লাইফস্টাইল ডেস্ক, ৩১ মে ২০২৫: আজকাল, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং যে জিনিসটিকে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ও ওজন কমানোর জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে তা হল জলপাই তেল। সালাদ, পাস্তা বা বাড়িতে স্বাস্থ্যকর যা কিছু তৈরি করা হোক না কেন, লোকেরা জলপাই তেল চিন্তা না করেই ব্যবহার করেন, এই ভেবে যে এটি কোনও ক্ষতি করবে না। কিন্তু আপনি কি কখনও এর পুষ্টি এবং ক্যালোরির মূল্যের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন? যদি না করেন, তাহলে আপনি জেনে অবাক হবেন যে মাত্র দুই চামচ জলপাই তেলে একটি বার্গারের সমান সংখ্যক ক্যালোরি থাকে।
আসুন টেকনিক্যালি রূপে বোঝা যাক। ডঃ অগ্নি কুমার বোসের মতে, একটি সাধারণ বার্গারে (যাতে আলুর টিক্কি, মেয়োনিজ, পনির ইত্যাদি থাকে) গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ ক্যালোরি থাকে। অন্যদিকে, এক চা চামচ জলপাই তেলে প্রায় ২৪০ ক্যালোরি থাকে। অর্থাৎ, আপনি যদি দুই চা চামচ জলপাই তেল যোগ করেন, তাহলে আপনি ইতিমধ্যেই প্রায় ২৪০ ক্যালোরি গ্রহণ করেছেন, যা প্রায় একটি বার্গারের সমান। এখন প্রশ্ন হল যখন জলপাই তেল এত ক্যালোরি সমৃদ্ধ, তখন লোকেরা কেন এটিকে স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন? উত্তর হল, জলপাই তেলে উপস্থিত চর্বিগুলি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, এটি সীমাহীন পরিমাণে খাওয়া উচিৎ। ক্যালোরি হল ক্যালোরি, তা ঘি থেকে আসুক বা জলপাই তেল থেকে।
দ্বিতীয় বড় বিষয় হল অতিরিক্ত জলপাই তেল খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রায়শই মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার অতিরিক্ত খায় এই ভেবে যে, এটি ক্ষতি করবে না। এই বিভ্রান্তির কারণে, অনেকের ওজন কমানোর পরিবর্তে বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি একটি সালাদে ২-৩ চামচ জলপাই তেল স্বাস্থ্যকর মনে করে যোগ করেন, তাহলে এর সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যগত মূল্য বদলে যায়। যদি আপনি ওজন কমাতে চান বা ফিট থাকতে চান, তাহলে সবকিছুই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তা জলপাই তেল হোক বা মাখন। এমনকি স্বাস্থ্যকর জিনিসগুলিও ততক্ষণ পর্যন্ত উপকারী যতক্ষণ না সেগুলোর পরিমাণ ভারসাম্যপূর্ণ। যেকোনও তেলকে "যাদুকরী ঔষধ" হিসাবে বিবেচনা করা সবচেয়ে বড় ভুল হতে পারে। তাই পরের বার যখন আপনি সালাদে জলপাই তেল ঢেলে দেবেন বা পাস্তায় মিশিয়ে দেবেন, মনে রাখবেন যে প্রতি চামচ জলপাই তেলের মধ্যে একটি বার্গারের একটি অংশ লুকিয়ে থাকতে পারে। আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে বুদ্ধিমত্তার সাথে খান। বেশিও না কমও না, শুধু সঠিক পরিমাণে। আর প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।
No comments:
Post a Comment