্ছা করে না এবং মানসিকভাবেও ক্লান্ত বোধ করেন। এটির মানে আপনার কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে না এবং আপনার অবিলম্বে চিকিৎসা পরীক্ষা করানো উচিৎ। 


কিডনি ক্যান্সার একটি গুরুতর রোগ, তবে যদি সময়মতো এর লক্ষণগুলি শনাক্ত করা যায় এবং চিকিৎসার দিকে পদক্ষেপ করা হয়, তাহলে এর কার্যকর চিকিৎসা সম্ভব। শরীর থেকে আসা সংকেতগুলিকে উপেক্ষা করবেন না এবং প্রয়োজনে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন, কারণ সময়মত পরীক্ষা কেবল জীবন বাঁচাতে পারে না বরং জীবনের মানও উন্নত করতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad