Friday, July 4, 2025

অমরনাথ গুহার অলৌকিক পাখি! আজও দেখা যায় সেই ‘অমর পায়রা’



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:০০:০১ : অমরনাথ গুহা ঘিরে বহু পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হল সেই কাহিনী, যেখানে বলা হয়েছে—ভগবান শিব দেবী পার্বতীকে অমরত্বের রহস্য এই গুহাতেই বলেছিলেন। পুরাণ অনুযায়ী, পার্বতী যখন অমর হওয়ার গোপন সূত্র জানতে চান, তখন শিব একটি নিভৃতে স্থানের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। হিমালয়ের দুর্গম পথে অবস্থিত এই গুহাটি তাঁর উপযুক্ত মনে হয়। গুহায় প্রবেশের আগে তিনি নন্দী, গঙ্গা, চন্দ্রমা, নাগ এবং গনেশ-সহ নিজের সমস্ত সঙ্গীকে ছেড়ে দেন, যাতে কেউ তাঁকে এবং পার্বতীকে বিরক্ত না করে।

গুহার মধ্যে, যখন শিব পার্বতীকে অমরত্বের গূঢ় রহস্য বলছিলেন, তখন দুটি পায়রা লুকিয়ে সেই কথা শুনে ফেলে। কাহিনী অনুযায়ী, শিব যখন তা জানতে পারেন, তখন ক্রুদ্ধ হন, কিন্তু তাদের শাস্তি না দিয়ে বরং অমরত্বের আশীর্বাদ দেন। সেই থেকে বিশ্বাস করা হয়, এই দুটি পায়রা অমর হয়ে যায় এবং প্রতি বছর অমরনাথ যাত্রার সময় গুহার ভিতরে দেখা যায়।

অমরনাথ তীর্থযাত্রীরা দাবী করেন যে তাঁরা এখনও গুহার ভিতরে দুটি সাদা পায়রা দেখতে পান। এত উচ্চতায়, তীব্র ঠান্ডা ও অক্সিজেনের ঘাটতির মধ্যে পাখির বেঁচে থাকা কার্যত অসম্ভব হলেও, এই দুটি পায়রার উপস্থিতি এক অলৌকিক আশ্চর্যের জন্ম দেয়। প্রায় প্রতি বছর, কিছু নিরাপত্তারক্ষী ও তীর্থযাত্রী এই পাখিদের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন, যা রহস্যকে আরও গভীর করে তোলে।

বিশ্বাস করা হয়, সবাই এই অমর পায়রাগুলিকে দেখতে পান না। যাঁরা বাবা বরফানির আশীর্বাদপ্রাপ্ত, তাঁরাই শুধুমাত্র এই অলৌকিক দৃশ্যের সাক্ষী হন। অনেক ভক্ত বলেন, তাঁরা যখন পরম ভক্তি ও আন্তরিকতার সঙ্গে গুহায় পৌঁছান, তখন বরফ-শিবলিঙ্গের কাছে দুটি সাদা পায়রাকে বসে থাকতে দেখেন। অনেকে আরও জানান, এই পাখিরা হঠাৎই চোখের সামনে থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়। যাঁরা একবার এই দৃশ্য দেখতে পান, তাঁরা নিজেদের ভাগ্যবান বলে মনে করেন।

বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, কেউ কেউ মনে করেন পাখিগুলি কাছাকাছি এলাকা থেকে উড়ে এসে গুহায় আশ্রয় নেয়। কিন্তু বহু ভক্তদের কাছে এটি নিছক কোনও প্রাকৃতিক ঘটনা নয়—এটি বাবা বরফানির লীলা, যা তিনি শুধুমাত্র তাঁর ভক্তদের জন্য প্রকাশ করেন।

অমরনাথ যাত্রা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি ভক্তির, বিশ্বাসের এবং আত্মিক পরীক্ষার এক অনন্য পথ। প্রতিকূল আবহাওয়া, ঠান্ডা, কঠিন পথ, অক্সিজেনের অভাব সত্ত্বেও ভক্তরা ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনি তুলে এগিয়ে যান। কেউ কেউ এই যাত্রার সময় অমর পায়রার দর্শন লাভ করেন—যা তাঁদের কাছে এক ঐশ্বরিক আশীর্বাদের সমান।

No comments:

Post a Comment