প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১৭ জুলাই ২০২৫, ১১:০০:০১ : বর্তমান জীবনযাত্রা, স্ট্রেস, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও অনিদ্রা, সব মিলিয়ে হরমোনের ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে বহু মানুষের শরীরে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি আরও প্রকট হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে দেখা দেয় অনিয়মিত ঋতুচক্র, ব্রণ, চুল পড়া, হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, মানসিক অস্থিরতা ও আরও নানা সমস্যা।
তবে শরীরের হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যালান্সে রাখতে কিছু বিশেষ খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে সেইসব খাবারের বিস্তারিত তালিকা দেওয়া হল:
১. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (monounsaturated fats), যা কোলেস্টেরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি কোর্টিসল ও প্রোজেস্টেরনের মত হরমোনের উৎপাদনে সহায়তা করে।
২. নারকেল ও নারকেল তেল
নারকেল ও এর তেলে থাকা মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরের মেটাবলিজমকে উন্নত করে এবং থাইরয়েড হরমোনকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
৩. ডিম
ডিম প্রোটিন এবং কোলিনের চমৎকার উৎস, যা হরমোন প্রোডাকশনের জন্য অপরিহার্য। এটি ইনসুলিন ও প্রোজেস্টেরনের ব্যালান্সে সাহায্য করে।
৪. ব্রকোলি, পালং শাক ও অন্যান্য শাকসবজি
এই ধরনের সবজিতে ফাইবার ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট থাকে, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন বের করে দিয়ে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। এগুলি লিভারকেও ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।
৫. বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার
বিশেষ করে আখরোট, আমন্ড, ফ্ল্যাক্স সিড এবং চিয়া সিডে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক ও ফাইবার। এগুলি ইনসুলিন সেন্সিটিভিটি বাড়াতে সাহায্য করে এবং হরমোনাল ভারসাম্য রক্ষা করে।
৬. বীজজাত দানা
ওটস, ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া ইত্যাদিতে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন বি থাকে, যা অ্যাড্রিনাল হরমোন ও স্ট্রেস হরমোন (কোর্টিসল) নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৭. বেরি জাতীয় ফল (যেমন ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি)
বেরিতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও পলিফেনল, যা দেহের কোষগুলিকে রক্ষা করে এবং ইনফ্ল্যামেশন কমিয়ে হরমোন ব্যালান্স বজায় রাখে।
কী খাবেন না বা কম খাবেন:
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার (প্যাকেটজাত খাবার, ফাস্টফুড)
অতিরিক্ত চিনি ও কৃত্রিম মিষ্টি
অতিরিক্ত ক্যাফেইন
সোডা বা কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস
রিফাইন্ড তেল ও ট্রান্স ফ্যাট
পরামর্শ:
দৈনন্দিন ডায়েটে পর্যাপ্ত জল পান করুন
৭–৮ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম ও ধ্যান অভ্যাসে রাখুন
অতিরিক্ত মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন পরীক্ষাও করিয়ে নিন।
হরমোনের ভারসাম্য হারানো মানেই একাধিক শারীরিক ও মানসিক সমস্যা। কিন্তু সমাধান অনেকাংশেই লুকিয়ে রয়েছে আমাদের প্লেটেই। সঠিক খাবার নির্বাচনই হতে পারে সবচেয়ে প্রাকৃতিক ও টেকসই উপায়।
No comments:
Post a Comment