আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা : ৩১টি মৃতদেহের ডিএনএ নমুনা মিলেছে, স্বজনদের কাছে হস্তান্তর মৃতদেহ

প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৫ জুন ২০২৫, ১২:৪৭:০১ : তিন দিন আগে বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে যুক্ত একজন আধিকারিক রবিবার জানিয়েছেন যে, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং এখনও পর্যন্ত ১২টি পরিবার মৃতদেহ দাবী করেছে। এদিকে, গুজরাট সরকার মৃতদেহগুলি স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

সরকারি বিজে মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ রজনীশ প্যাটেল বলেছেন যে, গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানীর ডিএনএ ম্যাচিংয়ের প্রক্রিয়াও চলছে। এর আগে আধিকারিকরা বলেছিলেন যে, নিহতদের পরিবারের সাথে সমন্বয় বজায় রাখার জন্য ২৩০টি দল গঠন করা হয়েছে।

আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী বিমানে ২৪২ জন যাত্রী এবং ক্রু সদস্যের মধ্যে ২৪১ জন নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের মধ্যে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও ছিলেন। তবে, একজন যাত্রী অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন।

বিমান দুর্ঘটনার তৃতীয় দিনে, গুজরাট সরকার মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের কাজ শুরু করেছে। TV9-এর প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, প্রায় এক হাজার লোকের একটি দল এর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সরকার গুজরাটের বিভিন্ন জেলা থেকে অ্যাম্বুলেন্স ডেকেছে। এই কাজের জন্য মোট ১৯২টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছে।

একটি অ্যাম্বুলেন্সে একজন ড্রাইভার এবং সহায়তাকারী রয়েছে কর্মী। সরকার ঘোষণা করেছে যে সমস্ত মৃতদেহ আত্মীয়দের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও চার্জ নেওয়া হবে না। এখনও পর্যন্ত ৩১টি মৃতদেহের ডিএনএ ম্যাচ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি মৃতদেহ তাদের আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

দ্রুত তথ্যের জন্য, আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতাল প্রতি ২ ঘন্টা অন্তর মেডিক্যাল বুলেটিন জারি করার ঘোষণা দিয়েছে। এর জন্য, আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে ৫৯০ জন ডাক্তার এবং প্যারামেডিক্যাল কর্মীদের একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। দলটি ২৪x৭ মোডে কাজ করছে। দাবী করা হচ্ছে যে ডিএনএ ম্যাচ হওয়ার সাথে সাথে কাগজপত্র সম্পন্ন করার পরে মৃতদেহ আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

এই পুরো প্রক্রিয়ার জন্য, সরকার ২৩০ জনকে পরিবহনের জন্য একটি পৃথক দল গঠন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনও আত্মীয় ১০ জনকে নিয়ে মৃতদেহ নিতে আসেন, তাহলে পরিবহন দল ১০ জনকে হাসপাতাল থেকে কীভাবে নিয়ে যাবে তার ব্যবস্থা করছে।

গত সপ্তাহে ১২ জুন (বৃহস্পতিবার), বোয়িং ৭৮৭-৮ (AI171) বিমান দুর্ঘটনায় ২৪২ জন যাত্রী এবং ক্রু সদস্য ছাড়া বাকি সবাই এবং ৫ জন এমবিবিএস ছাত্র সহ মাটিতে থাকা ২৯ জন নিহত হন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরেই বিমানটি মেঘনানীগড় এলাকার মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয় এবং প্রচণ্ড বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়।

বিমান দুর্ঘটনায় অনেক মৃতদেহ এতটাই খারাপভাবে পুড়ে গেছে বা বিকৃত হয়ে গেছে যে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব নয়, তাই দুর্ঘটনায় নিহতদের মৃতদেহ শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করা হচ্ছে। শনিবার গুজরাটের মন্ত্রী হর্ষ সাংভি বলেছেন যে আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালের কর্মকর্তারা ১২ জুন সংঘটিত এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনার ১৯ জনের মৃতদেহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করেছেন।