Wednesday, July 30, 2025

মন্দির, যেখানে জীবন দর্শন দেন ভগবান নৃসিংহ! শিহরণ জাগানো এখানকার সত্য


বিনোদন ডেস্ক, ৩০ জুলাই ২০২৫: আমাদের দেশে অসংখ্য মন্দির রয়েছে। এগুলোর প্রতিটির নিজস্ব পরিচয় এবং গুরুত্ব রয়েছে। এই মন্দিরগুলির মধ্যে অনেকগুলি এসবের বৈশিষ্ট্য এবং রহস্যের কারণে মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গল জেলার মাল্লুর গ্রামেও এমন একটি মন্দির অবস্থিত। এটি হেমাচল লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী মন্দির। এই অনন্য মন্দিরের সাথে সম্পর্কিত বিশ্বাস হল যে, ভগবান নরসিংহ এখনও জীবন্ত আকারে এখানে উপস্থিত। এই বিশেষ মন্দিরটি কেবল উপাসনার স্থান নয় বরং বিশ্বাস ও অলৌকিকতার সঙ্গমস্থল, যেখানে আগত প্রতিটি ভক্ত ঐশ্বরিক শক্তি অনুভব করেন। এই মন্দিরের আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্যগুলি বিজ্ঞানকেও অবাক করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই মন্দিরের সাথে সম্পর্কিত কিছু বিশেষ বিষয়।


ভগবান নরসিংহের 'জীবন্ত' মূর্তি

লক্ষ্মী নরসিংহ স্বামী মন্দিরের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল এখানে উপবিষ্ট ভগবান নরসিংহের মূর্তি পাথর বা কোনও ধাতু দিয়ে তৈরি নয় বরং মানুষের ত্বকের মতো নরম অনুভব হয়। লোকেরা বিশ্বাস করেন যে, প্রতিমার ওপর একটি ফুল রাখলে তা চাপা পড়ে ভিতরে চলে যায়। কথিত আছে যে, বেশি চাপ দিলে, প্রতিমা থেকে রক্তের মতো লাল রঙের তরল বের হয়। এই তরল প্রতিমার নাভি থেকে অবিরাম প্রবাহিত হতে থাকে, যা পুরোহিতরা চন্দনের পেস্ট লাগিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করেন। এই কারণেই ভক্তরা এই প্রতিমাকে 'জীবিত' বলে মনে করেন।


মূর্তি শ্বাস নেয়?

লক্ষ্মী নৃসিংহ স্বামী মন্দিরের পুরোহিত এবং এখানে আসা ভক্তরা দাবী করেন যে, যখন কেউ মূর্তির কাছে যায়, তখন তাঁর মনে হয় যেন মূর্তিটি শ্বাস নিচ্ছে। স্থানীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই মূর্তিটি পাহাড় থেকেই আবির্ভূত হয়েছিল, তাই এটিকে স্বয়ম্ভু বলা হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, ভগবান নৃসিংহের ঐশ্বরিক শক্তি এই স্থানে সর্বদা সক্রিয় থাকে, যা দর্শনার্থীদের তাঁর উপস্থিতি অনুভব করায়।


মন্দিরের কাছে প্রবাহিত পবিত্র স্রোত

মন্দিরের কাছে একটি পবিত্র স্রোত প্রবাহিত হয়, যাকে চিন্তামণি জলপথম বলা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এই জল ভগবান নৃসিংহের পা থেকে বেরিয়ে এসেছে। কথিত আছে যে, রানী রুদ্রম্মা দেবী এই স্রোতের নামকরণ করেছেন চিন্তামণি। ভক্তরা এই জলে স্নান করেন এবং এর জল বাড়িতে নিয়ে যান। কথিত আছে যে, এই জল ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ এবং শরীর ও মনকে পবিত্র করে।


মন্দিরের সময় এবং বিশেষ বিশ্বাস

হেমাচল লক্ষ্মী নৃসিংহ স্বামী মন্দির সকাল ৮:৩০ থেকে দুপুর ১:০০ টা এবং তারপর দুপুর ২:৩০ থেকে ৫:৩০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বিশেষ বিষয় হল বিকেল ৫:৩০ এর পরে মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকে। বিশ্বাস করা হয় যে, এই সময়ের পরে ভগবান নৃসিংহ আশেপাশের বনে ঘুরে বেড়াতে বেরিয়ে আসেন, তাই মন্দির পরিদর্শনের সময় সীমিত রাখা হয়েছে।


মাল্লুরে কীভাবে যাবেন?

মাল্লুরে পৌঁছানোর জন্য সড়ক, রেল এবং বিমান সুবিধা রয়েছে। ওয়ারাঙ্গল, মনুগুরু এবং ভদ্রাচলম-এদুলাপুরম রোড থেকে সহজেই বাস পাওয়া যায়। এখানকার নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল মনুগুরু, যেখান থেকে মন্দিরটি মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। বিমানে আসা যাত্রীরা হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সড়ক বা রেলপথে এখানে পৌঁছাতে পারেন।

No comments:

Post a Comment