'অপারেশন সিঁদুর নিয়ে অযথা মন্তব্য এড়িয়ে চলুন--', বিজেপি নেতাদের কড়া বার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, May 25, 2025

'অপারেশন সিঁদুর নিয়ে অযথা মন্তব্য এড়িয়ে চলুন--', বিজেপি নেতাদের কড়া বার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর


ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৫ মে ২০২৫: পহেলগামে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা, এরপর জবাবে সেনার অপারেশন সিঁদুর। পাকিস্তানের ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসী ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া, সেনার অদম্য সাহসে গর্বিত ভারতবাসী। অপারেশন সিঁদুরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী মোদীও। রবিবার মন কি বাত-এ তিনি এই নিয়ে অনেক কথা বলেছেন, সেনার ভূয়োসি প্রশংসা করেছেন। তবে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিবৃতি দিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা বিজেপি নেতাদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। 

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, দলীয় নেতারা তাদের বক্তব্যে সংযম রাখুন এবং অযথা মন্তব্য করা এড়িয়ে চলুন। জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এই কথা বলেন, যেখানে তিনি বিজেপি নেতাদের জনসমক্ষে চিন্তাভাবনা করে কথা বলার পরামর্শ দেন।


'অপারেশন সিঁদুর'-এ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অতুলনীয় সাহস এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে সভায় একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। সূত্রের খবর, প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। প্রস্তাবে বলা হয়, 'অপারেশন সিঁদুর' ভারতীয় নাগরিকদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে এবং সন্ত্রাসবাদী ও তাদের সমর্থকদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। এটি সেনাবাহিনীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদীর অব্যাহত সমর্থন এবং তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসাও করে। এই সভায় ২২শে এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয়।


সম্প্রতি, হরিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশের কিছু বিজেপি নেতা এমন বক্তব্য দিয়েছেন, যার কারণে দলটিকে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়। হরিয়ানার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরা, মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ দেবদার বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস এই বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানিয়েছে এবং অভিযোগ করেছে যে, বিজেপি নেতৃত্বের নীরবতা এই মন্তব্যগুলির প্রতি নীরব গ্রহণযোগ্যতা।


কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বিজেপির ওপর তীব্র আক্রমণ করে বলেন, "পহেলগামের শিকার এবং আমাদের সাহসী সেনাবাহিনীকে অপমান করার জন্য বিজেপি নেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরার লজ্জাজনক বক্তব্য আবারও আরএসএস-বিজেপির সংকীর্ণ মানসিকতা প্রকাশ করে। মধ্যপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ দেবদাও সেনাবাহিনীকে অপমান করেছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করেননি।"


খাড়গে আরও বলেন, "মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ একজন সাহসী কর্নেল সম্পর্কে অত্যন্ত অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন, তবুও তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়নি। এমনকি যখন শহীদ নৌ অফিসারের স্ত্রীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল করা হয়েছিল, তখনও প্রধানমন্ত্রী মোদী নীরব ছিলেন।"


কংগ্রেস সভাপতি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করে বলেন, "নরেন্দ্র মোদীজি, আপনি বলেন যে আপনার শিরায় সিঁদুর রয়েছে... তাহলে নারীদের সম্মান রক্ষার জন্য কেন এই ধরণের নেতাদের বরখাস্ত করা হয় না?"


এছাড়াও কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা জয়রাম রমেশ বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, "জাংরার এই লজ্জাজনক বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, ক্ষমতার নেশায় মত্ত বিজেপি এখন এতটাই অসংবেদনশীল হয়ে উঠেছে যে নিরাপত্তার গাফিলতির দায়িত্ব নেওয়ার পরিবর্তে তারা শহীদ এবং তাঁদের পরিবারকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে।"


তিনি প্রশ্ন তোলেন, "প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিজেপি নেতৃত্বের নীরবতাকে কেন এই বিবৃতিগুলির প্রতি নীরব সম্মতি হিসাবে বিবেচনা করা হবে না?" তিনি আরও দাবী করেন, "এই লজ্জাজনক বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ এবং সাংসদ রামচন্দ্র জাংরাকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিৎ।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad