Saturday, May 24, 2025

প্রাতঃরাশের আগে না পরে ব্রাশ করা উচিৎ? এই ভুলেই দ্রুত পড়ে যায় দাঁত, জেনে নিন কী বলছেন চিকিৎসক


লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৪ মে ২০২৫: সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত ব্রাশ করা আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের অংশ। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন ব্রাশ করার সঠিক সময় কোনটি হওয়া উচিৎ? বেশিরভাগ মানুষই দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন যে, তাঁদের সকালের জলখাবার খাওয়ার আগে না পরে ব্রাশ করা উচিৎ। আসলে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ মৌখিক স্বাস্থ্যবিধি কেবল দাঁতের জন্যই নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। দাঁতে জমে থাকা ময়লা, ব্যাকটেরিয়া এবং প্লাক কেবল মুখের সমস্যাই সৃষ্টি করে না বরং শরীরের অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই সঠিক সময়ে ব্রাশ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।


টেলিগ্রাফ.কো.ইউকে-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দন্ত চিকিৎসক ডাঃ শাদি মানুচেরি বলেন, সবচেয়ে ভালো উপায় হল সকালে প্রথমেই দাঁত ব্রাশ করা। আমরা যখন রাতে ঘুমাই, তখন আমাদের মুখে লালার প্রবাহ কমে যায়, যার ফলে ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি সকালে মুখে দুর্গন্ধ এবং প্লাক সৃষ্টি করে। আপনি যদি দাঁত ব্রাশ না করে সরাসরি প্রাতঃরাশ করেন, তাহলে এই ব্যাকটেরিয়াগুলি সরাসরি পেটে চলে যায়। আর এটা দীর্ঘমেয়াদে হজম এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। এছাড়াও, সকালে দাঁত ব্রাশ করলে, টুথপেস্টে উপস্থিত ফ্লোরাইড দাঁতের ওপর একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে, যা খাবারে উপস্থিত অ্যাসিড থেকে দাঁতকে রক্ষা করে।


অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, খাবারের পর দাঁতে জমে থাকা ময়লা দূর করার জন্য প্রাতঃরাশের পর ব্রাশ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, প্রাতঃরাশের পরপরই ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনি সকালের জলখাবারে কমলার রস, লেবুর শরবত, টমেটো ইত্যাদির মতো অ্যাসিডিক পদার্থ খান বা পান করেন, তাহলে তা দাঁতের বাইরের স্তরকে সাময়িকভাবে দুর্বল করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে, আপনি যদি তাৎক্ষণিকভাবে ব্রাশ করেন, তাহলে ব্রাশ করার ঘর্ষণ শক্তি ধীরে ধীরে এনামেল ক্ষয় করে দিতে পারে। অতএব, আপনি যদি প্রাতঃরাশের পরে ব্রাশ করতে চান, তাহলে কমপক্ষে ৩০ মিনিটের ব্যবধান রাখুন।


আমরা যদি ব্রাশ করার কৌশল সম্পর্কে কথা বলি, তাহলে আপনার দিনে দু'বার ব্রাশ করা উচিৎ - সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। ব্রাশের ব্রিসল সবসময় নরম থাকা উচিৎ এবং কমপক্ষে দুই মিনিট ধরে ব্রাশ করা উচিৎ। বৃত্তাকার গতিতে ব্রাশ করা সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে করা হয় কারণ এটি মাড়ির ক্ষতি করে না এবং প্লাকও পরিষ্কার করে। এছাড়াও, জিহ্বা পরিষ্কার করা উপেক্ষা করবেন না কারণ সেখানেও ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়।


পরিশেষে এটা বলা ভুল হবে না যে, দাঁত পরিষ্কার করা কেবল একটি সৌন্দর্যের বিষয় নয় বরং স্বাস্থ্যের ভিত্তি। সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করা কেবল দাঁতের রোগ থেকে রক্ষা করবে না বরং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি করবে। তাই পরের বার যখনই ব্রাশ করতে যাবেন, মনে রাখবেন- সময় এবং পদ্ধতি দুটোই গুরুত্বপূর্ণ।

No comments:

Post a Comment