প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:০০:০১ : ভারতের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছে রহস্যে ঘেরা বহু মন্দির ও ধর্মস্থল। তার মধ্যেই অন্যতম গুজরাটের স্তম্ভেশ্বর মহাদেব মন্দির। এক অদ্ভুত প্রাকৃতিক ঘটনার সাক্ষী এই মন্দির—প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে এটি আরব সাগরের জলে সম্পূর্ণরূপে ডুবে যায় এবং কিছু সময় পর আবার দৃশ্যমান হয়। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, ঘটনাটি একেবারেই বাস্তব।
গুজরাটের কাভি কামবোই শহরে অবস্থিত স্তম্ভেশ্বর মহাদেব মন্দির, যা প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো। মন্দিরটি আরব সাগর ও ক্যাম্বে উপসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত। কাছাকাছি শহর ভদোদরা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। দিনের মধ্যে দুইবার, ভরা জোয়ারের সময় মন্দিরটি সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়ে যায়। আবার জোয়ার কমার সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের উপরের অংশ ও ভিতরের প্রায় ৪ ফুট উঁচু শিবলিঙ্গ ধীরে ধীরে জলের উপরে ভেসে ওঠে।
মন্দিরটি সমুদ্রের কোলঘেঁষা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থিত। তাই জোয়ার-ভাটার স্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলেই দিনে দুইবার এই মন্দির জলের নিচে চলে যায়। এমন বিরল প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমান স্তম্ভেশ্বর মন্দির চত্বরে।
এই মন্দির ঘিরে একটি কিংবদন্তিও প্রচলিত আছে। শোনা যায়, রাক্ষস তারকাসুর ভগবান শিবের ভক্ত ছিলেন এবং কঠোর তপস্যার মাধ্যমে অমরত্বের বর লাভ করেন। পরবর্তীতে সে স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালে ত্রাস সৃষ্টি করতে শুরু করে। সেই সময় দেবতাদের অনুরোধে ভগবান শিব কার্তিকেয়কে সৃষ্টি করেন তারকাসুর বধের জন্য। কার্তিকেয় তারকাসুরকে বধ করলেও, একজন শিবভক্তকে হত্যা করার জন্য তিনি অপরাধবোধে ভোগেন। তখন ভগবান বিষ্ণু তাঁকে বলেন, তারকাসুরের হত্যার পাপমোচনের জন্য সেখানে একটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করতে হবে। সেই স্থানেই প্রতিষ্ঠিত হয় স্তম্ভেশ্বর মন্দির।
স্তম্ভেশ্বর মন্দিরে ভ্রমণের সেরা সময় হল জোয়ার-ভাটার সময় জানিয়ে যাওয়া। কারণ প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে মন্দির জলে নিমজ্জিত হয় এবং পুনরায় দৃশ্যমান হয়। তাই সময় মিলিয়ে গেলে এই বিরল ও অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ মেলে। মন্দির চত্বরে আশ্রম, হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে, ফলে একদিনের ভ্রমণের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
ভদোদরা, ভাবনগর কিংবা ভরুচ থেকে রেল অথবা সড়কপথে সহজেই পৌঁছনো যায় কাভি কামবোই-এ। মন্দির দর্শনের পরিকল্পনা করলে গোটা একটি দিন এই এলাকায় কাটানোর জন্য প্রস্তুত থাকাই ভালো।
No comments:
Post a Comment