প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৫ মে ২০২৫, ১৫:০৫:০১ : কবিতা, গান এবং শায়রিতে লাল গোলাপকে ভালোবাসার সবচেয়ে বড় প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু এখন বিজ্ঞানীরা 'লাল গোলাপ'-এর এই গল্প নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। চীন এবং নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণা বলছে যে গোলাপের আদি বা প্রাথমিক জাতটি লাল ছিল না, বরং হলুদ ছিল। অর্থাৎ, আমরা শতাব্দী ধরে লালকে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে যা বিবেচনা করে আসছি তা আসলে প্রকৃতির পরিবর্তিত চিত্র।
নেচার প্ল্যান্টস জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুসারে, গোলাপের প্রাথমিক প্রজাতিটি কেবল হলুদ ছিল না, এর পাপড়িগুলিও একটি স্তরে ছিল। খুবই সহজ, কিন্তু নিজস্বভাবে বিশেষ। এখন বিজ্ঞানও বলছে গোলাপের এই রঙ পরিবর্তনের গল্পটি কীভাবে শুরু হয়েছিল এবং কেন আজ আমরা এই ফুলটিকে এত বিভিন্ন আকার এবং রঙে দেখতে পাই।
এই গবেষণায়, ২০০ টিরও বেশি প্রজাতির গোলাপের জেনেটিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গোলাপের উৎপত্তি মধ্য এশিয়ায় এবং এর চাষ শুরু হয়েছিল প্রায় ৫,০০০ বছর আগে চীনে। বর্তমানে আমরা যে গোলাপগুলি দেখতে পাই, তাদের রঙিন পাপড়ি, সুগন্ধ এবং বারবার ফুল ফোটার ক্ষমতা, তা আসলে চীনা এবং ইউরোপীয় গোলাপের ক্রস-ব্রিডিংয়ের ফলাফল।
গবেষকরা চীনের দুটি স্থানকে গোলাপ বৈচিত্র্যের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। প্রথমটি হল উত্তর-পশ্চিম চীন যেখানে হলুদ ফুল এবং ছোট পাতা সহ গোলাপ পাওয়া যায়। দ্বিতীয়টি হল দক্ষিণ-পশ্চিম চীন যেখানে সাদা এবং সুগন্ধযুক্ত গোলাপের প্রজাতি পাওয়া যায়।
বাজারে পাওয়া বেশিরভাগ গোলাপের জিনগত শিকড় মাত্র ৮ থেকে ১০টি বন্য প্রজাতির সাথে যুক্ত। এর ফলে এই ফুলের জিনগত বৈচিত্র্য সীমিত হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, "আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম গোলাপ তৈরি করতে চাই, তাহলে আমাদের আবার বন্য গোলাপের জাতগুলি ব্যবহার করতে হবে। গবেষণায় জড়িত বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে এই গবেষণা ভবিষ্যতে গোলাপের নতুন জাতের বিকাশের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে। এর মাধ্যমে, আমরা কেবল সুন্দর গোলাপই জন্মাতে সক্ষম হব না, বরং কম যত্নের সাথেও টিকে থাকতে পারে এমন ফুলও জন্মাতে পারব।"
No comments:
Post a Comment